প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:২৬
ফলোআপ : এক রাতে বিদ্যুতের ২০টি শিল্প মিটার চুরি
চোরকে টাকা পাঠিয়ে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ৩টি মিটার
শেষ পর্যন্ত চোরের চাহিদা অনুযায়ী বিকাশে টাকা পাঠিয়ে ফেরত আনা হয়েছে রাতের বেলা চুরি হয়ে যাওয়া পল্লী বিদ্যুতের ৩টি শিল্প মিটার। চুরি যাওয়ার রাত শেষে দিনেই টাকা পেয়ে বিভিন্ন স্থানে মিটারগুলো রেখে যায় চোরেরা। স্ব স্ব মিল মালিকগণ স্ব-প্রণোদিত হয়ে চোরের সাথে যোগাযোগ করে মিটার ফিরে পাবার ব্যবস্থা করে সফলতা লাভ করে। এর আগে চুরি যাওয়া প্রতিটি মিটারের পাশে একটি মুঠেফোন নাম্বার রেখে যায় চোরেরা। সেই নাম্বারে যোগাযোগ করে একাধিক স' মিল মালিক। এদিকে এক রাতে এতো শিল্প মিটার চুরির ঘটনায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ হাজীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ ও ২-এর আওতাধীন বিভিন্ন এলাকা থেকে গত বুধবার দিবাগত রাতে (২৩ জানুয়ারি ২০২৫) প্রায় ২০টি শিল্প মিটার তথা স' মিল ও তুলা তেরির মিলের শিল্প মিটার চুরি হয়। চোরের দল চুরি করা প্রতিটি মিটারের পাশে একটি মুঠোফোন নাম্বার কাগজে লিখে তা পলিথিনে মুড়িয়ে ঝুলিয়ে রেখে যায়। সেই নাম্বারে একাধিক ব্যবসায়ী যোগাযোগ করে কয়েকজন সফলতা লাভ করেন।
দেবপুর বাজার থেকে ভুট্টোর এবং মহামায়া বাজার থেকে শরীফ হোসেন ও বিল্লাল মিজির শিল্প মিটার চুরি হয়। পরে বুধবার চোরের দেয়া নাম্বারে ফোন করেন ক্ষতিগ্রস্ত এই তিন ব্যবসায়ী। তিনজনেই ১০ হাজার টাকা করে চোরের দেয়া বিকাশ নাম্বারে পাঠানোর পরে মিলের কিছু দূরে পাওয়া যায় চুরি হওয়া মিটারগুলো।
বিকাশে ১০ হাজার টাকা পাঠিয়ে মিটার ফিরে পাওয়া মহামায়া বাজারের স' মিল মালিক বিল্লাল মিজি জানান, আমি চোরের সাথে যোগাযোগ করলে তারা আমারে একটা ভিন্ন বিকাশ নাম্বার দেয়। সেই নাম্বারে ১০ হাজার টাকা পাঠানোর কিছু পরে মিলের সিকি কিলোমিটারের মধ্যে সড়কের পাশে আমার মিটারটি আমি পাই। আমার মতো টাকা পাঠিয়ে ভুট্টো ও শরীফ হোসেন তাদের মিটার পেয়েছে। পরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে জানানো হয়েছে যে, আমরা মিটারগুলো পেয়েছি।
এ দিকে হাজীগঞ্জ তথা চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে মিটার চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলেও উল্লেখিত ৩ জন ছাড়া কেউ চুরি যাওয়া মিটার আর ফিরে পাননি।
বাকিলার স' মিল মালিক শুকুর আলম জানান, চোরের সাথে আমার কথা হয়েছে। তারা ১০ হাজার চেয়েছে, আমি রাজি হইনি। তিনি আরো জানান, নতুন শিল্প মিটার আনতে গেলে ১০ হাজার টাকার মতোই লাগে। চোরের ১০ হাজার টাকা দিয়ে মিটার ফেরত আনার পর তা যদি নষ্ট হয়ে থাকে তাহলে ডাবল খরচ হবে। তাই আমি নতুন মিটারই আনবো।
বলাখাল সাবস্টেশন অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ সুজন দেবনাথ জানান, আমাদের বলাখাল সাবস্টেশনের আওতাধীন কোনো মিটারই ফেরত পাওয়া যায়নি। এ দিকে ঘটনার দিন আমরা হাজীগঞ্জ থানায় ডায়েরি করেছি।
উল্লেখ্য, গত বুধবার দিবাগত রাতে চাঁদপুর কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশের গোগরা থেকে হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার মিঠানিয়া ব্রিজ পর্যন্ত মোট ৭ টি মিলিয়ে হাজীগঞ্জ থেকে প্রায় ১১টি মিটার চুরি হয়েছে। যার মধ্যে দু-একটি বাদে সব মিটার শিল্প মিটার তথা স' মিল ও গার্মেন্টস্ জুট কাপড় থেকে তুলা তৈরি করার মেশিনের মিটার।
চুরি হওয়া মিটারগুলো ছিলো : বাকিলা পশ্চিম বাজারের শুকুর আলমের স' মিল, পূর্ব বাজারের তাহেরের স' মিল, মোস্তফার স' মিল, মহামায়া এলাকার শরীফ হোসেনের স' মিল, বিল্লাল মিজির স' মিল ও দেবপুরের ভুট্টো বকাউলের স' মিলের মিটারসহ প্রায ২০/২২ টি মিটার। সব মিটার চুরির ঘটনা একই রাতে ঘটে। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে এক ব্যবসায়ী চোরের দেয়া ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করলে নতুন করে আরেকটি বিকাশ ফোন নাম্বার দিয়ে বলা হয় ১০ হাজার টাকা দিলে মিটারটি সময়মতো পৌঁছে দেয়া হবে।