শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০

শেখের বেটি মূল্যায়ন করেছে
কামরুজ্জামান টুটুল ॥

মোঃ মোতাহের হোসেন মন্টু। হাজীগঞ্জের লোধপাড়া গ্রামের প্রধানীয়া বাড়ির বাসিন্দা। ১৯৭১ সালে যুদ্ধক্ষেত্রে দুই ভাইকে হারিয়েছেন। ৬ সন্তানের জনক মোঃ মোতাহের হোসেন মন্টু ১৯৭১ সালে আষাঢ় মাসে নৌকাতে করে কুমিল্লার সালদা নদী পাড় হয়ে ভারতে পাড়ি জমান ট্রেনিং করার জন্যে। ২২ দিন ভারতের আসামের অম্পিনগরের ক্যাম্পে ট্রেনিং করে ত্রিপুরার মেলাঘর হতে অস্ত্র নিয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম দিয়ে দেশে ঢুকেন। চৌদ্দগ্রাম থেকে পায়ে হেঁটে নাসিরকোটে আসেন।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের আয়োজন ‘বিজয়ের মাস ডিসেম্বর : কেমন আছেন মুক্তিযোদ্ধাগণ’ আজকের পর্বে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোতাহার হোসেন মন্টু। শেখের বেটি মুক্তিযোদ্ধাগণের মূল্যায়ন করেছেন বলে জানান তিনি। তাঁর কথাগুলো পাঠকদের জন্যে নিচে তুলে ধরা হলো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বছর ঘুরে আবার আসলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। আপনার অনুভূতি কেমন?

মোতাহার হোসেন : বিজয়ের মাস আসলেই যুদ্ধের বহু স্মৃতি মনে পড়ে। বিশেষ করে, বছর ঘুরে এ মাসটি আসলে মুক্তিযোদ্ধাগণকে শেখের বেটি যেভাবে মূল্যায়ন করে তা ভাবতেই ভিন্ন এক অনুভূতি মনে জন্মায়।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সার্বিকভাবে আপনি কেমন আছেন?

মোতাহার হোসেন : সার্বিকভাবে ভালো নেই। তবে আল্লাহ যেভাবে রেখেছেন ভালো আছি। এ বয়সে এতোটুকু ভালো আছি শোকরিয়া।

চাঁদপুর কণ্ঠ : ৫২ বছর পূর্বের মুক্তিযুদ্ধের কোন্ স্মৃতি আপনার মনে এখনও জ্বলজ্বল করছে?

মোতাহার হোসেন : ১৯৭১ যুদ্ধমাঠের স্মৃতির মধ্যে সবচে বেশি যেটি মনে পড়ে, সেটি হলো আমার চোখের সামনে আমার দুই ভাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মরে যাওয়ার স্মৃতি। সেই সময় আমরা মুক্তিবাহিনীর একটি দল বাকিলা ইউনিয়নের বাখরপাড়া গ্রামে অবস্থান করছিলাম। হঠাৎ করে খবর আসলো পাশের গ্রাম সাতবাড়িভাঙ্গাতে পাক বাহিনী ঢুকেছে। তখন আমরা মুক্তিবাহিনীরা এক হয়ে সাতবাড়িভাঙ্গা পৌঁছে পাক বাহিনীর সাথে সরাসরি যুদ্ধ শুরু করি। এক পর্যায়ে পাক বাহিনী পিছু হটে নাসিরকোটের পাশের মুকুন্দসার গ্রামের দিকে চলে যায়। সেখানে আমরা ফের তাদেরকে আক্রমণ করলে তারাও আক্রমণ করে। তাদের গুলিতে আমার দুই ভাই জয়নাল আবেদিন ও আবু তাহের শহিদ হন। এরপরের দিন হানাদার বাহিনী আমাদের কাছে সারেন্ডার না করে ভারতীয় বাহিনীর কাছে সারেন্ডার করে। আমার সেই ভাইদের লাশ বর্তমানে নাসিরকোটে সমাহিত করা আছে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : অনেক রক্তে অর্জিত প্রিয় স্বাধীন দেশের বর্তমান অবস্থায় আপনি কতোটুকু সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট?

মোতাহার হোসেন : বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশ রক্ষার জন্যে মাত্র ৯ম শ্রেণিতে থাকতে ভারতে যাই ট্রেনিং করতে। ট্রেনিং শেষ করে নিজ এলাকায় এসে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। সেই স্বাধীন দেশের উন্নয়ন বহু আগে হওয়ার দরকার ছিলো। ১৯৭৫-এর পর কোনো সরকার দেশে উন্নয়ন করেনি। শেখের বেটি যেভাবে দেশের উন্নয়ন করেছেন, তা দেখলে নিজের কাছে নিজে আনন্দ পাই। এমন দেশ দেখার জন্যে দেশ স্বাধীন করেছি, এসব দেখলে অবশ্যই সন্তুষ্টিতে ভুগি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাতেই মানুষের জন্ম/মৃত্যু। মাফ করবেন, তবুও জানার ইচ্ছা, আপনি আর কতোদিন বাঁচতে চান?

মোতাহার হোসেন : এ বিষয়টি আমি রাব্বুল আলামিনের উপর ছেড়ে দিছি। উনি যেদিন ডাক দিবেন সেদিন চলে যাবো।

চাঁদপুর কণ্ঠ: বর্তমান বা পরবর্তী প্রজন্মের উদ্দেশ্যে আপনি কী কথা রেখে যেতে চান?

মোতাহার হোসেন : দেশের উন্নয়ন ধরে রাখতে হবে, বিশ্বের দরবারে দেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাতে হবে, সে লক্ষ্যে আমাদের প্রজন্মকে কাজ করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়