রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

ডাকাত আতঙ্ক নিরসনে কিছু একটা করুন
অনলাইন ডেস্ক

শীতের পদধ্বনি অনুভূত হচ্ছে, আর বিভিন্ন জনপদে দেখা যাচ্ছে ডাকাতের পদধ্বনি। কিছু সড়ক ক্রমশ হয়ে উঠবে ডাকতির আশঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ। গতকাল দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে ‘চাঁদপুর সদরের বালিয়া ও বাগাদীতে ডাকাত আতঙ্কে গ্রামবাসী’ শিরোনামের সংবাদ পড়ে এ দুটি ইউনিয়ন শুধু নয়, অন্যান্য ইউনিয়নের গ্রামবাসীরাও যে ডাকাত আতঙ্কে ভুগছেন, সেটি জানিয়েছে ওয়াকিবহাল মহল। তারা এমন একটি সময়োচিত সংবাদের জন্যে চাঁদপুর কণ্ঠকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে।

সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ও বালিয়া ইউনিয়নের একাধিক গ্রামে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে বেশ ক’টি ডাকাতি ও চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘরের লোকদের গলায় ছুরি ধরে নিয়ে গেছে মূল্যবান জিনিসপত্র। পুরুষশূন্য পরিবারগুলো এখন আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছে। এসব এলাকার লোকদের নিরাপত্তার বিষয়ে ন্যূনতম গ্রাম পুলিশেরও ব্যবস্থা নেই বলে জানালেন ভুক্তভোগীরা।

সরেজমিনে গিয়ে বালিয়া ইউনিয়নের সাপদী গ্রামের ইসমাইল খান, লতিফ গাজী বাড়ি এবং বাগাদী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ সাখুয়া গ্রামের মোরশেদ খান বাড়ি ও ময়দান খোলার কবির হোসেনের বাড়ির চুরি ও ডাকাতির আলামত দেখা গেছে। এসব বাড়ির ভুক্তভোগী লোকদের সাথে কথা হয় চাঁদপুর কণ্ঠ প্রতিবেদকের। সাপদী গ্রামের ইসমাইল খান জানান, গত সপ্তাহে তিনি কুমিল্লায় ছিলেন। ১৪ অক্টোবর দিনগত রাতে তার বাড়িতে কেউ ছিল না। দুর্বৃত্তরা এসে তার ঘরের দরজার তালা ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে থাকা সবকিছু তছনছ করে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। দুটি স্টীলের আলমিরার তালা ভেঙ্গেছে। ঘটনার পরিদন সকালে তিনি এসে এই দৃশ্য দেখেন এবং এলাকাবাসীকে জানান। একই এলাকার লতিফ গাজীর প্রবাসী ছেলের ঘরে ডাকাতি হয় ১৩ অক্টোবর দিনগত রাতে। ঘরের জানালার গ্রীল কেটে মুখোশ পরে ডাকাতরা প্রবেশ করে। প্রবাসীর স্ত্রীর গলায় ছুরি ধরে ঘরে থাকা ১৫ হাজার টাকা এবং ৬ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তাদের আত্মীয় মোঃ মহিবুর রহমান পরিদন চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এদিকে পাশের বাগাদী ইউনিয়নের মোরশেদ খান বাড়িতে গোলাপ হোসেন খান লিটনের ঘরে মুখোশ পরে ডাকাতির চেষ্টা করা হয় ১৪ অক্টোবর দিবাগত রাতে। ওই ঘরে লিটনের স্ত্রী শিরিন আক্তারের গলায় ছুরি ধরে ডাকাতির চেষ্টা করে ডাকাত দলের সদস্যরা। এ ঘটনায় লিটন পরদিন চাঁদপুর সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। একই গ্রামের আবুর বাড়িতে পর পর দুদিন ডাকাত দলের সদস্যরা আসে। তারা ঘরের দজরায় নাড়া দিয়ে ডাকাতির চেষ্টা করে। কিন্তু ঘরে থাকা নারীরা কোনো ধরনের শব্দ না করায় তারা চলে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢালীরঘাট থেকে ফরক্কাবাদ পর্যন্ত দুই ইউনিয়নের সড়কের পাশের অধিকাংশ বাড়ির কর্তা ব্যক্তিরা প্রবাসে থাকেন। অনেকের বসতঘর পাকা এবং সেমিপাকা। বাড়িগুলো পুরুষ শূন্য থাকায় ডাকাত চক্রের সদস্যরা টার্গেট নির্ধারণ করে প্রায় প্রতিদিন চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটাচ্ছে। বালিয়া ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনির হোসেন শেখ বলেন, সাপদী গ্রামটি আমার ওয়ার্ডে। একটি ডাকাতির ঘটনা আমি শুনেছি। আজকে আরো দুটি চুরি ও ডাকাতির ঘটনা জেনেছি। বিষয়টি আমি আজই চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। তবে ঘটনাস্থল এলাকায় গ্রাম পুলিশ দিয়ে টহলের ব্যবস্থা করবো। বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল্যা পাটওয়ারীকে জানানো হয় ডাকাতির ঘটনা। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। আমি ইউপি সদস্যের সাথে কথা বলে আপনাদেরকে জানাবো। বাগাদী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ মনির হোসেন বলেন, ব্রাহ্মণ সাখুয়া গ্রামে দুটি ডাকাতির ঘটনা জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তাদেরকে বলেছি থানায় অভিযোগ করার জন্য। পরবর্তীতে আমি তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করবো। এই ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ মারা গেছেন। যে কারণে রাতে কেউ টহল দিতে পারছে না।

ডাকাত আতঙ্ক দূর করার জন্যে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নৈশকালীন টহল কিংবা গ্রাম পুলশের নৈশকালীন পাহারার ব্যবস্থা করলেই সেটা যথেষ্ট হয়ে যাবে বলে আমরা মনে করি না। আমাদের মতে, ডাকাত উপদ্রুত এলাকাগুলোতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কর্তৃক আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা আহ্বান করা দরকার। সে সভায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সুধীজনদের উপস্থিতিতে কী কী করণীয় স্থানীয়ভাবে কার্যকর করার উপযোগিতা রয়েছে, আর থানা ও ইউপির সাথে জনগণ তথা গ্রামবাসীর সমন্বিত কী উদ্যোগ টেকসই হতে পারে, সে ব্যাপারে খোলামেলা আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হতে পারে। এতে আতঙ্ক কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে মানসিক শক্তি আহরিত হবে এবং সেটি সাধারণ্যে সঞ্চারিত হবে, যাতে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাধারণ মানুষ নৈশকালীন পাহারায় স্বেচ্ছায় পালাক্রমে এগিয়ে আসবে এবং থানা ও ইউনিয়ন পরিষদকে আশাব্যঞ্জক সহায়তা প্রদান করবে বলে আমাদের ধারণা। এক্ষেত্রে মনিটরিংয়ের জন্যে কমিউনিটি পুলিশিং ও বিট পুলিশিংকে সক্রিয় করার বিষয়টি জেলা পুলিশ ভেবে দেখতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়