প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
যে উন্নয়নে সমালোচকও মনে হয় মুগ্ধ!

চাঁদপুর জেলার ছোট উপজেলাগুলোর একটি হচ্ছে শাহরাস্তি। একসময় এটি হাজীগঞ্জ উপজেলার অংশ ছিলো। সেই শাহরাস্তির কৃতী সন্তান মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম। তিনি সার্বিক বিবেচনায় এক জীবন্ত কিংবদন্তি। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন এক নম্বর সেক্টরের কমান্ডার, হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি নির্বাচনী এলাকা থেকে নির্বাচিত চারবারের সংসদ সদস্য, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সদস্য। তিনি একজন উন্নয়ন পাগল মানুষ। কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তো, তার পেছনে লেগেই থাকেন। কোনো কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনায় তিনি অনেকটা থাকেন নিভৃতচারী। এর ফলে ঈর্ষাপরায়ণরা ষড়যন্ত্রের থাবা পুরোপুরি বিস্তার করতে পারে না। পরিণামে সৃষ্টি হয় চমক। এমনই একটি চমক হচ্ছে শাহরাস্তি উপজেলার ছিখুটিয়া ব্রীজ থেকে সূচীপাড়া ব্রীজ পর্যন্ত ডাকাতিয়া নদীর উত্তর তীরে দুমাইল দীর্ঘ ওয়াকওয়ে নির্মাণ। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিএ) প্রায় ৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ওয়াকওয়ে নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্পের নব্বই শতাংশ কাজ শেষ করেছে। এমতাবস্থায় গত ১৪ অক্টোবর শনিবার জাঁকজমকপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে ওয়াকওয়েটি জনসাধারণের জন্যে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে রাজধানীর বাইরে কোনো নদীর তীরে ব্যয়বহুল দৃষ্টনন্দন দীর্ঘ ওয়াকওয়ে নির্মাণের ক্ষেত্রে শাহরাস্তির অবস্থান দ্বিতীয়। সিলেটে জল্লারপাড়ের ওয়াকওয়ে সহ আরো ক'টি ওয়াকওয়ে এবং মাদারীপুরে শকুনি লেকের পাড়ের ওয়াকওয়ে বিনোদনপ্রেমী পর্যটকদের এতোদিন অনেক বেশি আকর্ষণ করলেও রাজধানী ও তৎসংলগ্ন নদীতীরের ওয়াকওয়ের বাইরে শাহরাস্তির ওয়াকওয়েটি শুধু চাঁদপুর ও সন্নিহিত জেলাগুলোর বাসিন্দাদের ক্রমশ আকর্ষণ করবে না, সারাদেশের পর্যটকদেরও আকর্ষণ করবে বলে অভিজ্ঞ মহলের প্রত্যাশা। সর্পিল বাঁকের ডাকাতিয়া নদীকেন্দ্রিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যে কতো অপার, সেটা এই ওয়াকওয়েতে না গেলে আন্দাজ করা সম্ভব নয়।
নদীকেন্দ্রিক পর্যটন বিকাশে শাহরাস্তিতে ডাকাতিয়া তীরের ওয়াকওয়েটি বিরাট ভূমিকা রাখবে বলে পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা। সেজন্যে এমন উন্নয়নে মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপির কট্টর সমালোচকরাও মনে হয় মুগ্ধ না হয়ে পারছেন না। মেজর রফিক তাঁর সংসদীয় এলাকা শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জে ডাকাতিয়া নদীর ওপর দশটি ব্রীজ নির্মাণসহ বহুবিধ উন্নয়নে সরকারের সাড়ে তিন হাজার কোটি ব্যয়ে যে ভূমিকা রেখেছেন, তেমন ভূমিকা বাংলাদেশে ক'জন এমপি রেখেছেন-- এমন প্রশ্ন কৌতূহলী মানুষমাত্রই করে বসেন। তিনি আবার নির্বাচনে প্রার্থী হলে ভোটাররা তাঁকে ভোট দিয়ে জয়ী করবেন কিনা সেটা ভোটারদের বিবেকের বিষয়। তবে এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, তিনি চারবারের এমপি হিসেবে হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি উপজেলার সামগ্রিক উন্নয়নে স্মরণকালে শুধু নয়, স্মরণাতীত কালের মধ্যে যা কিছু করেছেন, সেটির রেকর্ড অন্য কারো ভঙ্গ করা হবে দুঃসাধ্য। আমরা তাঁর সুস্থতাপূর্ণ দীর্ঘজীবন এবং অব্যাহত উন্নয়নভাবনার আগাম সাফল্য কামনা করছি।