রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৪ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

নোটারী আইনজীবীদের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ!
অনলাইন ডেস্ক

গত বুধবার চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত একটি সংবাদের শিরোনাম দেখে ‘আপত্তিকর ও দুঃখজনক’ বলে সচেতন প্রতিটি পাঠক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সংবাদটির শিরোনাম হয়েছে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ এবং বাল্যবিবাহ নিরোধ কমিটির মাসিক সভায় উদ্বেগ প্রকাশ : নোটারী আইনজীবীদের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ হচ্ছে!’ সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ এবং বাল্যবিবাহ নিরোধ কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বাদী-বিবাদীর আবেদনের আলোকে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত অভিযোগের নিষ্পত্তির কিছু চিত্র তুলে ধরেন। একই সাথে বাল্যবিবাহ বন্ধ করার কয়েকটি ঘটনার চিত্রও তিনি তুলে ধরেন। সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) রাশেদুল হক চৌধুরী বলেন, আমাদের কাছে প্রতি মাসে বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত অভিযোগ আসে। দেখা যায় যে, এগুলোর একটাও কাজীর কাছে রেজিস্ট্রি করা না। এগুলো সব নোটারী পাবলিক আইনজীবীর কাছে এফিডেভিটের মাধ্যমে করা। যেটাকে প্রচলিত ভাষায় কোর্ট ম্যারিজ বলা হয়। জেলা প্রশাসক বলেন, কোন্ কোন্ নোটারী আইনজীবী বাল্যবিবাহের এফিডেভিট করে প্রমাণসহ সে তথ্য আমাদের দিতে হবে। তখন আমরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারবো। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে সকলে মিলে একযোগে কাজ করতে হবে। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়া বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। বিবাহ বন্ধন আবদ্ধ করতে অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন দেখে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আমরা চাই যাতে কেউ বাল্যবিবাহের শিকার না হয়। এটি একটি সামাজিক ব্যাধি। সকলের সচেতনতাই পারে বাল্যবিবাহ রোধ করতে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, চাঁদপুর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অঃ দাঃ) নাছিমা আক্তার প্রমুখ।

নোটারী আইনজীবী তথা নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বাল্য বিবাহ সম্পাদনের ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের প্রদত্ত তথ্য কম-বেশি উদ্বেগজনক। প্রেমে জড়িয়ে পড়া, বখে যাওয়া সহ নানাভাবে বিপথগামী হওয়া থেকেই অনেক ছেলে/মেয়ে বাল্যবিবাহে আবদ্ধ হয়। এর বাইরে এতিম, নানা কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা মেয়েদের নিরাপত্তার প্রশ্নে এবং প্রবাসী পাত্র দেখে মেয়েদেরকে পাত্রস্থ করে সহজ-সুখ লাভের আশায় অনেক অভিভাবক গোপনে কিংবা বাধা প্রদান করতে পারে এমন সব ব্যক্তি বা সংস্থাকে ম্যানেজ করে বাল্য বিবাহ সম্পন্ন করে। আর প্রধানত প্রেমাসক্ত ছেলে ও মেয়ে অনেক টাকার বিনিময়ে নোটারী পাবলিককে ম্যানেজ করে অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে তথাকথিত কোর্ট ম্যারেজের নামে বাল্য বিবাহ জায়েজ (!) করার হীন প্রয়াস চালায়। দুঃখজনকভাবে এমন প্রয়াসে কিছু অভিভাবকও জড়ায়। সব নোটারী পাবলিক অর্থের লোভে বাল্য বিবাহ সম্পন্নে প্রলুব্ধ হয়, এমনটি বলা অন্যায় হবে। কিছু লোভী এই কাজটি করে। এসব লোভীর বিরুদ্ধে প্রাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের উদ্যোগ নেন, তাহলে সেটি বাল্য বিবাহ রোধে কিছুটা ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস রাখি। সাথে সাথে সোর্স কাজে লাগিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে বাল্য বিবাহ বিরোধী অভিযান চালানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়