চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের সম্মুখস্থ লেঃ কর্নেল (অবঃ) আবু ওসমান চৌধুরী সড়কটির বেহাল দশা। পুরো সড়কটির মাঝে অসংখ্য ছোট বড় গর্ত তৈরি হবার কারণে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন পথচারী ও বিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। শহরের মাঝের এই সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক।

এই সড়কটির কোল ঘেঁষে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে চাঁদপুরের স্বনামধন্য একাধিক বিদ্যাপীঠ। এই সড়কের পশ্চিমে অবস্থিত চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ, উত্তরে চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্ব পাশে অবস্থিত হাসান আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আর দক্ষিণ পূর্ব দিকে অবস্থিত মাতৃপীঠ সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। এসব বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী এই সড়কটির উপর দিয়েই তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করেন।

এমন ভগ্ন ও কর্দমাক্ত সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে তাদের সমস্যা হয় বলে জানান মাতৃপীঠ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার। হাসান আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, এই সড়কটির উপর দিয়েই ছেলেকে বিদ্যালয়ে আনা নেয়া করি। বর্তমানে সড়কটির উপর দিয়ে চলাচল করা অনেক মুশকিল। খুব সাবধানে ছেলেকে নিয়ে চলতে হয়। ভয় হয় যদি গর্তে পড়ে ছেলের পা মচকে বা ভেঙ্গে যায়।

এক পথচারী বলেন, এই সড়কটির উপর দীর্ঘ দিন ধরেই ছোট-বড় অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, তবে এখন এই বর্ষায় প্রবল বর্ষণের কারণে গর্তগুলো আরো বড় হয়ে সড়কের এমন বেহাল দশা হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, মহিলা কলেজ সম্মুখস্থ সড়কটিতে চলাচলকারী শিক্ষার্থীরা অনেক সন্তর্পণে গর্ত এড়াতে ব্যাঙের মতো লাফিয়ে সড়কটি পার হচ্ছে।

আরো দেখা যায় যে, সড়কটির পূর্ব পাশে যে ওয়াকওয়ে রয়েছে তার উপর দিয়ে শিক্ষার্থীরা বা সাধারণ পথচারীরা চলাচল করছে না। কারণ সেই ওয়াক ওয়ের ওপরের একটি ম্যানহোলের ঢাকনা নেই। ফলে ঢাকনাবিহীন ওয়াক ওয়ের ওই গর্তের উপর দিয়ে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ।

স্থানীয় বাসিন্দা কাদির গাজী বলেন, গত তিন মাস হলো এ ওয়াক ওয়ের উপরের ম্যানহোলের ঢাকনাটি কোনো বেরসিক চোর চুরি করে নিয়ে গেছে। আমরা দুর্ঘটনা এড়াতে ওই ঢাকনাবিহীন ম্যানহোলের গর্তটি গাছের ডাল পালা দিয়ে ঢেকে রেখেছি। সড়কটির পাশে অবস্থিত স্বর্ণ মার্কেটের দোকানী সুমন, রঞ্জন, খোরশেদ বলেন, আমাদের দোকানের সামনের সড়কটি যদি সংস্কার হতো তবে আমাদের দোকানের ক্রেতা সাধারণের অনেক সুবিধা হতো। তারা বলেন, দেখুন আমাদের পণ্যটা যেহেতু একটু বিলাসী এবং রুচিশীল, সেহেতু আমাদের মার্কেটের সামনের সড়টিও একটু মসৃণ হওয়া প্রয়োজন।

স্থানীয় বাসিন্দা পুরাণবাজারের ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, বাড়ির মূল ফটকের সামনেই প্রমাণ সাইজ গর্তের উপর দিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরুতে বা সাধারণ ভাবে চলাচল করতে অনেক সমস্যা হয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, উক্ত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অ্যডঃ হেলাল হোসাইন এবং চাঁদপুর পৌর মেয়র অ্যাডঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল দুজনেই অত্যন্ত মেধাবী ও বিচক্ষণ মানুষ। তারা নিশ্চয়ই এ সড়কটির সংস্কারের বিষয়ে তাদের সুনজর দেবেন।

এছাড়া স্থানীয় অনেকেই উক্ত সড়কটি সংস্কারের দাবিতে পৌর মেয়রের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।