রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

	 শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্য রোধের উপায় কী?
অনলাইন ডেস্ক

আমাদের দেশে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনেকটাতেই নানা দুর্নীতি আছে। আর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কিছুটাতে তো ছোট-বড় দুর্নীতি আছেই। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির প্রধান দিক হচ্ছে নিয়োগ-বাণিজ্য। বিশেষ করে কিছু এমপিওভুক্ত হাই স্কুল ও সমমানের মাদ্রাসায় প্রধান শিক্ষক/সুপারিন্টেন্ডেন্ট এবং কলেজ ও সমমানের মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ নিয়োগে রমরমা বাণিজ্যের হাট যেনো বসে। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মৌন সম্মতি কিংবা উদাসীনতায় আগ্রহী প্রার্থীদের দর ওঠায় এবং সর্বোচ্চ দরদাতকে নিয়োগে যতো ধরনের অনিয়ম করা দরকার, সেটা করে। এজন্যে রাজনৈতিক নেতা কিংবা জনপ্রতিনিধির আশ্রয়-প্রশ্রয় পাওয়ার কাজটিও সেরে রাখে। পরিণতিতে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান পদে নিয়োগ হয় ঠিকই, নিয়োগপ্রাপ্তের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত কিছু পাওয়া যায় না। আবার কোথাও কোথাও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে নির্দিষ্ট মেয়াদের বাইরেও কাউকে কাউকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান করে রাখা হয়। এ নিয়ে রহস্যজনক কারণে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা নীরবতা পালন করেন কিংবা দীর্ঘসূত্রিতা অবলম্বনের পথ বাতলে দেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পদে নিয়োগ-বাণিজ্যে সফলতা পেয়ে কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান শিক্ষক/উপাধ্যক্ষ পদসহ অন্য যে কোনো পদে নিয়োগ প্রদানে বাণিজ্য যেনো ওপেন সিক্রেট বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে দপ্তরী নিয়োগে কোথাও কোথাও যা হয়েছে বা হয় এবং সেটা নিয়ে গণমাধ্যমে যেভাবে সংবাদ প্রকাশিত হয়, তাতে সুধী সমাজসহ সচেতন ব্যক্তিমাত্রেরই চোখ কপালে ওঠার উপক্রম হয়। ২৩ অক্টোবর সোমবার চাঁদপুর কণ্ঠে কোনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নয়, একটি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের খবর ছাপা হয়েছে।

‘পশ্চিম সকদী ডিবি উচ্চ বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম’ শিরোনামের সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের পশ্চিম সকদী ডিবি উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি অর্থের বিনিময়ে অদক্ষ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার পাঁয়তারা করে আসছে। ইন্টারভিউতে না টিকলেও অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া হবে বলে একটি সূত্র জানায়। পূর্বেও এ বিদ্যালয়ে অর্থের বিনিময়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন। বর্তমানে যে পদে নিয়োগ দেয়া হবে সে পদের নিয়োগ প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে। এই কারণে একাধিক চাকরিপ্রার্থী থাকা সত্ত্বেও কেউ আর আবেদন করেননি। এলাকাতে এসব জানাজানি হলে অনেক নিয়োগপ্রার্থী আবেদন করার মন-মানসিকতা হারিয়ে ফেলেন। এক চাকরিপ্রার্থীকে জিজ্ঞাসা করা হয় ‘আপনি আবেদন করেন না কেনো?’ তিনি উত্তরে বলেন, আবেদন করে কী হবে? আমাদের তো আর চাকরি হবে না। ম্যানেজিং কমিটি যাকে চাকরি দিবে সেই প্রার্থী আগেই ঠিক করে ফেলেছে এবং তার সাথে ২ লাখ টাকাও লেনদেন হয়ে গেছে। সে কারণে আমরা কেউই আর আবেদন করিনি। এ নিয়ে অভিভাবক ও সচেতন মহলে নানা কথা শোনা যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সচেতন ক’ব্যক্তি জানান, পূর্বেও বিদ্যালয়ে অনিয়ম করে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের পাঁয়তারা চলছে। এর সাথে ক’জন শিক্ষক সহকারে ম্যানেজিং কমিটির গুটিকয়েক সদস্য জড়িত। কিছুদিন আগে মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে অদক্ষ সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যিনি কি না লিখিত পরীক্ষায় চতুর্থ হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনের আশু দৃষ্টি ও তদন্ত প্রয়োজন।

আমাদের মতে, জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি), জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কঠোর অবস্থানে থাকলে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার প্রধান পদসহ অন্য যে কোনো পদে নিয়োগ-বাণিজ্য করার সাহস কেউ প্রদর্শন করতে পারে না। যদি তাদের অজান্তে কেউ করেও ফেলে, তাহলে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই কিংবা গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ দেখামাত্রই তদন্তের ব্যবস্থা করা দরকার। এতে অনিয়মের আশ্রয়ে নিয়োগ-বাণিজ্যে সংশ্লিষ্ট সকলে শায়েস্তা হবে এবং কেউ এমনটি করার কথা আর ভাববে না কিংবা অপপ্রয়াস চালাবে না। আমরা পশ্চিম সকদী ডিবি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগে যে অনিয়ম করা হয়েছে এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে যে অনিয়ম করা হচ্ছে, সেগুলো তদন্ত করার জন্যে উপরোল্লিখিত সকল কর্মকর্তার নিকট জোর অনুরোধ জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়