প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর সদর, হাইমচর ও মতলবের বিশটি দুর্গম চরাঞ্চলের অধিবাসীরা বরাবরই অবহেলিত হয়ে আসছে। লক্ষাধিক মানুষের বসবাস এসব চরে। দুর্গম এসব চরের মানুষ যাতে দ্রুত ও সহজে চিকিৎসাসেবা নিতে পারে, সেজন্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে আসেন। ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর তিনি অত্যাধুনিক একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির অনুরোধে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স চাঁদপুরে পাঠানো হয়। কিন্তু এই অ্যাম্বুলেন্সটি চালাতে যে একজন চালক ও তার জন্যে জ্বালানি তেল প্রয়োজন সেটি গত চারবছরেও পূরণ করা হয়নি অর্থাৎ চালক নিয়োগ ও বরাদ্দ মিলেনি। এ নিয়ে স্থানীয় সংশ্লিষ্ট বিভাগ অনেকবার কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি চালাচালিও করেছে। তাছাড়া যাদের সুবিধার জন্যে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স দেয়া দেয়া হয়েছে, সেই চরাঞ্চলবাসীও তার সম্পর্কে জানেন না।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্সটি বর্তমানে কবি নজরুল সড়কস্থ মুখার্জি ঘাটে ডাকাতিয়া নদীর তীরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকার কারণে অ্যাম্বুলেন্সটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে-বৃষ্টিতে এর গ্লাস ভেঙ্গে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে ব্যাটারি। যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে গেছে। শ্রীহীন হয়ে এখন অনেকটা ব্যবহার অনুপযোগী তথা বিকল হয়ে আছে এটি।
এর আগে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে আবেদন করে নতুন করে মেরামত করার জন্যে ঢাকা পাঠানো হয়। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামত করে চাঁদপুরে নিয়ে আসা হয়। এরপর দীর্ঘদিন এটি অলস পড়ে থাকায় আবারও এটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী হযরত আলী বেপারী বলেন, যারা চরে বসবাস করে তারা সকলেই ভীতির মধ্যে থাকে। দেখা যায়, ইঞ্জিনচালিত নৌকা বা ট্রলারে করে হাসপাতালে রোগী নিতে নিতে অনেক সময় মারা যায়। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার নৌ-অ্যাম্বুলেন্স সম্পর্কে তিনি বলেন, এখানকার মানুষ জানেই না যে তাদের জন্যে সরকার অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছেন। কখনও দেখিনি চরে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স এসেেেছ।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ বেলায়েত হোসেন বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর প্রচেষ্টায় চাঁদপুরে একটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স আনা হয়। আমরা চালক-নিয়োগ জটিলতার কারণে অ্যাম্বুলেন্সটির কার্যক্রম শুরু করতে পারিনি। এজন্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদা দেয়া হয়েছে। ড্রাইভার নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। সহসাই নিয়োগ হয়ে যাবে বলে জানান। তিনি আরো বলেন, নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি যাতে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের কাজেও ব্যবহার করা যায় তার ব্যবস্থাও করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০০৮ সালে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো নৌ আ্যাম্বুলেন্সটি একমাত্র চালকের অভাবেই দীর্ঘ ১৬ বছরেও চালু হয়নি। সেটি পুরোদমে নষ্ট হয়ে একরকম ধ্বংস হয়ে গেছে।