প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
করোনায় আতঙ্কজনক পরিস্থিতি, সাধারণ্যে নেই প্রতিফলন

চাঁদপুরে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে শনাক্তের হারও বাড়ছে। বৃহস্পতিবার এ জেলায় করোনা শনাক্ত হয় ৯৮ জনের, যেখানে শনাক্তের হার ছিলো ৩৩.৩৩ শতাংশ। ওইদিন চাঁদপুরস্থ ভাষাবীর এম.এ.ওয়াদুদ আরটি পিসিআর ল্যাবে ২৯৪ জনের করোনা স্যাম্পল পরীক্ষা করা হয়। তন্মধ্যে ৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের ৬০ জনই চাঁদপুর সদর উপজেলার। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশে ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন প্রায় ১১ হাজার (১০ হাজার ৮৮৮জন)। শনাক্তের হার ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার করোনায় সারাদেশের শনাক্তের হারের চেয়ে চাঁদপুরে শনাক্তের হার ৭ শতাংশ বেশি ছিলো। এটা নিঃসন্দেহে আতঙ্কজনক পরিস্থিতি। কিন্তু সাধারণ্যে এই আতঙ্কের উল্লেখযোগ্য প্রতিফলন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সামাজিক দূরত্ব তথা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার অনিবার্য প্রয়োজনীয়তা থাকলেও কোথাও সেটি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। মেঘনা আন্তঃনগর ট্রেনে সরকারের নির্দেশনা মেনে যাত্রী পরিবহন করা হলেও অটোবাইক, সিএনজি অটোরিকশা, বাস, লঞ্চসহ অন্যান্য যানবাহনে সরকারের নির্দেশনা মানা এবং সেটি তদারকি করার আলামত মোটেও টের পাওয়া যাচ্ছে না। নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি ছাড়াই এসব যানবাহনে পূর্বের ন্যায় ফ্রি স্টাইলে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। চালকদের নব্বই শতাংশই মাস্ক পরে না, আর যাত্রীরাতো নয়ই। বেপরোয়া মানসিকতাতেই চালক-যাত্রীসহ চলছে যানবাহন।
জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে বৃহস্পতিবার চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঠে নেমেছে মোবাইল কোর্ট। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ জনসাধারণকে মাস্ক পরার জন্যে সতর্ক করেন এবং স্বাস্থ্য বিধি না মানায় ৩৮ জনকে ৪হাজার ৭৬০টাকা অর্থদ- প্রদান করেন। এনডিসি জানান, বৃহস্পতিবার সারাদিন সদর এসিল্যান্ডসহ চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চাঁদপুর শহরের নতুনবাজার ও পুরাণবাজার এলাকায় একাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে।
যানবাহনের পাশাপাশি মসজিদ, মন্দির, পর্যটন কেন্দ্র, হাট-বাজারে, শপিং মলে, সাধারণ দোকানপাটে ক্রেতা-বিক্রেতার অধিকাংশের মুখেও দেখা যাচ্ছে না মাস্ক। করোনাকে পাত্তা দেয়ার কোনো মানসিকতাই যেনো ধারণ করছে না অধিকাংশ জন। এমতাবস্থায় ২-৪টি মোবাইল কোর্ট নয়, ২০-৪০টি মোবাইল কোর্ট চালানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সোজা আঙ্গুলে কখনোই ঘি উঠে না। তাই আঙ্গুল বাঁকা তথা কঠোরতা প্রদর্শন করেই জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর প্রয়াস চালাতে হবে। এমনটি সরকার কিংবা তার প্রশাসন করতে না চাইলে ব্যাপক নজরদারি ও তদারকি এবং আকস্মিক পরিদর্শন বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। সম্মিলিত ও সমন্বিত প্রয়াস ছাড়া করোনার আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি না।