প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
পৃথক মামলায় চাঁদপুর সদর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ও হাজীগঞ্জের সৈয়দপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে পৃথক মামলায় স্বামীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছেন চাঁদপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালত। চাঁদপুর সদর উপজেলার ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের রামদাসদী গ্রামে কিস্তির টাকা পরিশোধকে কেন্দ্র করে স্ত্রী সালমা বেগম (২২)কে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্বামী বায়েজীদ খান বাবুল (২৮)কে এবং হাজীগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে যৌতুকের টাকা দাবিকে কেন্দ্র করে স্ত্রী সাহিদা বেগম মুক্তা (৩৬)কে ধারালো ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যার দায়ে স্বামী হাসান সর্দার (৩৮)কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
২৫ জুলাই মঙ্গলবার দুপুরে পর্যায়ক্রমে পৃথক দুই মামলার রায় দেন চাঁদপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মহসিনুল হক। রায় প্রদানকালে দুই মামলার আসামীই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
সদর উপজেলার ইব্রাহীমপুর রামদাসদী গ্রামের সালমা হত্যা মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারি মধ্য রাতে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করাকে কেন্দ্র করে বাক্-বিত-ার এক পর্যায়ে শ্বাসরোধ করে স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামী। এই ঘটনায় সালমার পিতা আব্দুল লতিফ মিজি বাদী হয়ে ওই দিনই চাঁদপুর সদর মডেল থানায় বাবুলকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই ঘটনায় পুলিশ বাবুলকে গ্রেফতার করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া তদন্ত শেষে ওই বছর ৫ জুন আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। মামলাটি প্রায় ৬ বছরের অধিক সময় চলমান অবস্থায় আদালত ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
অপরদিকে হাজীগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে সাহিদা বেগম মুক্তা হত্যার মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাতে পূর্বের পারিবারিক কলহ এবং যৌতুকের টাকা দাবিকে কেন্দ্র করে স্বামী হাসান সর্দার স্ত্রী মুক্তাকে ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে পুকুরে ফেলে রাখে। পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে চাঁদপুর মর্গে পাঠায়। এই ঘটনায় মুক্তার ভাই মোঃ সোহাগ মজুমদার (৩৫) বাদী হয়ে পরদিন অর্থাৎ ২২ সেপ্টেম্বর হাজীগঞ্জ থানায় হাসান সর্দারকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় হাসান গ্রেফতার হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহীদ হোসেন তদন্ত শেষে ওই বছর ২৩ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। মামলাটি চলমান অবস্থায় আদালত ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
উভয় মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটির (এপিপি) মোক্তার আহমেদ অভি জানান, দীর্ঘ ৬ বছরের অধিক সময় ধরে সাক্ষ্য গ্রহণ ও নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে আসামীদের অপরাধ প্রমাণিত হয়। ফলে আসামীদের উপস্থিতিতে বিচারক এই রায় দেন।
আসামীদের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন গোলাম মর্তুজা ও লিগ্যাল এইডের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া।