বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:৩৪

সুগারের রোগীর একটা আতঙ্কের নাম হাইপোগ্লাইসেমিয়া

অনলাইন ডেস্ক
সুগারের রোগীর একটা আতঙ্কের নাম হাইপোগ্লাইসেমিয়া

যদিও সুগার কমে যাওয়ার আতঙ্ককে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারলে মিলবে দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতাঃ

কিছু কিছু ডায়াবেটিসের রুগীর চিকিৎসায় হঠাৎ আতঙ্ক হিসাবে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তের সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক সীমার নীচে নেমে বিপত্তি ঘটায়। রুগীর অভিজ্ঞতায়, তিনি যমের দরজা দর্শন করে ইহজগতে কোনক্রমে বেঁচে ফিরেছেন। কতটা সুগারের রোগের মাত্রার জন্য কতটা সুগার কমানোর ওষুধ উপযুক্ত সেটা মানুষের অনেকগুলো বৈশিষ্ট্যের উপরে নির্ভর করে। সুগারের রোগের চিকিৎসা ম্যালেরিয়া, আন্ত্রিক অথবা পিত্ত-থলির পাথরের চিকিৎসার মত সোজাসাপ্টা নয়। চিকিৎসকের অনুমানের ভিত্তিতে অসংখ্য সুগারের রোগের ওষুধের মধ্য থেকে এক-দুটো নির্বাচন করে আর তার পরিমাণ নির্ণয় করে (ট্রায়াল এন্ড এরর), সেই মানুষটির জন্য সঠিক একটা ওষুধের কক্টেল নির্ণয় করতে হয়। অর্থাৎ প্রথমে চিকিৎসার একটা কার্যকারী ওষুধ নির্ণয়ের পর্ব থাকে আর তার পরে থাকে একটা আজীবন নিরীক্ষণ পর্ব — সময়ের প্রবাহে চলতে থাকে রোগীর অবস্থাভেদে ওষুধসমূহের পুনর্নির্ধারনের অন্তহীন পর্ব। এই দুটো পর্বেই রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক সীমার মাঝে রাখার চেষ্টা থাকে — চিকিৎসক আর রুগীর এই দুই তরফেই। এই দুই পর্বেই রক্তের মাত্রা রক্তের সুগারের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি যেমন হতে পারে, আবার তেমনই কমও হয়ে যেতে পারে। রক্তে সুগারের মাত্রা বেশি হলে সেইক্ষণে মানুষটি সেটায় তাৎক্ষনিকভাবে বিব্রত অথবা শঙ্কান্বিত হন না। কারণ সেই সময়ে নিঃসারে তাঁর কিডনি, চোখ আর স্নায়ু আরও কিছুটা পাকাপাকিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেই মুহূর্তে তাঁর কোন আলাদা অনুভূতি হয়না। এর বিপরীতে, যদি রক্তে সুগারের মাত্রা কমে যায়, তবে রোগী একটা বেদম ধাক্কা খান। অর্থাৎ চিকিৎসায় “ফাইন টিউনিং” করে আপোসবিহীন চিকিৎসার অঙ্গ হিসাবে সম্ভাব্য সুগারের মাত্রা বিপদসীমার নীচে নেমে যাওয়ার ঘটনাগুলিকে ঠাণ্ডা মাথায় সামলে নেবার জন্য রুগী আর তাঁর চিকিৎসক প্রস্তুত থাকলে ডায়াবেটিসের নিঃশব্দ মার হিসাবে চোখ, কিডনি আর স্নায়ুর ক্ষতি বেশ অনেকটা ঠেকিয়ে অথবা পিছিয়ে দেওয়া যায়। এটা না সইতে পারলে -- অনেক সময়ে চিকিৎসকও বেশি চাপ না নিতে পারেন — কম মাত্রার ওষুধ দেন। তাতে সাময়িকভাবে রুগীও খুশি — তাঁর আগের মত আর রক্তের সুগারের মাত্রা কমে যাওয়ার ঘটনা (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) হচ্ছেনা। রুগীকে সাময়িক হাইপোগ্লাইসেমিয়ার আতঙ্ক থেকে মুক্তির বিপরীতে একজন সৎচিকিসকের কঠোর দায়িত্ব হিসাবে রোগ নিয়ন্ত্রণের তাৎক্ষনিক প্রচেষ্টার সুফল পাওয়ার জন্য এটা বুঝিয়ে বলা যে কিছু পেতে হলে কিছু কষ্ট সইতে হয়। কঠোর রোগ নিয়ন্ত্রণের অনুষঙ্গ হিসাবে রক্তের সুগারের মাত্রা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা ঠেকানোর জন্য তিনি পরামর্শ দেন — বেশি পরিমাণের অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়ানোর মত অত্যন্ত প্রয়োজন সময়মত ন্যূনতম খাবার গ্রহণ করা। কোন অজুহাতে খাবার সময় পিছানো চলবেনা অথবা, প্রয়োজনের চেয়ে কম পরিমাণের খাবার খাওয়া চলবেনা। সুস্থ মানুষের রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক সীমার মধ্যে রাখার যে জৈবিক ক্রিয়া সক্রিয় থাকে, ডায়াবেটিসের রুগীর ক্ষেত্রে সেই প্রক্রিয়া বিকল থাকে। তাই রক্তের সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক সীমার মধ্যে রাখার জন্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের জন্য সচেতনে ওষুধ ব্যবহারের সাথে সাথে সময়মত সঠিক পরিমাণের খাবার খাওয়ার জন্য আলাদা করে মাথা খাটাতে হয়।

লেখক : ডাঃ গৌতম মিস্ত্রি, আগরতলা, ভারত।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়