শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০

 ‘পত্রিকা চলে কম, মোবাইল-ফেইসবুকে খাইয়া লাইছে’
স্টাফ রিপোর্টার ॥

সূর্যের আলো ফোটার আগেই মানুষের বাসা-বাড়ি, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে যায় খবরের কাগজ। এ রুটিন প্রতিদিনেরই। বছরের নির্দিষ্ট কয়েকটা দিন ছুটি ছাড়া বন্ধ নেই কোনো সরকারি ছুটিতেও। রোদ, ঝড়-বৃষ্টি সবরকম পরিবেশেই নিরলস পরিশ্রম করে হকাররা মানুষের কাছে পৌঁছে দেয় খবরের কাগজ। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের থাবা এবং ডিজিটাল ইন্টারনেটের দুনিয়ার প্রভাব পড়েছে তাদের সেই কর্মব্যস্ত জীবনের উপরেও। বর্তমানে পত্রিকা বিক্রিতে ভালো নেই চাঁদপুরের সংবাদপত্র হকাররা।

চাঁদপুর শহরের একমাত্র সংবাদপত্র এজেন্ট কোর্ট স্টেশনস্থ নুর নবী পাটওয়ারীর পুরানো হকার মোঃ হানিফ (৪৫)। পিতার নাম আহম্মদ আলী বেপারী। স্ত্রী, ১ কন্যা সন্তানসহ মা-বাবা ও পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন চাঁদপুর শহরের উত্তর শ্রীরামদী কোড়ালিয়া এলাকায়। ১৯৯০ সালের পর থেকে ওই এজেন্টের হকার হিসেবে শুরু করেন পত্রিকা বিলি করার কাজ। শহরের বিভিন্ন স্থানে পত্রিকা বিক্রি করে আগে ভালোই দিন যাচ্ছিল তার। প্রায় ৩২ বছর যাবত এ পেশার সাথে জড়িত তিনি। আগে আদালত ও ডিসি অফিস প্রাঙ্গণে পত্রিকা বিলি করতেন। এখন চাঁদপুর লঞ্চঘাটে বিক্রি করেন জাতীয়-স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকা।

হানিফ জানান, দুই-আড়াইশ’ পত্রিকা বিক্রি করে প্রতিদিন ৫/৬শ’ টাকা কমিশন পেতেন। এ টাকায় তার সংসার খরচ ভালোভাবেই মিটে যেতো। এখন পত্রিকা বিক্রি করে দৈনিক আড়াইশ’ টাকা রুজি করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। জিনিসপত্রের যে দাম, একটা কিনলে আরেকটা কিনতে টাকা থাকে না। এর কারণ ‘মোবাইল-ফেইসবুকে খাইয়া লাইছে’। মানুষ পত্রিকায় হাত দিতে চায় না, পত্রিকা চলে কম। পুরানো পেশা ছাড়তে মায়া লাগে তার।

হানিফ বলেন, সকাল ৭টা থেকে দুপুর পর্যন্ত লঞ্চঘাটে পত্রিকা বিক্রি করি। বিকেল ৪টার পর রাত ৮টা পর্যন্ত চাঁদপুর রেলওয়ে কোর্টস্টেশনে বাপের একটা দোকানদারি আছে, ফুটপাতে আংটি-মানিব্যাগ বিক্রি করি। অভাব-অনটনের মধ্যেই দিন কেটে যাচ্ছে। কিচ্ছু করার নাই, আমাগো সুখণ্ডদুঃখ দেখবে কে?’ এ অবস্থায় তারা কোনো সহযোগিতা পাচ্ছে না কারো কাছ থেকে।

হানিফ বলেন, ‘সরকার, সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সবাই কম-বেশি সহযোগিতা পাচ্ছে। কিন্তু আমরা সাংবাদপত্রের হকারদের কথা যেনো কারো মাথায় নেই। অথচ প্রতিটি নাগরিক জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ আমরা। আমরাই মানুষের দ্বারে দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পৌঁছে দিচ্ছি। কিন্তু আজ আমরা যে কষ্টে আছি, এদিকে কারোই খেয়াল নেই’।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়