মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪  |   ৩৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মিশরে ঈদে মিলাদুন্নবীর ঐতিহ্য ‘আরুসাত-আল-মোলিদ’ : জন্মদিনের পুতুল
  •   'বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনার রাজনৈতিক শক্তির বিকাশ অপরিহার্য'
  •   চাঁদপুরের ২৪তম পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব
  •   ফরিদগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শোভাযাত্রা
  •   ওয়াইফাই সংযোগ দিতে গিয়ে প্রাণ গেল যুবকের

প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়াকণ্ঠের সাথে নবাগত জেলা ক্রীড়া অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম

জেলার ক্রীড়া উন্নয়নে সকলকে নিয়ে কাজ করে যেতে চাই

চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম ॥
জেলার ক্রীড়া উন্নয়নে সকলকে নিয়ে কাজ করে যেতে চাই

ইলিশের নগরী চাঁদপুর জেলার একাদশ (১১তম) জেলা ক্রীড়া অফিসার হিসেবে যোগদান করেছেন মোঃ রফিকুল ইসলাম। সর্বশেষ পাবনা জেলা থেকে তিনি বদলি হয়ে চাঁদপুর জেলায় ১১ জুলাই তাঁর নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। ছোটকাল থেকেই খেলাধুলার সাথে তিনি জড়িত ছিলেন। হাইস্কুলে পড়াবস্থায় ফুটবল-ক্রিকেট ও অ্যাথলেটসহ বিভিন্ন খেলায় জড়িত ছিলেন। ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি এবং কলেজে পড়াবস্থায় বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিভিন্ন অ্যাথলেট প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন অসংখ্য বার। চাকুরিরত অবস্থায় বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালনকালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও জেলা ক্রীড়া অফিসের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারী ফুটবলার ইতোমধ্যে দেশের জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল দলসহ সাফ ফুটবলেও খেলেছেন।

চাঁদপুর জেলার ইতিহাসে ১৯৮৪ সাল থেকে শুরু হয় চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া অফিসের কার্যক্রম। এর মধ্যে বেশ ক’জন ক্রীড়া অফিসার ঘুরেফিরে দায়িত্ব পালন করেছেন। জেলার ক্রীড়া অফিসটি এক সময় চাঁদপুর শহরের বায়তুল আমিন মসজিদ চত্বর এলাকায় থাকলেও বর্তমানে পুলিশ সুপার কার্যালয় এলাকায়।

চাঁদপুর জেলার নবাগত জেলা ক্রীড়া অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলামের জন্মস্থান সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ায়। সাত ভাই-বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। তাঁর বাবার নাম আলহাজ্ব মমতাজ আলী মন্ডল ও মায়ের নাম মরহুমা রাবেয়া বেগম। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত। তাঁর স্ত্রীর নাম মোসাম্মৎ বিনুয়ারা। তিনি এক ছেলের জনক। তাঁর ছেলের নাম মোহাম্মদ রাইয়ান। তিনি তাঁর নিজ জেলা সিরাজগঞ্জ সালেহা ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করার পর উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজ থেকে এইচএসসি, বিএসএস ও সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে এমএসএস সম্পন্ন করেন। তিনি ঢাকার মোহাম্মদপুর শারীরিক কলেজ থেকে বিপিএড ডিগ্রি নেন। ছোটকাল থেকে খেলাধুলার সাথে জড়িত থাকা মানুষটিই বর্তমানে তাঁর কর্মজীবনে খেলাধুলার সাথেই জড়িয়ে রয়েছেন। কর্মজীবনের শুরু থেকে কখনো চলতি দায়িত্ব, কখনো অতিরিক্ত দায়িত্ব এবং মূল দায়িত্বসহ জেলা ক্রীড়া অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছেন দেশের ক'টি জেলায়। চাঁদপুরে যোগদানের পর গত শনিবার ক্রীড়াকণ্ঠের এ প্রতিবেদক তাঁর সাথে মুঠোফোনে কথা বলেন। তিনি জেলার ক্রীড়া উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয়ে আলাপকালে বলেন যে, চাঁদপুর জেলা ও উপজেলার সাবেক খেলোয়াড় ও ক্রীড়া সংগঠকদের নিয়ে উদীয়মান খেলোয়াড়দের গড়ে তোলার কাজই হবে তাঁর মূল লক্ষ্য। পাঠকদের কাছে তাঁর পুরো বক্তব্য তুলে ধরা হলো।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন?

মোঃ রফিকুল ইসলাম : ওয়ালাইকুম আসসালাম। আমি আপনাদের ও আমার নতুন কর্মস্থল চাঁদপুর জেলার সকলের দোয়া ও ভালোবাসা নিয়ে ভালো আছি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : ক্রীড়া অফিসার হিসেবে আপনার কর্মজীবন শুরু হয় কবে?

মোঃ রফিকুল ইসলাম : ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও জেলায় ক্রীড়া অফিসার হিসেবে আমার কর্মজীবন শুরু হয়।

ক্রীড়াকণ্ঠ : জেলা ক্রীড়া অফিসার হিসেবে কোন্ কোন্ জেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে এবং কোন্ কোন্ জেলায় পুরো দায়িত্ব পালন করেছেন?

