বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩১

‘জয়ধ্বনি’র রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত জয়ন্তী উদ্যাপনে জমজমাট এক সন্ধ্যা

সংস্কৃতি অঙ্গন প্রতিবেদক
‘জয়ধ্বনি’র রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত জয়ন্তী উদ্যাপনে জমজমাট এক সন্ধ্যা

‘তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা’ এই অনন্য স্লোগানকে ধারণ করে চাঁদপুরের সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান জয়ধ্বনি সংগীত বিদ্যায়তন আয়োজন করেছিলো এক হৃদয়গ্রাহী সন্ধ্যা-- রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত জয়ন্তী ২০২৫।

গত ১৬ জুন ২০২৫, সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় এ বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় এবং গভীর আলোচনায় সাজানো এই উৎসব যেন হয়ে উঠেছিলো সংগীত, সাহিত্য ও সংস্কৃতির এক মিলনমেলা।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিদ্যায়তনের অধ্যক্ষ ও বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী সুদীপ কর তন্ময় এবং সভাপতিত্ব করেন জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তাপসী রাণী ভৌমিক।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফুর রহমান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত জামিল সৈকত, আর প্রধান আলোচক ছিলেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. সাইদুজ্জামান।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মাহামুদ হাসান খান এবং চাঁদপুরের সংস্কৃতি অঙ্গনের বরেণ্য শিল্পীবৃন্দ ও সংগঠকরা।

শুভেচ্ছা বক্তব্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন অধ্যক্ষ সুদীপ কর তন্ময়। এরপর একশোর অধিক শিক্ষার্থী কিশোর, কিশোরী ও প্রাপ্তবয়স্ক শ্রেণির একক ও দলীয় পরিবেশনায় উপস্থাপন করেন থিম সং, আবৃত্তি এবং নজরুল ও রবীন্দ্র সংগীত।

একক পরিবেশনায় মুগ্ধ করেন অনন্যা দেব, সঞ্চিতা কর, রূপকথা মজুমদার, শ্রেষ্ঠা চক্রবর্ত্তী, মৃত্তিকা ধর, বিধান চন্দ্র দাস, সুমিতা পাল ও পার্বতী চক্রবর্ত্তী।

বিশেষ সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের খ্যাতিমান কণ্ঠশিল্পী সুদীপ কর তন্ময়।

সংগীত পর্ব শেষে শুরু হয় সাহিত্য আলোচনার অধিবেশন। এতে প্রধান আলোচক মো. সাইদুজ্জামান তাঁর জ্ঞানগর্ভ বক্তব্যে তুলে ধরেন রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ও সুকান্তের সাহিত্যচেতনা ও সমাজদর্শনের গভীরতা। তরুণদের মাঝে সাহিত্য ও মূল্যবোধ গঠনে এ তিন কবির প্রভাব ব্যাখ্যা করেন সাবলীলভাবে।

মাহামুদ হাসান খান বলেন, জয়ধ্বনি আজ শুধুই একটি সংগীত বিদ্যায়তন নয়, এটি হয়ে উঠেছে একটি আন্দোলন, সংস্কৃতি চর্চার সংগ্রামে এক নির্ভরযোগ্য নাম।

সাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, সন্তানদের সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে পারলে সমাজ হবে আলোকিত, আর তারা নিজেরাই গড়ে তুলবে একটি সভ্য বাংলাদেশ। জয়ধ্বনির সাফল্য কামনা করে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের প্রশংসা করেন অকপটে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফুর রহমান বলেন, জয়ধ্বনির ভাবনা ও কর্মকাণ্ড সময়োপযোগী এবং সমাজের আলোকবর্তিকা হয়ে উঠছে। সংস্কৃতির বিকাশে পুলিশের পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতা থাকবে। সমাজে পুলিশ সম্পর্কে যে নেতিবাচক ধারণা প্রচলিত, আমরা তা সংস্কৃতির মাধ্যমেই ভাঙ্গতে চাই। আলোচনা শেষে অতিথিদের বই উপহার প্রদান করা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে তাপসী রাণী ভৌমিক জয়ধ্বনির সকল শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অতিথিদের ধন্যবাদ জানান এবং প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। রাত ১০ টা ৪৫ মিনিটে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়