শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৩, ০০:০০

সাগরে নিষেধাজ্ঞা শেষ, মাছ ধরা শুরু
মিজানুর রহমান ॥

সাগরে আবার মাছ ধরা শুরু হয়েছে। প্রজনন ও সংরক্ষণে সাগরে মাছ ধরায় ২০মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিল। রোববার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় আনন্দিত চাঁদপুরের উপকূলীয় জেলেরা। ট্রলার নিয়ে ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ ধরতে নেমে গেছেন সাগরে।

রূপালী ইলিশের ক্রয়-বিক্রয়ের বড় মোকাম হচ্ছে চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাট। এবার ইলিশ মৌসুম ভালো যাচ্ছে না এখানে। সারাদিন ২০/২৫ মণ ইলিশের আমদানি হয়। যেখানে শত শত মণ ইলিশ আসতো এই ঘাটে। এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। ইলিশের দুষ্প্রাপ্যতায় এখনো দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ইলিশের আকার ও পরিমাণ ভেদে প্রতি কেজি ইলিশ ঘাটেই বিক্রি হচ্ছে ৮/৯শ’ টাকা থেকে হাজার-বারোশ’ এবং ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা দরে।

সোমবার সরজমিনে মাছ ঘাটে গিয়ে এমন তথ্য জানা যায়। ছোট-বড় সব আড়তেই ইলিশের শূন্যতা বিরাজ করছে। সকালে যে পরিমাণ মাছ এসেছিলো তা স্থানীয় ছোট পাইকাররা কিনে নেয়। এদিন পুরো ঘাটে ২৫ থেকে ৩০ মণ ইলিশ এসেছে বলে ইলিশ মোকামি মিজান জমাদ্দার জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, এবার সাগরে ৬৫ দিনের অবরোধের সময় বাংলাদেশের জেলেরা মাছ ধরতে পারেনি। কিন্তু ভারতের জেলেরা ঠিকই মাছ ধরে নিয়ে গেছে। তার মতে, আমাদের স্থানীয় নদীতে এমনিতেই ইলিশ ধরা পড়ে কম। সাগর উপকূলীয় জেলেদের আহরিত ইলিশের চাকচিক্যে আমাদের এই ঘাট থাকে সরগরম। এবার সেই ইলিশের দেখা মেলেনি। গত দুটি মাস এখানকার ইলিশ আড়তদারদের ইলিশ ব্যবসার খুবই শোচনীয় অবস্থা যাচ্ছে। ঘাটের বড় ইলিশ অড়তদার বাবুল হাজী জানান, আমাদের চাঁদপুরে ইলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিলো না। নিষেধাজ্ঞা ছিলো সাগরে। জেলেরা মাছ ধরতে সাগরে যেতে পারিনি। এখন নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে, জেলেরা ফিশিং বোট নিয়ে মাছ ধরতে সাগরে গেছে। আশা করি, এখন কাঙ্ক্ষিত ইলিশ আড়তে আসবে।

তিনি বলেন, এবার চাঁদপুরে ইলিশ কম আমদানি হওয়ার কারণ সাগরেই মাছ ছিল না। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা সময়কাল সফল করতে হলে বাংলাদেশ ও ভারত সমন্বয় করে দুই দেশের মধ্যে এই নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখতে হবে। তা না হলে এবারের মতো সামনেও ইলিশের এমন সঙ্কট সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিচালিত গবেষণা মতে, মে মাসের শেষের দিক থেকে জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে বিচরণরত মাছসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর প্রজননকাল। এ কারণেই সাগরের মাছসহ বিভিন্ন মূল্যবান প্রাণিসম্পদ রক্ষার পাশাপাশি ভাণ্ডার বাড়াতে দীর্ঘসময় মাছ আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। এর প্রেক্ষিতে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়।

দীর্ঘদিন বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ আহরণ বন্ধ থাকায় এবার বেশি মাছ পাবেন বলে আশাবাদী জেলেরা। তারা বলছেন, সাগরে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যে কারণে দুমাস ধরে আর্থিক অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে দিন কাটাতে হয়েছে। যার প্রভাব চাঁদপুর ইলিশ অবতরণ কেন্দ্রেও পড়েছে। তারা আরও বলেন, ৬৫ দিনের অবরোধকালীন আমরা সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রাখলেও পাশর্^বর্তী ভারতের জেলেরা আমাদের জলসীমানায় ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। তাই নিষেধাজ্ঞাকালীন ভারতীয় জেলেদের আগ্রাসন রোধেও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

দেশের মৎস্যসম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর সাগরে সব ধরনের মাছ শিকারে ৬৫ দিনের (২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত) নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। ২০১৪ সাল থেকে এ কার্যক্রম চলমান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়