শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০

আমি চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী
গোলাম মোস্তফা ॥

এককালের তুখোড় ছাত্রনেতা, চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ বারের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলহাজ্ব মোঃ বেলায়েত হোসেন বিল্লাল গাজী বলেছেন, দীর্ঘদিন যাবৎ এই দলের রাজনীতি করছি। ফলে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব আমাকে সাংগঠনিক কোনো দায়িত্ব দিলে আমি তা পালনে প্রস্তুত রয়েছি।

আসন্ন চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আমি সভাপতি পদে একজন প্রার্থী। দলের তৃণমূল কর্মীদের চাহিদার কারণে আমি প্রার্থী হয়েছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি বিশাল রাজনৈতিক দল, এই দলের ঐক্যের স্বার্থে বা নেতৃত্বের প্রশ্নে আমাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিলেও তা পালনে আমার কোনো আপত্তি নেই।

তিনি আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে ভাবনায় দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠকে দেয়া তার সাক্ষাৎকারে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। তার পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকার নি¤েœ তুলে ধরা হলো-

চাঁদপুর কণ্ঠ : আগামী ১০ ডিসেম্বর চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন এবং তার পূর্বে বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর ইউনিটের সম্মেলন। আপনার প্রতিক্রয়া কী?

মোঃ বেলায়েত হোসেন বিল্লাল গাজী : আমাদের নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশ মতে কেন্দ্রীয় কমিটির এই সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই। দীর্ঘদিন যাবৎ চাঁদপুর পৌর ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন না হওয়ায় এ দুটি ইউনিটের কার্যক্রম প্রায় স্থবিরতার পর্যায়ে চলে গিয়েছিল।

সম্মেলন না হওয়ায় দীর্ঘদিন যাবৎ কর্মমুখী নেতৃত্ব সৃষ্টি হয়নি। আমি মনে করি, দিনক্ষণ ঠিক রেখে যদি সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্ব ঠিক করে আনা যায় তাহলে দীর্ঘদিন দিন পর হলেও সংগঠনে সক্রিয়তা আসবে। না হয় সংগঠনের স্থবিরতা আবার আসবে। আমি মনে করি, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত ও আনন্দিত। তাই এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি সম্মেলনের মাধ্যমে কেমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করেন?

মোঃ বেলায়েত হোসেন বিল্লাল গাজী : আমার মতে, বর্তমানে বিরোধী দল আন্দোলনের নামে যে উগ্রপন্থী রাজনীতি করছে, দেশকে অস্থিতিশীল করছে, এই রাজনীতির সমুচিত জবাব দেয়ার জন্য এবং এই অপরাজনীতিকে প্রতিহত করার জন্য দূরদর্শী, বিচক্ষণ, অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মেধাবী নেতৃত্বের প্রয়োজন। তবে তিনি তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে এসেছেন, দলে তার শ্রম রয়েছে এবং কোনো হাইব্রিড নয়-সেটি হতে হবে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি নিজে কি কোনো পদপ্রার্থী?

মোঃ বেলায়েত হোসেন বিল্লাল গাজী : দীর্ঘদিন যাবৎ এই দলের রাজনীতি করছি। ফলে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব আমাকে সাংগঠনিক কোনো দায়িত্ব দিলে আমি তা পালনে প্রস্তুত রয়েছি।

আসন্ন চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আমি সভাপতি পদে একজন প্রার্থী। দলের তৃণমূল কর্মীদের চাহিদার কারণে আমি প্রার্থী হয়েছি।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি বিশাল রাজনৈতিক দল, এই দলের ঐক্যের স্বার্থে বা নেতৃত্বের প্রশ্নে আমাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিলেও তা পালনে আমার কোনো আপত্তি নেই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ-গ্যাস সঙ্কট, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিসহ আরো কিছু কারণে বিএনপির যে ধারাবাহিক আন্দোলন, তাতে আপনারা কতোটুকু উদ্বিগ্ন?

