মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫  |   ৩৪ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

পুলিশ কর্মকর্তাদের এমন পরিদর্শন সাহস ও আশা জাগানিয়া
অনলাইন ডেস্ক

আমাদের সমাজে রোগ-ব্যাধিতে ভুগে কিংবা কোনো দুর্ঘটনায় যদি কারো অকাল মৃত্যু হয়, তাহলে তার পরিবার, বাড়ি ও এলাকায় শোকের ছায়া ভর করে এবং পরিবেশ ভারী থাকে। শোক সংবরণে সান্ত¡না ও ভারী পরিবেশকে হালকা করতে আত্মীয়স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিরা শোকাহত পরিবারের কাছে ছুটে যায়, যার ফলে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে। তেমনি কোথাও হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হলে যদি এমনিভাবে সবাই শোকাহত পরিবারের কাছে যায়, সান্ত¡না দেয়, তারপরও সামগ্রিক পরিবেশের উন্নতি হয় না। এক্ষেত্রে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তি বিশেষ করে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে জেলার পুলিশ প্রধান (পুলিশ সুপার) যদি ঘটনাস্থলে যান, শোকাহত পরিবারকে সান্ত¡না দেন, আইনগত বিষয়ে সকল ব্যবস্থাগ্রহণের আশ্বাস দেন, বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীকে শান্ত করার মতো বক্তব্য রাখেন, তাহলে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা চাঁদপুর জেলার হত্যাকাণ্ড, ডাকাতিসহ বড়ো ধরনের অপরাধ সংঘটিত হবার স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দ্রুত যেতে দেখলেও পুলিশ সুপারকে সব জায়গায় যেতে দেখিনি। বর্তমান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম বলা যায় এক্ষেত্রে খুব আন্তরিক। তিনি চাঁদপুর জেলার প্রতিটি বড়ো ধরনের অপরাধ কর্মের স্থল পরিদর্শনে যাচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় সান্ত¡না, আশ্বাসে ও অধঃস্তন পুলিশ কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন। তিনি প্রাথমিকভাবে রহস্য উদ্ঘাটিত হওয়া হত্যাকাণ্ডের স্থলেও পরিদর্শনে যাচ্ছেন। যেমনটি তাঁর পূর্বসূরি কাউকে কাউকে এড়াতে দেখা গেছে। তিনি রোববার শাহরাস্তিতে আলোচিত রিনা হত্যা মামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

শাহরাস্তির টামটা উত্তর ইউনিয়নে সংঘটিত গৃহবধূ রিনা আক্তার (২৫) হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার নিহতের পরিবার ও স্থানীয় প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানান, রিনা আক্তার হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের ব্যাপারে পুলিশ তথ্য সংগ্রহ করছে। প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে অতিসত্বর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা করা হবে। উল্লেখ্য, রিনা আক্তার (২৫) (পিতা-বিল্লাল হোসেন, সাং-টামটা পাটোয়ারী বাড়ি, টামটা দক্ষিণ ইউনিয়ন, থানা-শাহরাস্তি, জেলা-চাঁদপুরে)-এর সাথে দু মাস পূর্বে হাবিবুর রহমান (৪৫) (পিতা-লুৎফর রহমান, সাং-সুরসই, টামটা উত্তর ইউনিয়ন, থানা-শাহরাস্তি)-এর বিবাহ হয়। গত ১৭/১০/২৩ তারিখে রিনা আক্তার তার স্বামীকে না বলে শ্বশুর বাড়ি থেকে চলে যান। ১৭/১১/২৩ তারিখ রিনা আক্তার ঢাকা থেকে তার স্বামীর বাড়িতে গেলে এতোদিন কোথায় ছিলো রিনাকে তার স্বামী জিজ্ঞাসা করলে উভয়ের মধ্যে তর্ক-বির্তক হয়। একপর্যায়ে স্বামী হাবিবুর রহমান উত্তেজিত হয়ে ছুরি দ্বারা রিনা আক্তারকে উপর্যুপরি ডান হাতের বাহু, পেটে, বুকে ও পায়ে আঘাত করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে রিনা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে ঘাতক স্বামী পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে বাড়ির লোকজন এগিয়ে এসে স্থানীয় ওয়ারুক বাজার মেডিল্যাব ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক রিনার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেন। তবে সেখানকার কর্মরত ডাক্তার রিনাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শাহরাস্তির টামটা দক্ষিণ ইউনিয়নের টামটা পাটোয়ারী বাড়ির বিল্লাল হোসেনের সদ্য বিবাহিতা কন্যা রিনা আক্তারের নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামী তার স্বামী হাবিবুর রহমানকে পলায়নপর অবস্থা থেকে পুলিশ দ্রুত আটক করেছে। এমন একটি মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে পুলিশের আইনগত দৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করতে পুলিশ সুপারের সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন সময়োচিত কিংবা যথার্থই মনে করি। এমন পরিদর্শন সাহস ও আশা জাগানিয়া হিসেবেই বিবেচিত। কন্যাহারা শোকাহত পিতা কিংবা বাদী যাতে সংশ্লিষ্ট মামলায় অহেতুক ছোটাছুটি সংক্রান্ত হয়রানি থেকে রেহাই পায়, সেদিকে শাহরাস্তি থানা পুলিশকে তথা তদন্ত কর্মকর্তাকে খেয়াল রাখতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদানে অনুরোধ জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়