মোঃ রফিকুল ইসলাম : আমি ঠাকুরগাঁও জেলাতে দায়িত্ব নেয়ার পরে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দিনাজপুরেরও দায়িত্বপালন করতে হয়। তিন বছর সেখানে চাকরি করার পরে আমার বদলি হয় পাবনা জেলাতে। পাবনা জেলার পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্বে হিসেবে নাটোরের দায়িত্ব পালন করি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : বিভিন্ন জেলায় ক্রীড়া অফিসারের দায়িত্ব পালনকালে আপনার সফলতা কী?

মোঃ রফিকুল ইসলাম : শুরু থেকেই আমার লক্ষ্য ছিলো, যে জায়গায় যখন যাবো, যে স্থানে থাকবো, সেখানকার ক্রীড়াঙ্গনে আমি আমার দায়িত্ব নিয়ে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবো। বলা দরকার, আমি যে সময় ঠাকুরগাঁয়ের দায়িত্ব পালন করেছি, সেই সময় সেখানকার রাণীশংকৈলের নারী ফুটবলার জাতীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলে সুনাম অর্জন করেছেন। পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলাতে আমি নারী ফুটবলারসহ উদীয়মান খেলোয়াড়দের নিয়ে কাজ করেছি। ঠাকুরগাঁও জেলাতে মামণি গোল্ডকাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করি। পাবনাতে ৯টি উপজেলা নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের খেলার আয়োজন করি এবং নাটোর বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচির আওতায় সাইক্লিং, ফুটবলসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করি। আমার দায়িত্ব থাকাকালীন নাটোর থেকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল দলে মৌমিতা খেলার সুযোগ পায়।

ক্রীড়াকণ্ঠ : চাঁদপুর জেলার ক্রীড়া উন্নয়ন নিয়ে আপনার লক্ষ্য কী?

মোঃ রফিকুল ইসলাম : আমি তো সবে মাত্র আসলাম। তবে আমি এই জেলাতে আসার আগে শুনেছি, এ জেলা থেকে বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে দুজন ক্রিকেটার খেলছেন। এছাড়া এ জেলার সাঁতার ও ফুটবলের অনেক সুনাম রয়েছে। জাতীয় পর্যায়ের অনেক সাঁতারুর জন্ম এ জেলাতে। ইলিশ নগরীর এই চাঁদপুর জেলা থেকে এক সময় ঢাকার মাঠে খেলতেন ফুটবল, বাস্কেটবলসহ ক্রীড়াভিত্তিক অনেক ইভেন্টের খেলোয়াড়রা। আমি আসার পর এখানে অনেক সাবেক খেলোয়াড়ের সাথে কথা বলেছি, তারা খেলাধুলার প্রতি অনেক আন্তরিক। আমার চেষ্টা থাকবে চাঁদপুর জেলার মাননীয় জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক স্যারসহ চাঁদপুর জেলা ও উপজেলার সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়দের এবং ক্রীড়া সংগঠকদের পরামর্শ নিয়ে জেলার ক্রীড়া উন্নয়নের জন্যে কাজ করে যাওয়া।

ক্রীড়াকণ্ঠ : সাঁতার ও অ্যাথলেট নিয়ে আপনার লক্ষ্য?

মোঃ রফিকুল ইসলাম : সাঁতারে চাঁদপুর জেলার সুনাম রয়েছে। আমি সাঁতারের পাশাপাশি অ্যাথলেটে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করে যেতে চাই। আমি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে জেলা ক্রীড়া অফিসের ব্যবস্থাপনায় যখন যে উপজেলায় খেলাধুলার আয়োজন ও প্রশিক্ষণের দায়িত্বে থাকবো, আমি সেই উপজেলার ক্রীড়া সংগঠক ও সাবেক খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে কাজ করবো। অ্যাথলেটের সাথে যারা জড়িত আছে, তাদেরকে নার্সিংয়ের মাধ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করে যাবো।

ক্রীড়াকণ্ঠ : চাঁদপুরবাসীর উদ্দেশ্যে?

মোঃ রফিকুল ইসলাম : জ্বি, আমি শুরুতেই বলেছিলাম, আমি এই জেলাতে যোগদান করার পরে খোঁজ-খবর নিয়ে জেনেছি, এ জেলার মানুষ খেলাধুলাপ্রিয় মানুষ। আমি এ খেলাধুলাপ্রিয় মানুষদেরকে সাথে নিয়ে চাঁদপুর জেলার ক্রীড়া উন্নয়নে কাজ করে যেতে চাই। কাজ করতে গেলে কিছুটা ভুল হতেও পারে। আমার সাথে যারা থাকবেন এবং যে দায়িত্বে থাকবেন, তারা ভুলগুলো শুধরে দিলে কাজগুলো পরিপূর্ণতা পাবে বলে আমি আশা করি। বর্তমানে প্রচার-প্রচারণার দিকে সকল কিছু এগিয়ে রয়েছে। আপনার মতো ক্রীড়া সাংবাদিকসহ যারা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত রয়েছেন, সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আপনাকে ধন্যবাদ।

মোঃ রফিকুল ইসলাম : জ্বি, আপনার মাধ্যমে সকলকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাকে সহযোগিতা করার জন্যে সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়