শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালি জাতির স্বপ্ন-সাধ পূরণ হয় এ মাসে
স্টাফ রিপোর্টার ॥

বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ মালেক দেওয়ান। বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচন্ডী ইউনিয়নের আনন্দবাজার গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মৃত হাজী মোঃ জিন্নত আলী দেওয়ান। তাঁর মামাতো ভাই বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ করদাতা ও সমাজসেবক দানবীর হাজী মোঃ কাউছ মিয়া।

মালেক দেওয়ান ২ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। দুই ছেলের একজন প্রবাসে থাকেন, আরেকজন ঢাকায় টেইলার মাস্টার। স্ত্রী জোছনা বেগম তরপুরচন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের পর তৎকালীন মহকুমা ছাত্রলীগের সেক্রেটারী সৈয়দ আবেদ মুনছুরের নেতৃত্বে নোয়াখালীর ছাগলনাইয়া হয়ে আগরতলা লোহাগড় আটরশি থানায় উপস্থিত হন। সেখানে হানাদারবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার জন্য এক মাস ট্রেনিং গ্রহণ করেন। ওইখান থেকে কুমিল্লা বিবিরবাজার হয়ে হাজীগঞ্জ থানার বাকিলা রাজারগাঁও ক্যাম্পে যোগ দেন। সেখানে বিএলএফ মুজিববাহিনীতে আরো ১৫ দিন ট্রেনিং নেন এবং মুক্তিযুদ্ধ করেন। তখন চাঁদপুর সরকারি কলেজে ইন্টারমিডিয়েট ২য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। বর্তমানে তাঁর বয়স ৭২ বছর।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের আয়োজন ‘বিজয়ের মাস ডিসেম্বর : কেমন আছেন মুক্তিযোদ্ধাগণ’ আজকের পর্বে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। বর্তমান বা পরবর্তী প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগামী প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ধ্যান-ধারণা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করবে এবং দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে।

তাঁর কথাগুলো চাঁদপুর কণ্ঠের পাঠকদের জন্যে নিচে তুলে ধরা হলো :

চাঁদপুর কণ্ঠ : বছর ঘুরে আবার আসলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। আপনার অনুভূতি কেমন?

আঃ মালেক দেওয়ান : বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বপ্ন-সাধ পূরণ হয় এই মাসে। বছর ঘুরে এই দিনটি এলে যুদ্ধের সেই স্মৃতি মনে পড়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় আসে এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর। আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বে পরিচয় লাভ করি। আর অর্জন করি নিজস্ব ভূখণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত জাতীয় পতাকা।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সার্বিকভাবে আপনি কেমন আছেন?

আঃ মালেক দেওয়ান : আল্লাহর রহমতে সুস্থ আছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : ৫২ বছর পূর্বের মুক্তিযুদ্ধের কোন্ স্মৃতি আপনার মনে এখনও জ্বলজ্বল করছে?

আঃ মালেক দেওয়ান : ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনী যখন নৌ-পথে বরিশাল থেকে চাঁদপুর হয়ে ঢাকা যাচ্ছিলো, তখন মিত্রবাহিনীসহ আমরা মুক্তিযোদ্ধারা তাদেরকে প্রতিহত করে লঞ্চ ডুবিয়ে দিই। অনেক পাকিস্তানি সৈন্য মৃত্যুবরণ করে। বাকি সৈন্যরা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। কেবল থ্রিনট রাইফেল ও গ্রেনেড নিয়ে তাদের আক্রমণ করা হয়।

চাঁদপুর কণ্ঠ : অনেক রক্তে অর্জিত প্রিয় স্বাধীন দেশের বর্তমান অবস্থায় আপনি কতোটুকু সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট?

আঃ মালেক দেওয়ান : বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বিশ্বে দেশের সম্মান মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছেন। তাতে আমরা খুশি এবং সন্তুষ্ট।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাতেই মানুষের জন্ম/মৃত্যু। মাফ করবেন, তবুও জানার ইচ্ছা, আপনি আর কতোদিন বাঁচতে চান?

আঃ মালেক দেওয়ান : আল্লাহ তাঁর মেহেরবানীতে যতদিন বাঁচিয়ে রাখেন।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বর্তমান বা পরবর্তী প্রজন্মের উদ্দেশ্যে আপনি কী কথা রেখে যেতে চান?

আঃ মালেক দেওয়ান : নতুন প্রজন্মের মধ্যে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবোধ থাকতে হবে। তারা মুক্তিযুদ্ধের ধ্যান, ধারণা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করবে এবং দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাহলে মরেও আমাদের আত্মা শান্তি পাবে।

উল্লেখ্য, আঃ মালেক দেওয়ান বর্তমানে রাজনীতির সাথে যুক্ত এবং চাঁদপুর জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়