প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ২৩:৫৪
সেনাবাহিনীর টহলসহ থাকছে ভ্রাম্যমাণ আদালত
হাজীগঞ্জ বাজারের যানজট নিরসনে আজ থেকে কঠোর হবে প্রশাসন

আজ শুক্রবার (১ আগস্ট ২০২৫) থেকে হাজীগঞ্জ বাজারের সড়কে কোনো যানজট থাকবে না। এই যানজটের প্রধান কারণ ফুটপাত দখলসহ সড়কের পাশে হকার বসা। এ বিষয়ে প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আজ থেকে জিরো টলারেন্সে।
|আরো খবর
জেলার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন ইতোমধ্যে একাধিকবার স্পষ্ট করে বলেছেন, ১ আগস্ট থেকে হাজীগঞ্জ বাজারে সড়কের পাশে কোনো হকার বসতে দেয়া হবে না।
হকার বসা রোধে আজ শুক্রবার পুরো হাজীগঞ্জ বাজারে সেনাবাহিনীর টহল টিমসহ ভ্রাম্যমাণ আদালতের দুটি ভিন্ন টিম কাজ করবে। এর বাইরে একাধিক টিম কাজ করবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চাঁদপুর কণ্ঠকে জানিয়েছেন।
‘চীনের দুঃখ হোয়াংহো নদী, তেমনি হাজীগঞ্জ বাজারের দুঃখ যানজট’—এই যানজটের মূল কারণ ফুটপাতে এবং সড়কে তিন স্তরে হকার বসা।
সকল হকার উচ্ছেদ করে হাজীগঞ্জ বাজারকে যানজটমুক্ত করতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন কঠোর ভূমিকা নিয়েছেন।
তিনি হকার ও ব্যবসায়ীদের সাথে একাধিকবার বৈঠক করে যানজটের নানা কারণ শনাক্ত করেন। মূল কারণ হিসেবে উঠে আসে সড়কের পাশে একাধিক স্তরে হকার বসা।
বাজারের ওপর দিয়ে যাওয়া চাঁদপুর-হাজীগঞ্জ-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ও ফুটপাতে হকার বসতে না দেয়ার ব্যাপারে তিনি কঠোর অবস্থান নেন এবং প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করার জন্য।
তিনি হকারদের এক মাস সময় দেন, যার মেয়াদ ছিল ৩১ জুলাই পর্যন্ত। আজ ১ আগস্ট থেকে কোনো ছাড় নেই—এই বার্তা আগে থেকেই গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাজীগঞ্জ বাজারের হকার্স মার্কেটে অতীতে হকারদের পুনর্বাসন করা হয়েছিল। কিন্তু বাজারের পরিধি ও বাণিজ্যিক চাহিদা বাড়ার কারণে নতুন করে হকার বসা শুরু হয় এবং তা ধীরে ধীরে স্থায়ী রূপ নেয়।
বেশিরভাগ হকার ভ্যানে করে মালামাল বিক্রি করলেও তারা ওই ভ্যানের মালিক নন। মালিকেরা হলেন স্থানীয় আড়তদার ও কথিত রাজনৈতিক নেতা, যাঁদের প্রতিজনের ৮-১০টি করে ভ্যান রয়েছে, যেগুলোই মূলত সড়ক দখলের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সরজমিনে দেখা যায়, হাজীগঞ্জ বাজারের পশ্চিম মাথা থেকে শুরু করে পূর্ব মাথায় বড়ো পুল পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে তিন স্তরে হকার বসে থাকে।
প্রথমত, কিছু স্থায়ী দোকানি ফুটপাত দখল করে পণ্য রাখেন। দ্বিতীয়ত, ছোট চৌকি বিছিয়ে ফল বা তরকারি নিয়ে বসে একদল হকার। তৃতীয়ত, সড়কের উপর দাঁড়িয়ে ভ্যানে করে পণ্য বিক্রি করে আরেকদল হকার।
ফলে ফুটপাত ও সড়ক পুরোপুরি দখল হয়ে যানজট চরমে পৌঁছায়।
যানজটের আরেকটি বড় কারণ বাজারের ওপর দিয়ে চলা গণপরিবহনগুলোর অত্যন্ত ধীর গতি। এর পেছনে আটকে যায় ছোট পরিবহন, যা দীর্ঘ জট তৈরি করে।
বাজারের ভেতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বহু সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও অটোবাইক স্ট্যান্ডও যানজট বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইবনে আল জায়েদ হোসেন জানান, “হকাররা আমাদের কারো না কারো ভাই। আমরা চাই তারা স্বেচ্ছায় সড়কের পাশে না বসে।”
তিনি জানান, আজ থেকে সেনাবাহিনীর টহলসহ দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাজারে অবস্থান করবেন। পাশাপাশি থানা পুলিশ ও ব্যাটেলিয়ন আনসারের একাধিক টিম কাজ করবে যানজট নিয়ন্ত্রণে।
প্রশাসনের লক্ষ্য—হাজীগঞ্জ বাজারকে হকারমুক্ত, যানজটমুক্ত ও সচল রাখা।
ডিসিকে/এমজেডএইচ