সোমবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০

রাজাকাররা মন্ত্রী হয়েছে দেখে অসন্তুষ্টিতে ভুগেছি
কামরুজ্জামান টুটুল ॥

হাজীগঞ্জের বাকিলা ইউনিয়নের রাধাসার পাঠান বাড়ির মৃত ফজিল উদ্দিন পাঠানের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক। স্ত্রী আর ৬ সন্তান নিয়ে ভালো আছেন। সন্তানরা চাকুরিজীবী ও ব্যবসায়ী, মেয়েরা সবাই গৃহিণী। স্ট্রোকজনিত কারণে যে কোনো কথার ৭০ ভাগ মনে রাখতে পারেন না এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ৭ জনের একটি দলের সাথে কুমিল্লার সোনামুড়া দিয়ে ভারতে ঢুকেন। আসামের নোহারবন ক্যান্টনমেন্টে হায়ার ট্রেনিং করেছেন প্রায় দেড়মাস। সেখান থেকে মেলাঘরে এসে অস্ত্র নিয়ে ৪২ জনের একটি দলের সাথে নির্ভরপুর বর্ডার দিয়ে কুমিল্লার চৌয়ারা পৌঁছেন। চৌয়ারা থেকে পায়ে হেঁটে কুমিল্লার বিজয়পুরের বাঁশপুরের চেয়ারম্যানের বাড়িতে অবস্থান নেন। এরপর পায়ে হেঁটে শাহরাস্তির দোয়াভাঙ্গা হয়ে কচুয়ার রঘুনাপথপুর বাজার দিয়ে হাজীগঞ্জের খিলপাড়া মজুমদার বাড়ির ক্যাম্পে অবস্থান নেন। হাজীগঞ্জের লাকমারা যুদ্ধে অংশ নিয়ে বহু ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন এই মুক্তিযোদ্ধা।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের আয়োজন ‘বিজয়ের মাস ডিসেম্বর : কেমন আছেন মুক্তিযোদ্ধাগণ’ আজকের পর্বে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক পাঠান। তিনি বলেন, যখন দেখেছি রাজাকাররা দেশের পতাকা উড়িয়ে, রাষ্ট্রের গাড়ি আর প্রটোকলে চলেছে তা দেখে বেশ অসন্তুষ্টিতে ভুগেছি। এছাড়াও তিনি যা যা বলেছেন তার একাংশ চাঁদপুর কণ্ঠের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

চাঁদপুর কণ্ঠ : বছর ঘুরে আবার আসলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। আপনার অনুভূতি কেমন?

আবদুর রাজ্জাক পাঠান : দেশ স্বাধীন করেছি, যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছি-এ এক বিশাল প্রাপ্তি, স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে। বিজয়ের মাস আসলেই সেই স্মৃতি মনের মধ্যে এখনো নাড়া দেয়। এ এক বিশাল অনুভূতি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সার্বিকভাবে আপনি কেমন আছেন?

আবদুর রাজ্জাক পাঠান : পারিবারিকভাবে ভালো থাকলেও স্ট্রোকের কারণে মোটেও ভালো নেই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : ৫১ বছর পূর্বের মুক্তিযুদ্ধের কোন্ স্মৃতি আপনার মনে এখনও জ্বলজ্বল করছে?

আবদুর রাজ্জাক পাঠান : ৯ মাসের যুদ্ধের প্রতিদিন কোন না কোন স্মৃতি আছে, কিন্তু বয়সের কারণে তেমন কিছু এখন আর মনে করতে পারছি না। আমাদের দলে আমরা ৯ জন ট্রেনিং করার জন্য ভারতে গেলেও ২ জন ট্রেনিং না করে দেশে চলে আসেন। এটি আমার একটি স্মরণীয় ঘটনা। আরেকটি ঘটনা হলো, চাঁদপুর স্বাধীন ঘোষণা করা হয়েছে সেই আনন্দ উপভোগ করতে ১০ ডিসেম্বর চাঁদপুরে যাই। সেখানে বড় স্টেশনে গিয়ে দেখি পাকবাহিনী ভর্তি একটি জাহাজ চাঁদপুরের ঘাট ছাড়ছে। কিছু দূর যাওয়ার পর সেই পাকবাহিনীর জাহাজ থেকে তীরের দিকে প্রচুর গুলি ছোড়া হয়। এরপরে মিত্রবাহিনীর দুটি জেট বিমান পূর্ব দিক থেকে উড়ে এসে সেই জাহাজে বোমবিংয়ের করণে জাহাজটি ডুবে যায়।

চাঁদপুর কণ্ঠ : অনেক রক্তে অর্জিত প্রিয় স্বাধীন দেশের বর্তমান অবস্থায় আপনি কতোটুকু সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট?

আবদুর রাজ্জাক পাঠান : স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী শেখ মুজিবের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায়, তা দেখে আমি সন্তুষ্ট। আর যখন দেখি স্বাধীনতা বিরোধী কিংবা পরাজিত শক্তি মাথাচাড়া দিচ্ছে তখন অসন্তুষ্টিতে ভুগি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাতেই মানুষের জন্ম/মৃত্যু। মাফ করবেন, তবুও জানার ইচ্ছা, আপনি আর কতোদিন বাঁচতে চান?

আবদুর রাজ্জাক পাঠান : কতোদিন বাঁচি তার নির্ধারক আল্লাহ। তবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত স্বাধীনতার পক্ষের দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকবে সেটা দেখার ইচ্ছা আছে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বর্তমান বা পরবর্তী প্রজন্মের উদ্দেশ্যে আপনি কী কথা রেখে যেতে চান?

আবদুর রাজ্জাক পাঠান : অনেক কষ্টে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। সেই স্বাধীন দেশে সবসময় স্বাধীনতার সপক্ষের দল যাতে রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে পারে-সেইটা বলবো পরবর্তী প্রজন্মকে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়