প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর জেনারেল জিয়াসহ তার পরিবার এবং আন্তর্জাতিক ও দেশীয় পাকিস্তানি দোসররা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলো। কিন্তু মহান আল্লাহর রহমতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা দেশে এসে ১৯৮১ সালের ১৭ মে আওয়ামী লীগের হাল ধরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে আজ দল এবং দেশকে এ পর্যায়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ণ উন্নতি হচ্ছে। জাতির পিতার যে আদর্শ, জাতির পিতা যে উন্নয়ন চেয়েছিলেন, এই দেশকে একটি সোনার বাংলার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, তাঁর কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার হাত ধরেই আজকে দেশ সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে শোকের শক্তির জাগরণ নিয়ে পিতা মুজিবের আদর্শে আমরা এগিয়ে যাবো।
তিনি ১৫ আগস্ট মঙ্গলবার বেলা বারোটার সময় চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসন আয়োজিত স্বাধীনতার মহান স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০২৩ উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কীর্তির উপর আলোচনা সভা এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপ্রধানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিপিএম, পিপিএম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ, স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুননাহার চৌধুরী, পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার ইয়াকুব মাস্টার , চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ।
দৈনিক সুদীপ্ত চাঁদপুর পত্রিকার প্রধান সম্পাদক এমআর ইসলাম বাবুর পরিচালনায় জাতীয় শোক দিবসের এ আয়োজনে প্রশাসনিক ও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, পেশাজীবী ব্যক্তিবর্গ, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের এইদিনে বাঙালি জাতির ইতিহাসে রচিত হয় এক কলঙ্কজনক অধ্যায়, জাতির জন্যে এক অপূরণীয় ক্ষতি। এইদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে ঘাতকের নির্মম বুলেটে শাহাদতবরণ করেন।
তিনি বলেন, আজকে দেশে বিদেশিদের পক্ষে আমাদের মানবাধিকার নিয়ে ছবক দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের খুনিদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সকে আইন হিসেবে অনুমোদন করে। তারপর ঘটে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতাদের হত্যা করা, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার একাধিকবার চেষ্টা, ২০১৪-১৮ সালের অগ্নি সন্ত্রাস করা হয়। তখন কোথায় ছিলো তাদের মানবাধিকারের ছবক?
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সত্যিকারের ইতিহাস জানতে হবে। এখন থেকে বুঝতে হবে কোনটি সত্য কোনটি মিথ্যা, কোনটি সাদা কোনটি কালো। এখন থেকে বুঝতে হবে কোনটি মন্দ কোনটি ভালো। দেশটাকে পিতা মুজিবের মতই সবাইকে ভালবাসতে হবে।
সভার শুরুতে এই দিবসে শাহাদাতবরণকারীদের উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনা সভা শেষে ‘আমার চোখে বঙ্গবন্ধু’ নামক ১ মিনিটের ভিডিওচিত্র তৈরির জেলা পর্যায়ের ১০ জন বিজয়ী, দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত কবিতা পাঠ, রচনা ও কুইজ প্রতিযোগিতার বিজয়ী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহনবাঁশি স্মৃতি সংসদের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর চাঁদপুর কর্তৃক যুবঋণের চেক তুলে দেন প্রধান অতিথিসহ অতিথিবৃন্দ।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে দুপুরে সরকারি শিশু পরিবার, সরকারি বাক্শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের খাবার পরিবেশিত ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ দোয়া মাহফিল এবং প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
বিকেল ৫টায় শিল্পকলা একাডেমিতে দিবসটি উপলক্ষে মঞ্চস্থ হয় ‘ধানমণ্ডি ৩২’ নাটক। এর আগে জাতীয় শোক দিবস কার্যক্রমের শুরুতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির উপস্থিতিতে চাঁদপুর সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান। পরে সেখান থেকে শোক র্যালি শহর প্রদক্ষিণ করে শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ হয়।