শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০

ফরিদগঞ্জে মুজিবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেলেন এক স্বাধীনতা বিরোধী
ফরিদগঞ্জ ব্যুরো ॥

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে পর্যায়ক্রমে সারাদেশে অসহায় ও ভূমিহীনদের মাঝে ঘর বিতরণ করা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ঘর প্রদান করা হয়। কিন্তু মহান স্বাধীনতা বিরোধীদের একজন ফরিদগঞ্জে একটি ঘর পেয়েছে। এ নিয়ে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধারা।

এ ব্যাপারে ঘরপ্রাপ্ত শহিদ উল্যা বলেন, ১৯৭১ সালে আমাকে কিছু মুক্তিবাহিনী এসে ধরে নিয়ে যায়। আমি কিছু বুঝতে পারিনি। পরে বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমায় আমি ছাড়া পাই।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মুজিব শতবর্ষে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘর তৈরি করা হয়। এর মধ্যে উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের বাগড়া বাজারে ৭টি এবং রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে ৪টি ঘর তৈরি করা হয়। ইতোমধ্যেই সেগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু গত ক’দিন পূর্বে হঠাৎ করেই ওই ঘরগুলোর মধ্যে সাহেবগঞ্জ গ্রামের ২য় ঘরটির মালিক শহিদ উল্যা স্বাধীনতা বিরোধী বলে প্রকাশ পায়।

ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের হর্ণি দুর্গাপুর গ্রামের মৃত নূরুল হক বেপারীর ছেলে শহিদ উল্যা ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন সময় পকিস্তান হানাদার বাহিনীর পক্ষে কাজ করেছেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত করে তাকে আটক করে কুমিল্লা জেলে পাঠায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাধারণ ক্ষমার আওতায় শহিদ উল্যা কুমিল্লা জেল থেকে ছাড়া পান।

এদিকে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ২০২১ সালে সরকার অসহায় ও গৃহহীনদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ঘর দেয়ার সিদ্ধান্তের আলোকে ফরিদগঞ্জে দ্বিতীয় ধাপে তৈরিকৃত ঘরের মধ্যে সাহেবগঞ্জ গ্রামের ২য় ঘরটি শহিদ উল্যা পেয়ে যান। মুজিববর্ষের ঘর রাজাকারের হাতে এই তথ্য এতোদিন গোপন থাকলেও সম্প্রতি তা প্রকাশ হয়ে পড়ে।

ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের সাবেক দুই ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম ও হারুন অর রশিদ বলেন, আমাদের জানা মতে শহিদ উল্যা একজন রাজাকার। সে যুদ্ধকালীন সময় পাকিস্তানি বাহিনীদের পক্ষে কাজ করেছে। সেজন্যে সে জেল পর্যন্ত খেটেছে।

একই গ্রামের দুই মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ও হাসান পাটওয়ারী বলেন, আমরা দেশের স্বাধীনতার জন্যে কাজ করেছি। কিছু রাজাকার ছিলো মুক্তিবাহিনী কী করে, কোথায় থাকে, তার খোঁজ-খবর নিয়ে পাকিস্তানীদের কাছে বলা। শহীদ উল্যা সেই রাজাকারদের একজন। সে পাকিস্তানীদের পক্ষে কাজ করেছে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার শহিদ উল্যা তপদার বলেন, আমরা দেশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছি। আর রাজাকাররা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করেছে। যারা পাকিস্তানিদের পক্ষে কাজ করেছে তারা কী ভাবে ঘর পায় আমি জানি না। এটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা জানেন। তারাই তালিকা করে ঘর দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমুন নেছাকে টেক্সট করলে তিনি জানান, ওই সময়ে তিনি ছিলেন না। তাই বিষয়টি জেনে জানাবেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়