রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৩, ০০:০০

মহিলা মাদ্রাসায় তীক্ষ্ম নজরদারি দরকার

মহিলা মাদ্রাসায় তীক্ষ্ম নজরদারি দরকার
অনলাইন ডেস্ক

‘চাঁদপুর শহরে ভাড়া-বাড়িতে এতিমখানার নামে প্রতারণা’ শিরোনামে চাঁদপুর কণ্ঠের অন্যতম জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সোহাঈদ খান জিয়া গত বুধবার চাঁদপুর কণ্ঠে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন পরিবেশন করেছেন। তিনি লিখেছেন, চাঁদপুর পৌরসভার ১৫নং ওয়ার্ডে ভাড়া বাড়িতে এতিমখানার নাম দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে জিটি রোড উত্তর বিষ্ণুদী বারেক আখন্দের বাড়িতে। আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ) দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানার নাম সাঁটিয়ে বিভিন্ন দান-অনুদানের টাকা সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এলাকাবাসী জানান, আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ) দারুল উলুম মাদ্রাসাটি ২০১৯ সালে মঞ্জু আখন্দ থেকে বাড়ি ভাড়া নিয়ে মহিলা মাদ্রাসা নামে যাত্রা শুরু করে। এর ক’দিন পরেই দেখা যায় সেখানে ছেলেরাও পড়াশোনা করছে। পরে আবার মাদ্রাসার সাথে এতিমখানা নাম দিয়ে সাইনবোর্ড ঝুলানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা বোরহানউদ্দিন জানান, মহিলা মাদ্রাসা নামে ছিলো। পড়াতেন পুরুষ শিক্ষক। এজন্যে আমার ভাতিজিকে আমি এখান থেকে অন্যত্র নিয়ে গেছি। অপর বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন জানান, আকিকার জন্যে ছাগল কিনতে এক লোক টাকা দিয়েছে। হুজুর ছয় মাসের ছাগল কিনে জবাই করায় এ বিষয়ে এলাকায় সমালোচনা হয়েছে। হুজুরকে জিজ্ঞেস করলে বলেন, জায়েজ আছে। অথচ অন্য ওলামায়ে কেরাম জানিয়েছেন, আকিকা হোক আর কোরবানির জন্যে হোক ছাগলের বয়স এক বছর হতে হবে। রামিম পাটওয়ারী নামে আরেক ব্যক্তি জানান, আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ) দারুল উলুম মাদ্রাসায় ছাত্র-ছাত্রী পড়ছে। এ মাদ্রাসা নাকি দাখিলের মান। অথচ মাদ্রাসা সুপার ফজলুল করিম কেবল হাফেজি পাস। তবে তিনি কোথাও খতম তারাবিহ পড়ান না। রোজার ঈদে ঈদগাহ মাঠে মাদ্রাসার নামে টাকা আদায় করতে চাইলে আল-আমিন মসজিদ কমিটি মাদ্রাসা সুপারকে নিষেধ করে দেয়। মসজিদ কমিটি বলে, ভাড়াটিয়া মাদ্রাসার নামে কিসের কালেকশন! সচেতন এলাকাবাসী নজরুল ইসলাম জানান, মাদ্রাসায় সকালবেলা কিছু ছাত্র-ছাত্রী মক্তব্যে পড়ে। নিয়মিত ক্লাসে অত একটা ছাত্র-ছাত্রী নেই। ফয়জুল করিমরা তিন ভাই মিলে এই মাদ্রাসা পরিচালনা করেন। বলা যায় মাদ্রাসা দিয়ে তাদের সংসার চলে। ছাত্র-ছাত্রীর নাম বলে এলাকা থেকে তারা অর্থ আদায় করেন। তাদের দাবি, এটা এসএসসি মানের মাদ্রাসা। এলাকায় তো ব্যাঙের ছাতার মতো মাদ্রাসা। এগুলো কে তদারকি করবে? প্রশাসন তদারকি করলে সাধারণ মানুষ প্রতারণা থেকে রেহাই পাবেন বলে এলাকাবাসী মনে করেন।

মাদ্রাসার সুপার ফয়জুল করিম ভাড়াটিয়া বাড়িতে এতিমখানা চালাচ্ছেন বলে স্বীকার করেছেন। ওই এলাকায় তো আরও বহু মাদ্রাসা আছে। ‘আপনি কেন ভাড়া নিয়ে এতিমখানা ও মাদ্রাসা চালু করলেন’ এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, অত্র এলাকায় দাখিল অথবা কওমীতে শরহে বেকায়া পর্যন্ত কোনো মাদ্রাসা নেই। এই কারণে তিনি মাদ্রাসা চালাচ্ছেন। ফয়জুল করিমের দাবি, তিনি কোরআনে হাফেজ এবং আলিয়া মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেছেন এবং কওমী মাদ্রাসা থেকে নাহুমীর পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। ‘দাখিল মাদ্রাসার সুপার হতে হলেও কামিল পাস অথবা দাওরা পাস হতে হয়’ এমন প্রশ্ন করলে তিনি আর কথা বলতে রাজি হননি।

আমাদের দেশে সমাজে একটি কথা প্রচলিত যে, মসজিদণ্ডমাদ্রাসা ধর্মীয় বিষয়। এ বিষয় নিয়ে কারো উচ্চবাচ্য করা বা প্রতিবাদী হওয়াতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার ঝুঁকি থাকে। অতএব, চুপ থাকাই উত্তম। মহিলা মাদ্রাসায় মহিলা শিক্ষকগণ পড়াবেন--এটা অভিভাবকসহ ধর্মীয়ভাবে সচেতন প্রতিটি মানুষের স্বাভাবিক প্রত্যাশা। কিন্তু কোনো কোনো মহিলা মাদ্রাসায় কোনো কোনো শিক্ষিকার স্বামী প্রকাশ্য-গোপনে শিক্ষকতা করেন এবং ছাত্রীদের আবাসিক স্থলে সস্ত্রীক অবস্থানও করেন। যেটা নিয়ে মাঝে মধ্যে মুখরোচক চাপা গুঞ্জন চলে এবং কোথাও কোথাও গুঞ্জনের সত্যতাও মিলে। কিন্তু এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় তদারকি ও নজরদারি করার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন মহল থেকে নির্দেশ পায় না, না নিজেরাই তাগিদ অনুভব করে না, না প্রভাবশালী কারো চাপের মধ্যে থাকে--কোনোটাই সাধারণ্যে স্পষ্ট নয়। কথা হলো, এটি স্পষ্ট করার দায়িত্ব আসলে কার?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়