শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে 'আল্লাহু চত্বর'
  •   চাঁদপুর কণ্ঠৈর কলামিস্ট এএসএম শফিকুর রহমানের ইন্তেকাল
  •   নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পেল সেনাবাহিনী
  •   জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকার অনুদান
  •   মেঘনায় নিখোঁজ দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

পদ্মা নদীর করাল গ্রাস : ছোট হয়ে আসছে রাজরাজেশ্বর

মির্জা জাকির ॥
পদ্মা নদীর করাল গ্রাস : ছোট হয়ে আসছে রাজরাজেশ্বর

পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে ভাঙ্গতে শুরু করেছে চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত কয়েক দিনে এখানকার বিভিন্ন এলাকার বহু পরিবারের ফসলি জমি ও বসতভিটা হুমকির মুখে পড়েছে। এখনো ভাঙ্গন হুমকিতে রয়েছে রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের উত্তর পাশ, মাল কান্দি, চোকদার কান্দি, ঢালী কান্দি এলাকার পরিবারের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। এতো আতঙ্কের মধ্যেই দিনরাত পার করছেন ভাঙ্গন হুমকিতে থাকা লোকজন। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের উত্তর পাশে মাল কান্দি, চোকদার কান্দি, ঢালী কান্দির কয়েকটি পরিবার তাদের বসতবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং কেটে নিচ্ছেন জমির গাছ। এদের কেউ কেউ একাধিকবার নদীভাঙ্গনের শিকার হয়েছেন। ভাঙ্গনের শিকার বেশ কয়েকজন বলেন, বেশ কয়েকবার আমরা নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছি। এখন বসতবাড়ি নদী ভাঙ্গনের মুখে পড়লে আমাদের যাওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই। নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে ভাঙ্গন বেড়ে যায়। তাই নদীভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা চান তারা।

ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত কাশিম বাঢ়ী বলেন, আগেও নদীতে বাড়ি ভাঙ্গছে। আবারও নদীর পানি বাইড়া আবারও বাড়ি ভাইঙ্গা যাওনের পথে। আগে ভাইঙ্গা যাওনের পরে অন্যের জায়গায় ঘর তুলছি।

স্থানীয়রা আরো বলেন, ভাঙ্গনে ইউনিয়নের ছয়টি ওয়ার্ডই পদ্মা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। নদীর স্রোত এবং অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে আমরা ভাঙ্গন হুমকিতে রয়েছি। সরকার যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয় তাহলে ভাঙ্গনের মুখে পড়া লোকজন কোথায় আশ্রয় নেবে এমন প্রশ্ন তাদের।

রাজরাজেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী বলেন, উজান থেকে প্রবল বেগে পানি চাঁদপুর হয়ে নদী দিয়ে বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত হওয়ায় রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের চর এলাকায় মেঘনা ও পদ্মা নদীর মিলনস্থলে প্রচণ্ড ঢেউ এবং ঘূর্ণিস্রোতের সৃষ্টি হয়। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের উত্তর পাশে, মাল কান্দি, চোকদার কান্দি, ঢালী কান্দিসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের বসতভিটা ভাঙ্গন হুমকিতে রয়েছে। এছাড়া গত কয়েক বছরের ভাঙ্গনে একটি নবনির্মিত সাইক্লোন সেন্টার, কয়েকটি গণকবরস্থান, মসজিদ, ঈদগাহ ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ওই ইউনিয়নের আচকা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, নদীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য বাঁশ ও খড় ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা। এদিকে প্রতি বছর নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে ভাঙ্গনের মুখে পড়তে হয় এখানকার বিশাল জনপদ। তা লিখিতভাবে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন বলে জানান স্থানীয় চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী। তিনি আরো জানান, ভাঙ্গনের বিষয়টি আমি মাননীয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনিকে ও স্থানীয় পাউবো কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন পাউবো কর্তৃপক্ষ। তিন আরো জানান, স্থানীয় পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী তাকে ফোনে জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা রক্ষায় আপাতত ত্রিশ লাখ টাকার বরাদ্দ হয়েছে। যা দিয়ে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করা হবে।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল হক চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেন, আমি ক’দিন আগে রাজরাজেশ্বরের ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। আমরা নজর রাখছি। এ ব্যাপারে একটা প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করেছি। জিও ব্যাগ ফেলার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়