প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যুরোধে চাঁদপুরে ৬ থেকে ১০ বছর বয়সী একলাখ শিশুকে সাঁতার শিখানো হবে। আগামী ১ আগস্ট থেকে মহিলা শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের আইসিবিসি প্রকল্পের আওতায় এসব শিশুকে সাঁতার শিখানোর উদ্যোগ নিয়েছে চাঁদপুর শিশু একাডেমি। এ জন্যে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা অচল অরুণ নন্দী সুইমিং পুলটি সচল করা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বিশ্ব পানিতে ডুবা প্রতিরোধ দিবসের আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানান জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ কাউছার আহমেদ।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, নিউইয়র্কের জনহিতকর সংস্থা ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায়, সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী। অনুষ্ঠানে প্রতিবেদন পেশ করেন ডাঃ মোঃ জাহিদুজ্জামান।
এক পরিসংখ্যানে জানানো হয়, জেলায় গত ৬ মাসে প্রায় অর্ধশত শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই ৩ থেকে ১০ বছরের শিশু। অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, এসব শিশু পরিবারের অবহেলায় বাড়ির কাছেই পুকুরে, ডোবায় অথবা বালতির পানিতে ডুবে মারা যায়। যাদের অভিভাবকদের অধিকাংশই প্রবাসী। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় তাঁর বক্তব্যে পানিতে ডুবে মৃত্যুরোধে জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে সিভিল সার্জনের প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়ার রাখার আহ্বান জানান। যাতে করে কোনো শিশু পানিতে পড়ার সাথে সেখানে প্রকৃত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়।
সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ বলেন, এখন বর্ষাকাল, সব জায়গায় পানিতে ডুবে দুর্ঘটনার সময়। এ জন্যে আমাদের মায়েরা যেন সন্তানের দিকে খেয়াল রাখেন। যাদের শিশু বাচ্চা আছে তাদের প্রতিটি পরিবার যেন এ ব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন থাকেন। সম্ভব হলে সাঁতার শিখায়।
জেলায় শিশুদের সাঁতার শিখানোর কাজে নিয়োজিত এনজিও সিআইপিআর-এর এরিয়া ম্যানেজার জহির উদ্দিন মোঃ হিন্দাল বলেন, চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ ও চাঁদপুর সদর উপজেলায় গত জানুয়ারি থেকে চলতি জুলাই পর্যন্ত ২৫ জন শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে। এছাড়া ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, কচুয়া, শাহরাস্তি ও হাইমচরে আরও অনেক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর আগে ২০২২ সালে জেলায় ৪৯জন, ২০২১ সালে ৫৩জন, ২০২০ সালে ৪৩জন ও ২০১৯ সালে ৪৯ শিশুর মৃত্যু হয়।
দিবসটি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মুখ থেকে বের হয়ে পুনরায় একই স্থানে এসে শেষ হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।