বুধবার, ০২ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০৫

জুমআতুল বিদা কী

মুফতি মুহা.আবু বকর বিন ফারুক
জুমআতুল বিদা কী

বিদায়ী জুমআ বা শেষ জুমআ কে জুমআতুল বিদা বলা হয়ে থাকে। রমজান মাসের শেষ শুক্রবার জুমআতুল বিদা হিসেবে প্রসিদ্ধ লাভ করে। রমজান মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিশেষ নেয়ামতের মাস। এ মাসে আল্লাহ তায়ালা তাঁর অসংখ্য অগুনিত গুনাহগার বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস মাহে রমজান। তাই এ মাসের শেষ শুক্রবারকে মুসলমানগণ একটু আলাদা ভাবেই দেখে থাকেন। যদিও রমজানের অথবা সকল জুমআর জন্য একই হুকুম ।

তথাপিও রমজান মাস মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিশেষ মেহমান স্বরূপ মাস। তাই এ মাসের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা বা আদব বজায় রাখা হয়েছে কিনা এজন্য জুমআতুল বিদায় মানুষের মনে একটা আক্ষেপ কাজ করে, হায়! রমজান আসলো আবার চলে যাচ্ছ।

আজ রমজানের শেষ জুমআ। আমাদের ক্ষমা করা হয়েছে কিনা জানিনা। আমরা লাইলাতুল ক্বদর পেয়েছি কিনা জানিনা। তাই আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ক্ষমা চেয়ে নেয়ার এখনই মহান সুযোগ। এ অনুভূতি রমজানের শেষের দিকে ফয়দা হয়, বিশেষভাবে রমজানের শেষ জুমআতে।

হযরত কা’ব বিন আজরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- হযরত রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ হে সাহাবীগণ! তোমরা মিম্বরের নিকট উপস্থিত হও। এতদশ্রবণে আমরা তথায় উপস্থিত হলাম। তিনি যখন মিম্বরের প্রথম সিঁড়িতে আরোহণ করলেন তখন তিনি বল্লেন- “আমীন”। অতঃপর দ্বিতীয় সিঁড়িতে আরোহণ করে বল্লেন, “আমীন”। তারপর তৃতীয় সিঁড়িতে আরোহণ করে বল্লেন, “আমীন”। যখন তিনি মিম্বর হতে অবতরণ করলেন, আমরা আরজ করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! অদ্য আপনার থেকে এমন কথা শুনতে পেলাম যা আমরা ইতিপূর্বে কখনো শুনতে পাইনি তিনি বল্লেন, হযরত জিব্রাঈল (আঃ) আমার নিকট এসে বল্লেন: ঐ ব্যক্তি আল্লাহ পাকের রহমত থেকে দূরীভূত যে রমজান মাস পেলো অথচ তাকে ক্ষমা করা হয়নি। এ শুনে আমি “আমীন” বলেছি। যখন আমি ‎‫ মিম্বরের দ্বিতীয় সিঁড়িতে আরোহণ করি তখন তিনি বল্লেন, ঐ ব্যক্তি হতভাগা যার নিকট আমার কথা উল্লেখ করা হলো অথচ আমার প্রতি সালাত পাঠ করলোনা। আমি শুনে বল্লাম “আমীন”।

আমি যখন তৃতীয় সিঁড়িতে আরোহণ করি তখন তিনি বল্লেন, ঐ ব্যক্তি নৈরাশ হলো যে তার মাতা-পিতার উভয়কে বা কোন একজনকে পেলো কিন্তু তাঁরা তাকে জান্নাতে প্রবিষ্ট করতে পারলোনা। আমি শুনে বল্লাম, “আমীন”। (হাকিম)

এ হাদিসের আলোকে আমরা রমজানের অন্যতম একটি বিষয় অবগত হলাম যে, রমজান মাস পাওয়ার পরও গুনাহ ক্ষমা না পাওয়ার ভয়াবহতার কথা জানলাম। তাই জুমআতুল বিদা রমজান শেষের ইঙ্গিত দেয়। তাই আমরা আমাদের গুনাহ থেকে মহান আল্লাহর কাছে কায়মনো বাক্যে ক্ষমা চেয়ে নিবো, যাতে করে আমাদের গুনাহ ক্ষমা হয়ে যায়।

কারণ রমজানের অসাধারণ সওয়াব ও গুনাহ মাফের কথা আমরা জানি।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, হযরত রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- যে ব্যক্তি পূর্ণ বিশ্বাসের সাথে ছওয়াবের আশায় রমজান মাসের রোজা রাখবে আল্লাহ পাক তার অতীতের সমস্ত গুনাহরাশি ক্ষমা করে দিবেন এবং যে ব্যক্তি পূর্ণ ঈমান-আকীদার সাথে ও ছওয়াবের আশায় রাত জাগরণ তথা তারাবীহের নামাজ পড়বে আল্লাহ পাক তার অতীতের সমস্ত পাপরাশি মাফ করে দিবেন আর যে ব্যক্তি পূর্ণ ঈমান ও বিশ্বাসের সাথে ক্বদরের রাত জাগরণ তথা ইবাদত-বন্দেগী করবে আল্লাহ পাক তার অতীতের কৃত অপরাধসমূহ মাফ করে দিবেন। (বুখারী ও মুসলিম শরীফ)

উক্ত সাহাবী হতে বর্ণিত আছে, হযরত রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- যে ব্যক্তি ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও মিথ্যা আচার ও আমল ছাড়লনা তার পানাহার ত্যাগ করে রোজা রাখায় আল্লাহ পাকের কোন সন্তুষ্টি নেই।

উক্ত সাহাবী হতে বর্ণিত, হযরত রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‬‎ (কিছু সংখ্যক রোযাদার এমন আছে যাদের রোযায় তৃষ্ণা ব্যতীত আর কিছু লাভ হয়না (অর্থাৎ ‘রোযা অবস্থায় গুনাহের কাজ করে)। আর এমন কতিপয় নৈশ নামাযী জাগরণকারী আছে যাদের নামায দ্বারা রাত জাগরণ ব্যতীত আর কিছুই নসীব হয়না (অর্থাৎ (সে তার রাত্রিকালীন নামায সম্পর্কে মানুষকে জানায়) (দারামী শরীফ)

হযরত সহল বিন সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত, হযরত রাসূলে পাক‎‫ ‎‫ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- বেহেশতের মোট আটটি দরজা আছে। তন্মধ্যে একটির নাম হলো রায়্যান। ঐ দরজা দিয়ে একমাত্র রোজাদারগন বেহেশতে প্রবেশ করবেন। (বুখারী ও মুসলিম শরীফ)

এতটি আত্মসমালোচনা : রমজানের সকল নামাজ, রোযা করব। দোয়া - দুরুদ, মিলাদ - মাহফিল, কুরআন তিলাওয়াত করব।যাতে আল্লাহ তায়ালা আমাদের নামাজ, রোযা ও ইফতার কবুল করেন।

লেখক : মুফতি মুহা. আবু বকর বিন ফারুক

খতিব, বিষ্ণুপুর মনোহরখাদী মদিনা বাজার বাইতুল আমিন জামে মসজিদ

পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক : বিসমিল্লাহ মডেল মাদ্রাসা, চাঁদপুর সদর, চাঁদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়