প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুর শহরের কুমিল্লা রোডস্থ মিয়া ম্যানশন ভবনের নিচতলায় অগ্নিকাণ্ডে ৫/৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ২৩ জুলাই দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রখ্যাত কালীবাড়ি এলাকায় মিজান চৌধুরী সড়কস্থ বহুতল ভবন মিয়া ম্যানশনের নিচতলার পিছনের অংশে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।
প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানান, উক্ত ভবনের নিচতলার পিছনের অংশ অর্থাৎ মার্কেটের উত্তর অংশে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বেশ কিছু গোডাউনে রয়েছে। এসব গোডাউনের মধ্যে আরএফএল গ্রুপের ওয়াকার ফুটওয়্যার নামক জুতার দোকানের গোডাউনে আগুন দেখে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হলে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আধা ঘন্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পাশাপাশি আগুনের খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশের একটি দলও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বহুতল ভবন মিয়া ম্যানশনের নিচতলার উত্তর অংশে তথা পিছনে আরএফএল গ্রুপের ওয়াকার ফুটওয়্যারের পাশাপাশি ৩টি জুতার গোডাউন রয়েছে। এই ৩টি গোডাউনের প্রথম গোডাউন থেকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে যে কোনো একটি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় তবে আগুনের সূত্রপাত যে উক্ত জুতার গোডাউন থেকে হয়েছে, এটি প্রায় নিশ্চিত হয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারাও। ওয়াকার ফুটওয়্যারের ৩টি গোডাউন পাশাপাশি হওয়ায় আগুনের সূত্রপাত হয়ে একে একে ৩টি গোডাউনের সকল মালামাল আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পাশাপাশি হক ফামেসীর ঔষধের গোডাউন, বিসমিল্লাহ গার্মেন্টস ও মায়ের দোয়া নামক টেইলার্সের বেশ ক্ষতি হয়।
এছাড়াও আশপাশের বেশক’টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেরও কম-বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে আগুনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা পুরোপুরি নির্ধারণ করতে সময় লাগবে বলে জানা গেছে।
ঘটনার পর স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, এটি একটি অপরিকল্পিত বহুতল ভবন। ভবন মালিক আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্যে নিচের অংশে অর্থাৎ পিছনের দিকে অপরিকল্পিতভাবে বেশ কিছু রুম করে তা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে গোডাউন হিসেবে ভাড়া দিয়েছেন। যেভাবে রুম করা হয়েছে তাতে একজন মানুষ হাঁটা-চলার জায়গা পর্যন্ত নেই। ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে পুরো আগুন নিভাতে সক্ষম হন। যদিও প্রথম অবস্থায় তাদের বেশ হোঁচট খেতে হয়। পরে কৌশল অবলম্বন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে শত শত জনতা ভীড় করে। কিন্তু পুলিশের কড়া ব্যারিকেডে উৎসুক জনতা ভীড় জমাতে ব্যর্থ হয়।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চাঁদপুরের সহকারী উপ-পরিচালক মোরশেদ হোসেন বলেন, ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। এটি তালিকা করে প্রস্তুত করে তারপর বলতে পারবো। তবে তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, ভবনটির নিচে বা ঘটনাস্থলে যেভাবে গোডাউন বা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো করা হয়েছে, এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। এভাবে করা হলে ভবিষ্যতে আরো ভয়াবহ দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সকলকে এ সকল বিষয়ে সচেতন হতে হবে।