প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০
সাবেক ছাত্রনেতা, চাঁদপুর জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেছেন, আমি ছাত্রজীবন থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের কর্মী হিসেবে এই দলের রাজনীতি করছি। তৃণমূলের একজন কর্মী হিসেবে অবশ্যই দলকে নেতৃত্ব দেয়ার ইচ্ছে আমার রয়েছে। সে অনুযায়ী আমি চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী। দল আমাকে আমার বিগত দিনের কর্মকাণ্ড বিবেচনা করে এই পদে দায়িত্ব প্রদান করবেন বলে আমার বিশ্বাস।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে ভাবনায় তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। প্রশ্নোত্তর আকারে নি¤েœ তার পূর্ণাঙ্গ ভাবনা তুলে ধরা হলো-
চাঁদপুর কণ্ঠ : আগামী ১০ ডিসেম্বর চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন এবং তার পূর্বে বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর ইউনিটের সম্মেলন। আপনার প্রতিক্রয়া কী?
মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার : দীর্ঘ ২৪ বছর পর চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত ও আনন্দিত। আমি মনে করি, এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব বেরিয়ে আসলে দলের জন্য সবচেয়ে উপকার হবে। কারণ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই সম্মেলন অনেক গুরুত্ব বহন করে। শুধু তাই নয়, এই নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। তাই আমরা যারা তৃণমূলের কর্মী রয়েছি, আমরা এই সম্মেলনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই এবং সম্মেলনের সফলতা কামনা করছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি সম্মেলনের মাধ্যমে কেমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করেন?
মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার : তৃণমূল থেকে এ দলের রাজনীতি করায় আজকে দলের একজন কর্মী হিসেবে আমাকে সবাই চিনে জানে। আমি মনে করি, নেতা তিনিই হবেন যিনি কর্মীদের সুখণ্ডদুঃখে পাশে থাকার যোগ্যতা রাখেন। তাছাড়া সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দলের দুঃসময়ে যারা দলের জন্য কাজ করেছেন, দলের এবং ব্যক্তিগত স্বার্থকে বাদ দিয়ে দল ও নেতা-কর্মীদের স্বার্থে কাজ করবেন, এমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি নিজে কি কোনো পদপ্রার্থী?
মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার : আমি ছাত্রজীবন থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের কর্মী হিসেবে এই দলের রাজনীতি করছি। তৃণমূলের একজন কর্মী হিসেবে অবশ্যই দলকে নেতৃত্ব দেয়ার ইচ্ছে আমার রয়েছে। সে অনুযায়ী আমি চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী। দল আমাকে আমার বিগত দিনের কর্মকাণ্ড বিবেচনা করে এই পদে দায়িত্ব প্রদান করবেন বলে আমার বিশ্বাস।
চাঁদপুর কণ্ঠ : দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ-গ্যাস সঙ্কট, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি সহ আরো কিছু কারণে বিএনপির যে ধারাবাহিক আন্দোলন, তাতে আপনারা কতোটুকু উদ্বিগ্ন?
মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার : বিরোধী দলের কাজ বিরোধিতা করা। বিএনপি এদেশের একটি রাজনৈতিক দল, কিন্তু এদের রাজনীতি এখন নিজেদের স্বার্থের রাজনীতি। সারা বিশ্বে যখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে উন্নত বিশ্বে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে সরকার প্রধানগণ হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানে আমি মনে করি আমাদের দেশ অনেক ভালো চলছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও জনগণের স্বার্থে ভর্তুকি দিয়ে সাধারণ মানুষকে দ্রব্যমূল্য সহনশীল পর্যায়ে এনে দিয়েছেন। আর এসব বিষয় নিয়ে এদেশের জনগণ সচেতন। অতএব বিএনপির এই আন্দোলন নিয়ে আমরা চিন্তা করার কোনো সুযোগ নেই।
চাঁদপুর কণ্ঠ : এ আন্দোলন সাংগঠনিকভাবে কিংবা অন্য কী উপায়ে মোকাবেলা করা যায় বলে আপনি মনে করেন?
মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার : ইতিমধ্যে আমাদের দল এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোকে ঢেলে সাজানোর যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, এর মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করে আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নেমে বিএনপির এই আন্দোলনকে মোকাবেলা করবো ইনশাআল্লাহ।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি কি এমন মানসিক আস্থা পোষণ করেন যে, বিদ্যমান সমস্যা বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি, অর্থনৈতিক সঙ্কট, সম্ভাব্য বৈশ্বিক মন্দা তথা নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ স্বীয় জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে পারবে?
মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার : আমি অবশ্যই আশাবাদী, এদেশের জনগণের জন্য আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশকে যেভাবে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, এদেশের জনগণ অবশ্যই পুনরায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন করবেন।
চাঁদপুর কণ্ঠ : উপরোক্ত প্রশ্নমালার বাইরে আপনার অন্য কোনো বক্তব্য থাকলে উপস্থাপন করতে পারেন।
মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার : আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে গিয়ে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। তৃণমূল থেকে জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি, অনেক কষ্ট করে দলের সকল ইউনিটকে শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করেছি। অথচ ২০১৩ সালে জেলা যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি করা হলেও আমাকে উক্ত কমিটিতে সদস্য রাখা হয়নি, যা দুঃখজনক।
তাছাড়া বর্তমানে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করার যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তা আরো পূর্বে হলে বিগত দু’যুগে অন্তত আরো বেশ কিছু নেতৃত্বের সৃষ্টি হতো। আমার আশাবাদ থাকবে, দল এই ধারা অব্যাহত রাখবে।
উল্লেখ্য, মোঃ হারুন অর রশিদ হাওলাদার পারিবারিক সূত্রে আওয়ামী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত চাঁদপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত একই সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক, ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত জেলা যুবলীগের সদস্য, ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত জেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ’৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে বেশ ক’বার হামলার শিকার হন এবং বেশ ক’টি মামলার শিকার হন। তিনি ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আহত হন। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানে জড়িত। তন্মধ্যে তিনি শিলন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, আদর্শ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল গভর্নিংবডির দাতা সদস্য। তিনি বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি বাহের খলিশাডুলী কারিমিয়া রজবিয়া জামে মসজিদের সভাপতি, মঠখোলা বাজার শাহী মসজিদের সাধারণ সম্পাদক, বামাস চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি, মঠখোলা উদয়ন ক্রীড়া চক্রের সভাপতি ও বিডি কারেন্ট নিউজ ২৪ ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।