রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

ড্রেজারের দৌরাত্ম্য দুর্দমনীয়?
অনলাইন ডেস্ক

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যখন মানুষের জীবনের নানা ক্ষেত্রে গতিশীলতা বেড়ে চলছিলো, আমরা ছিলাম পিছিয়ে। এমতাবস্থায় আশির দশকে আমাদের দেশের কারিগররা সেচ পাম্পে প্রয়োজনীয় সংযোজন করে সেটি নৌকায় লাগিয়ে নৌকাকে করলো গতিশীল। এমন নৌকাকে নাম দেয়া হলো টেম্পু/ট্রলার। হালে টেম্পু নাম মুছে গিয়ে সেটি হয়ে গেছে ইঞ্জিনচালিত নৌকা, সংক্ষেপে ট্রলার। একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে সেচ পাম্পের নূতন ব্যবহার শুরু হলো মিনি ড্রেজার তৈরিতে। এটি বড়ো ধরনের ড্রেজার প্রাপ্তির জটিলতা ও ব্যয়বাহুল্যের বিপরীতে ছিলো সাময়িক বড়ো অর্জন। কিন্তু কালক্রমে সেটি হয়ে গেলো ভূমিদস্যু ও ভূমিখেকোর বড়ো হাতিয়ার। পরিবেশের বড়ো ক্ষতি করে অবৈধ উপায়ে আবাদী/অনাবাদী জমিধ্বংসে মিনি ড্রেজার যে কতো ক্ষতিকর ভূমিকায় অবতীর্ণ, সেটি বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ পড়লেই সহজে অনুধাবন করা যায়। এমন একটি সংবাদই গত শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে।

‘ফরিদগঞ্জে কৃষিজমি হুমকিতে ফেলে ড্রেজার দিয়ে বালি উত্তোলন’ শিরোনামের সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের গাব্দেরগাঁও গ্রামে ফসলি জমির মাঝখানে ড্রেজার দিয়ে পুকুর খনন করে দিনের পর দিন উত্তোলন করা হচ্ছে বালি। ড্রেজার বসিয়ে বালি উত্তোলন করার কারণে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে কৃষিজমি। ড্রেজার মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় কোথাও লিখিত অভিযোগ দেয়ার সাহস পাচ্ছেন না অসহায় কৃষকরা। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় ক’জন কৃষক জানান, শুনছি ড্রেজার চালানো নাকি সরকার নিষিদ্ধ করছে, তাহলে আমাদের আবাদকৃত কৃষিজমিকে হুমকিতে ফেলে বালি উত্তোলন করছে কেন? ড্রেজার মালিকদের মানা করলেও তারা মানছে না। স্থানীয় তহশীলদার যারা আছেন তারা এগুলো দেখেও না দেখার ভান করছেন। কৃষিজমি রক্ষার্থে ড্রেজার বন্ধ করা জরুরি। এদিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রেজার মালিক ও সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাউসারুল আলম কামরুল বলেন, ড্রেজারটির বিষয়ে আমাকে কেউ জানায়নি। ড্রেজার চালানো বেআইনি। বিষয়টি আমি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে কৃষিজমি রক্ষার্থে ব্যবস্থাগ্রহণ করবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌলি মন্ডল বলেন, বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। খোঁজখবর নিয়ে বিধি মোতাবেক আইনি ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

চাঁদপুরের সাবেক এক জেলা প্রশাসক মিনি ড্রেজারের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় ড্রেজারের দৌরাত্ম্য কমে এসেছিলো। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সেটি বেড়ে চলছে। বর্তমান জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেরাও বসে নেই। তারা মিনি ড্রেজারের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে, জরিমানা করছে, ড্রেজার ধ্বংস করছে। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও, এসি ল্যান্ডের মতো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের বহুমাত্রিক ব্যস্ততার জন্যে মিনি ড্রেজার বিরোধী অভিযান লাগাতার বা ধারাবাহিক করা যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় জেলা সদরে কর্মরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রটদের মিনি ড্রেজার বিরোধী অভিযানের দায়িত্ব দেয়া যায় কিনা সেটি ভেবে দেখতে চাঁদপুরের সুযোগ্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়