মোঃ বেলায়েত হোসেন বিল্লাল গাজী : বিএনপি যে ইস্যুর কথা বলছে, এটা সরকারের সৃষ্ট নয়, এটি বৈশি^ক কারণে সৃষ্ট। যেমন কোভিড মহামারী ও বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ। এসব কারণে একটি সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। এটাকে স্থানীয় ইস্যু করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ নেই। এখন আর এদেশের জনগণ হুজুগের নয়, এদেশের জনগণ এখন পুরোপুরি সচেতন। অতএব এগুলো এদেশের জনগণ জানে, ফলে তাদের আন্দোলন সফল হচ্ছে না। তাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ বিষয়ে চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন কোনোটাই নয়।

চাঁদপুর কণ্ঠ : এ আন্দোলন সাংগঠনিকভাবে কিংবা অন্য কী উপায়ে মোকাবেলা করা যায় বলে আপনি মনে করেন?

মোঃ বেলায়েত হোসেন বিল্লাল গাজী : আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে লালন করে রাজনীতি করছি। তিনি আমাদের প্রতিহিংসার রাজনীতি শেখান নি। অতএব আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ যা করুক না কেনো, আমরা তা এদেশের জনগণকে সাথে নিয়ে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবো।

তাছাড়া তাদের আন্দোলনের নামে রাজপথে নৈরাজ্য ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, এদেশের সরকার রয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে, তারা সেটি দেখবেন, তারা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। আমরা আমাদের রাজনীতির মধ্য দিয়ে প্রতিপক্ষের রাজনীতি মোকাবেলা করবো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি কি এমন মানসিক আস্থা পোষণ করেন যে, বিদ্যমান সমস্যা বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি, অর্থনৈতিক সঙ্কট, সম্ভাব্য বৈশি^ক মন্দা তথা নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ স্বীয় জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে পারবে?

মোঃ বেলায়েত হোসেন বিল্লাল গাজী : অবশ্যই আশাবাদী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থ বার জনগণের রায় নিয়ে রাষ্ট্রের সরকার গঠন করবে। কারণ নানা সঙ্কট ও প্রতিকূলতার মাঝেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের চাহিদা পূরণে বিচক্ষণতা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে দেশ পরিচালনা করে জনগণের আস্থার জায়গায় স্থান করে নিয়েছেন। অতএব আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারো এদেশের জনগণের রায়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : উপরোক্ত প্রশ্নমালার বাইরে আপনার অন্য কোনো বক্তব্য থাকলে উপস্থাপন করতে পারেন।

মোঃ বেলায়েত হোসেন বিল্লাল গাজী : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটা বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এখানে বিভিন্ন মত ও পথের মানুষ থাকবে। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতাও থাকবে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা যেনো প্রতিহিংসায় জড়িয়ে না যায়। এমনটি কোনোভাবে কাম্য নয়। এখানে কোনো ব্যক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ নেই।

আমার অনুরোধ থাকবে, এক সময় রাজনীতিতে যে শিষ্টাচার ছিলো, সেগুলো ফিরিয়ে আনতে হবে। সেই ক্ষেত্রে অগ্রজ নেতৃবৃন্দকে শ্রদ্ধা, আমাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহমর্মিতা যেনো বজায় থাকে এগুলো বর্তমান দলের নেতা-কর্মীদের শিক্ষা দেয়া উচিত। কারণ রাজনীতি হলো সমাজের সর্বোচ্চ সেবার জায়গা-এটা সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।

উল্লেখ্য, বেলায়েত হোসেন গাজী (বিল্লাল) ১৯৭৭ সালে চাঁদপুর শহরের গণি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াবস্থায় জাসদ ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। স্কুলে পড়াবস্থায় গণি উচ্চ বিদ্যালয় জাসদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, ছাত্রজীবনে জাসদ ছাত্রলীগের পৌর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক, জাসদ ছাত্রলীগ চাঁদপুর জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার পক্ষে কাজ করার পর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ওই বছরই তিনি তৎকালীন আওয়ামী যুবলীগ চাঁদপুর জেলা শাখার শ্রম বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এরপর ২০০৪ সালের ১মার্চ জেলা যুবলীগের সম্মেলনে কাউন্সিলরদের সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওই সময় সারা বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র চাঁদপুর জেলা যুবলীগের সম্মেলনে ভোটাভুটি হয়। এই দায়িত্ব তিনি ২০১৩ সাল পর্যন্ত পালন করেন। পরবর্তীতে বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন।

তিনি ১৯৯৩ সালে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন। একইভাবে ১৯৯৮ সালে ওই ইউনিয়ন পরিষদে পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৬ সাল থেকে অদ্যাবধি একই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। মোট ৪ বার বাগাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হয়ে সুনামের সাথে দায়িত্বপালন করে যাচ্ছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়