প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
দুদকের তদন্তে স্থানীয় কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন, নিয়ন্ত্রণ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে গঠিত কমিশন হচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদক। ২০০৪ সালের ৯ মে এই দুদক গঠিত হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন আইনানুসারে এই কমিশন তার কার্যক্রম চালাচ্ছে। একজন চেয়ারম্যান ও দুজন কমিশনারের সমন্বয়ে পরিচালিত দুদকের প্রধান কার্যালয় রাজধানী ঢাকার সেগুনবাগিচায় অবস্থিত। এটি এমন একটি স্বাধীন সংস্থা, যেটি দুর্নীতি ও অন্যান্য সুনির্দিষ্ট অপরাধের অনুসন্ধান এবং তদন্ত পরিচালনার কাজ মূলত করে থাকে। এই দুদকের প্রতি মানুষের আস্থা যতোটুকু, প্রত্যাশা যেনো তারচে’ অনেক বেশি। সারাদেশ থেকে বহুবিধ অভিযোগ সম্বলিত চিঠি আসে দুদক কার্যালয়ে। জনবল সঙ্কটে সব ক’টি অভিযোগের তদন্তে প্রধান কার্যালয় তাৎক্ষণিক ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে হয় না। বেশি তদবির করলে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করানো হয়। যে তদন্তে সরষের মধ্যে ভূতের আলামত মাঝে মধ্যে টের পাওয়া যায়।
|আরো খবর
চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার কিছু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করা হয় দুদকে। অভিযোগকারীগণ তদন্ত করার জন্যে উপর্যুপরি দুদকে তদবির করায় দুদক কর্তৃপক্ষ এ তদন্তগুলো জেলা শিক্ষা অফিসার গিয়াস উদ্দিন পাটোয়ারীকে সম্পাদন করার জন্যে দায়িত্ব দেয়। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, তিনি দুদকের এমন তদন্তগুলো গতানুগতিকভাবেই করেছেন এবং কী রিপোর্ট দিয়েছেন জানা না গেলেও অভিযোগের শিকার প্রধান শিক্ষকরা বছরের পর বছর বহাল তবিয়তেই আছেন। এজন্যে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে জেলা শিক্ষা অফিসারের ভূমিকা নিয়ে জনমনে সন্দেহের অবকাশ তৈরি হয়েছে।
এমন বাস্তবতায় গত ৪ অক্টোবর সোমবার ফরিদগঞ্জ উপজেলাধীন শাশিয়ালী উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের তদন্তে দুদকে দায়েরকৃত অভিযোগের আলোকে সরেজমিনে যান জেলা শিক্ষা অফিসার। তিনি সাংবাদিকদের জানান, আমরা দুদকের চিঠির আলোকে তদন্ত শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে কিছু কাগজপত্র দেখেছি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চাহিদামাফিক আরো কাগজপত্র দিতে বলেছি। আগামী ১৪ অক্টোবরের মধ্যে আমাদের রিপোর্ট প্রদান করতে হবে।
জেলা শিক্ষা অফিসার দুদকে তার যে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠাবেন, সেটা নিশ্চয় গোপনেই পাঠাবেন, অতীতে যেভাবে পাঠিয়েছেন। এ ব্যাপারে আমাদের বলার কিছু নেই। কিন্তু যখন শাশিয়ালী উচ্চ বিদ্যালয়ে অনিয়মের আশ্রয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষকের কিচ্ছুই হচ্ছে না বলে পর্যবেক্ষকরা দেখবেন, তখন দুদকের ভূমিকার চেয়ে স্থানীয়ভাবে তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন। আমরা এমনক বিব্রতকর অবস্থা থেকে এ কর্মকর্তাকে মুক্তি দিতে কী করণীয় হতে পারে সেটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে ভেবে দেখবার জন্যে অনুরোধ জানাতে চাই।