শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০

আমারও অধিকার রয়েছে, তাই প্রার্থী হয়েছি
গোলাম মোস্তফা ॥

সাবেক ছাত্র নেতা, স্পেন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম খান (নয়ন) বলেছেন, অবশ্যই আমি আসন্ন পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী। কারণ আমার জন্ম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে লালন করা পরিবারে। আমার বাবা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অন্যতম। আমি আমার গর্বিত পিতার সন্তান হিসেবে ছাত্রজীবন থেকে এ দলের রাজনীতি করে নির্যাতন-নিপীড়ন, মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। আমার বাসায় একাধিকবার হামলা হয়েছে। আমাকে কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। একবার হামলা করে আমাকে আহত করে মৃত্যু হয়েছে এমনটি ভেবে রাস্তায় ফেলে রেখে গেছে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমাকে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ হাসপাতালে দেখতে গিয়েছেন,যা স্থানীয় গণমাধ্যমে সাক্ষী রয়েছে। অতএব আমারও অধিকার রয়েছে। তাই প্রার্থী হয়েছি।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে ভাবনায় তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। প্রশ্নোত্তর আকারে তার ভাবনা নি¤েœ তুলে ধরা হলো :

চাঁদপুর কণ্ঠ : আগামী ১০ ডিসেম্বর চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন এবং তার পূর্বে বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর ইউনিটের সম্মেলন। আপনার প্রতিক্রয়া কী?

জহিরুল ইসলাম : আমরা যারা তৃণমূলের কর্মী রয়েছি, আমরা এই সম্মেলনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই এবং সম্মেলনের সফলতা কামনা করছি। আমি মনে করি এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে। দীর্ঘদিন পর হলেও আমাদের নেতাদের মনে শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে বলে আমি মনে করি। আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো, এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তৃণমূল থেকে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে। তবে হ্যাঁ, এমন নেতৃত্ব চাই না, যারা অন্য দল থেকে এসে এই দলে নেতৃত্ব দিবেন। এমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছি না।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি সম্মেলনের মাধ্যমে কেমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করেন?

জহিরুল ইসলাম : আমি পূর্বে একটি কথা বলেছি, তারপরও বলতে চাই, আমাদের সকলকে স্মরণ রাখতে হবে, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন আমাদের জন্যে অনেক গুরুত্ব বহন করে। তাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে লালন করে যারা প্রকৃত এবং পারিবারিক ও জন্মসূত্রে আওয়ামী লীগের আদর্শকে লালন করে তাদেরকে নেতৃত্বে আনতে হবে। এখানে ভাই বা বোন লীগের নেতৃত্ব দিয়ে রাজনীতি হবে না।

রাজনীতি করতে এসে অবশ্যই যারা সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের সাথে মিলেমিশে সুখণ্ডদুঃখে পাশে থাকবে তারাই নেতা হওয়ার যোগ্যতা রাখে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি নিজে কি কোনো পদপ্রার্থী?

জহিরুল ইসলাম : হ্যাঁ, অবশ্যই আমি আসন্ন পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে একজন প্রার্থী। কারণ আমার জন্ম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে লালন করা পরিবারে। আমার বাবা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অন্যতম। আমি আমার গর্বিত পিতার সন্তান হিসেবে ছাত্রজীবন থেকে এ দলের রাজনীতি করে নির্যাতন-নিপীড়ন, মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। আমার বাসায় একাধিকবার হামলা হয়েছে। আমাকে কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। একবার হামলা করে আমাকে আহত করে মৃত্যু হয়েছে এমনটি ভেবে রাস্তায় ফেলে রেখে গেছে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমাকে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ হাসপাতালে দেখতে গিয়েছেন। যা স্থানীয় গণমাধ্যম সাক্ষী রয়েছে। অতএব আমারও অধিকার রয়েছে, তাই প্রার্থী হয়েছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ-গ্যাস সঙ্কট, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিসহ আরো কিছু কারণে বিএনপির যে ধারাবাহিক আন্দোলন, তাতে আপনারা কতোটুকু উদ্বিগ্ন?

জহিরুল ইসলাম : এদের নিয়ে কথা বলতে রাজি না, কারণ যে দলের প্রধান এতিমদের অর্থ আত্মসাৎ করে, যার ছেলে জনগণকে বিদ্যুৎ দেওয়ার নাম করে খাম্বার টাকা আত্মসাৎ করে-এরা এদেশের জনগণের পক্ষে কী কাজ করবে?

যারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিরোধিতাকারীদের বাঁচাতে আন্দোলন করে, এদের নিয়ে আমরা ভাববো, ভাববে জনগণ। বিএনপির আন্দোলনে এদেশের জনগণের সমর্থন নেই। জনগণ এখন সচেতন, অতএব জনগণ জানে তাদের আন্দোলনের মূল ইস্যু হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের রক্ষা ও তাদের সম্পদ রক্ষা। এই আন্দোলন নিয়ে আমরা চিন্তা করছি না।

চাঁদপুর কণ্ঠ : এ আন্দোলন সাংগঠনিকভাবে কিংবা অন্য কী উপায়ে মোকাবেলা করা যায় বলে আপনি মনে করেন?

