রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

‘পেরেন্টিং’ না জানলে যা হয়--
অনলাইন ডেস্ক

শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনায় খুব দ্রুত মর্মান্তিকতা ছড়িয়ে পড়লেও সতর্কতা ছড়িয়ে পড়ে না। পরিবারের সদস্যদের ব্যস্ততায় শিশুরা খেলার নামে চোখের আড়াল হওয়া এবং পানির কাছে ছুটে যাবার আকর্ষণ অনুভব করেই--এটা যেন শিশুদের সাধারণ প্রবণতা। এই প্রবণতা যে শিশুর বাবা-মা, বড়ো ভাইবোন, দাদা-দাদী, নানা-নানীসহ যাদের সাথে শিশু বসবাস করে, তারা না বুঝবে, সেখানে পানিতে ডুবে মৃত্যুসহ অন্য দুর্ঘটনা ঘটবেই। গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে 'ফরিদগঞ্জে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই বোনের করুণ মৃত্যু' শিরোনামের সংবাদটিতে প্রাগুক্ত সত্যেরই প্রমাণই মিললো, নূতন কিছু নয়।

সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, ফরিদগঞ্জে গোসল করতে গিয়ে পুকুরের পানিতে ডুবে নুরজাহান আক্তার (৬) ও নূহা আক্তার (৫) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ৩১ জুলাই সোমবার দুপুরে ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের দায়চারা গ্রামের চন্দের বাড়িতে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে। নুরজাহান ও নূহা ঐ বাড়ির কাউছার-নাজমা দম্পতির দুই মেয়ে। দুই শিশু কন্যাকে হারিয়ে বাকস্তব্ধ পিতা-মাতা। কাউছার সপরিবারে ঢাকাতে বসবাস করেন। গত ঈদুল আজহায় গ্রামের বাড়িতে আসেন। আগামী ৬-৭ আগস্ট স্ত্রী নাজমা বেগমের তৃতীয় সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার কথা। তাই আর ঢাকাতে যাওয়া হয়নি। সোমবার দুপুরে সন্তান সম্ভবা স্ত্রী রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। দাদী নাছিমা বেগমের কাছে দুই শিশু বারবার গোসল করার কথা বললে তিনি তাদের একটু পরে নিজেই গোসল করিয়ে দিবেন বলে সামান্য অপেক্ষা করতে বলেন। এরই মধ্যে তারা দাদীর জন্যে অপেক্ষা না করে নিজেরাই বসতঘরের পাশে ঘাটলা দিয়ে পুকুরে নেমে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা পুকুরের পানিতে ডুবে যায়। এ সময় ছালেহা বেগম নামে এক নারী ঐ ঘাটলা দিয়ে গোসল করতে নামলে ডুবে থাকা এক শিশুর নিথর দেহ তার পায়ের সাথে লাগে। পরে দুই শিশুকেই পাওয়া যায় পানির নিচে। পরিবারের লোকজন তাদেরকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে।

ঘরের সাথে পুকুর ঘাটলাসহ শিশুদের নিয়ে বসবাসকারী পরিবার যে নিশ্চিত মৃত্যুর হাতছানিতে কালযাপন করে সেটা উপলব্ধি করতে না পারাটাই বড়ো ব্যর্থতা বলে আমরা মনে করি। আর যারা এমন দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয় না, সচেতন হয় না, তারা তো চরম উদাসীন ও বিপজ্জনক বলেই গণ্য। সবচে' বড়ো কথা, আমাদের দেশে পেরেন্টিং শেখা তথা মা-বাবার দায়িত্ব /অভিভাবকত্ব সংক্রান্ত শিক্ষাগ্রহণের প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ না থাকার কারণে, এ সংক্রান্ত বই থাকলেও সেটা সংগ্রহ করে না পড়ার কারণে কিংবা এমন শিক্ষা অভিজ্ঞজনের কাছ থেকে শেখার আগ্রহ না থাকার কারণে শিশুপালনের বিষয়টি অন্তত নব্বই শতাংশ বাবা-মা বা অন্য অভিভাবকের কাছে গুরুত্বহীন থেকে যায়। এর ফলে বাবা-মা /অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট অন্য সকলের অযত্ন-অবহেলা-উদাসীনতায় শিশুদের মৃত্যুই শুধু ঘটে না, তাদের জীবনে আরো অনেক অঘটনই ঘটে যায়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়