জহিরুল ইসলাম : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এমন একটি রাজনৈতিক সংগঠন, যারা আন্দোলনেও সেরা, সরকারেও শ্রেষ্ঠ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের কর্মীদের মধ্যে বা আওয়ামী লীগে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা রয়েছে বা থাকতে পারে, কিন্তু আওয়ামী লীগের সকল স্তরের নেতা-কর্মীরা এক ও ঐক্যবদ্ধ। অতএব এই আন্দোলন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে মোকাবিলা করবো। ইনশাআল্লাহ।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি কি এমন মানসিক আস্থা পোষণ করেন যে, বিদ্যমান সমস্যা বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি, অর্থনৈতিক সঙ্কট, সম্ভাব্য বৈশ্বিক মন্দা তথা নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ স্বীয় জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে পারবে?

জহিরুল ইসলাম : অবশ্যই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৪র্থবারের মতো সরকার গঠন করবে ইনশাআল্লাহ। আমি সারাদেশের কথা বলবো, অভূতপূর্ব উন্নয়নের কথা বলবো না। আমি শুধু চাঁদপুরের কথা বলতে চাই, চাঁদপুর-হাইমচরবাসীর দীর্ঘদিন যাবৎ মেঘনা নদীর ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষায় নদীতে বাঁধ দেয়ায় আজ এতো বছর যাবত ভাঙ্গন থেকে মুক্ত। দক্ষিণাঞ্চলের জনগণের সারাদেশের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থায় চাঁদপুর-শরীয়তপুর সেতুর নির্মাণ কাজ শীঘ্রই শুরু হবে।

তাছাড়া আমাদের নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, এ আসনের বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি চাঁদপুরবাসীর উন্নয়নে এমন কোনো সেক্টর নেই যেখানে উন্নয়ন করেন নি। তাহলে এই চাঁদপুরে আগামী নির্বাচনে নৌকার মাঝি যে বা যিনি হোন না কেনো, আমার মনে হয় চাঁদপুরের জনগণ নৌকা প্রতীকের বাইরে অন্য কোনো প্রতীকে রায় দিবে না ইনশাআল্লাহ। এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা থেকে বলছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : উপরোক্ত প্রশ্নমালার বাইরে আপনার অন্য কোনো বক্তব্য থাকলে উপস্থাপন করতে পারেন।

জহিরুল ইসলাম : দেখুন, আমি ও আমার পুরো পরিবারের সকল সদস্য অর্থাৎ আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে সেদিন মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আমি গর্ববোধ করি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে। আমার পরিবারের বাবা থেকে শুরু করে আমরা সবাই এই দলের কোনো না কোনো অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ইউনিটের দায়িত্ব পালন করেছি। এমন একজন সদস্য নেই যারা আওয়ামী পরিবারের বাইরে রয়েছে। আমরা সকল ভাই ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছি। শুধু তাই নয়, আমাদের একমাত্র বোন ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলো। সর্বোপরি কথা হলো, আমার ও আমার পরিবারের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কী অবদান রয়েছে তা শুধু আওয়ামী পরিবারই নয়, এই শহরবাসীর জানা। তাই আমি আমার দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের নিকট আকুল আবেদন করছি, সকল কিছু বিবেচনা করে আমাকে চাঁদপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত করবেন। এটা আমার প্রত্যাশাও।

উল্লেখ্য, জহিরুল ইসলাম খান নয়ন তার পরিবারের মতোই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে লালন করে ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির আদর্শকে অনুসরণ করে এ দলের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।

ছাত্রজীবনে ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল চাঁদপুর পৌর শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক, চাঁদপুর সরকারি কলেজ শাখার একই সংগঠনের আহ্বায়ক, চাঁদপুর পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। নব্বই দশকের শেষে জীবন-জীবিকার তাগিদে স্পেন প্রবাসী হয়ে সেখানেও প্রবাসীদের নিয়ে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে কাজ করেন। এক পর্যায়ে স্পেন আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব, যুগ্ম আহ্বায়ক ও পরবর্তীতে স্পেন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি ২০০৮ সালের তৎকালীন সময়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে প্রবাসীদের সুসংগঠিত করে গড়ে তোলেন শেখ হাসিনা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ স্পেন শাখা। এটির আহ্বায়ক হিসেবে তিনি নেতৃত্ব দেন। তিনি স্পেনসহ বাংলাদেশ কমিউনিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও স্পেন বাংলাদেশ ব্যবসায়ী বণিক সমিতির সভাপতি, স্পেন সর্বদলীয় (আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন) সভাপতি হিসেবে ২০১৫ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি বর্তমানে ১২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা চাঁদপুর জেলা শাখার উপদেষ্টা, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চাঁদপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি। এছাড়াও তিনি চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর খান বাড়ি জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক, আলহামদুলিল্লাহ মনোয়ারা মাদ্রাসা ও এতিমখানার সভাপতি এবং চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির আজীবন সদস্য।

তিনি ছাত্র রাজনীতি করাকালীন বেশ ক’বার চাঁদপুর শহরের মাদ্রাসা রোডস্থ তার বাসা-বাড়িতে বিএনপি-জামাত হামলা করলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়