প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
পীষূষ কান্তি বড়ুয়া। একজন সমাজ সচেতন মানুষ হিসেবে আমি তাঁকে জানি। যতদিন যাচ্ছে তাঁর সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রও ততটাই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক। কিন্তু একজন সাধারণ মানুষ প্রথম দেখায় তাঁকে মনে করবে তিনি একজন সব্যসাচী লেখক, কখনো বা একজন সংগঠক, কখনো একজন উন্নয়নকর্মী, সমাজ গবেষক, শিক্ষক আবার কখনো বা দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের একজন সুচিন্তিত অক্লান্ত কর্মী হিসেবে।
একজন মানুষ সমাজের কতগুলো দিকে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে বা অবদান রাখতে পারে?--একটি, দুটি বা তিনটি। কিন্তু এই মানুষটির বিচরণ সমাজের সর্বত্র। আমি তাকে পানির সাথে তুলনা করতে চাই। পানি যেমন যে পাত্রে রাখা যায় ঠিক সে পাত্রের আকার ধারণ করে, তেমনই এই মানুষটি সমাজের যে কোনো প্রয়োজনে নিজেকে অনায়াসে মানিয়ে নিতে পারেন। চিকিৎসক পেশাটি আমার পারিবারিক সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এজন্যেই জানি, একজন চিকিৎসক নিজ পেশার প্রতি নিজেকে উৎসর্গ করার কারণে এর বাইরের জগতের সাথে সাধারণত নিজেকে আর জড়াতে চান না। এদিক থেকে সবার পরিচিত পীযূষ দা নিজেকে বৃত্তে বন্দি রাখেননি। খুব সচেতনভাবে নিজেকে এ বৃত্ত থেকে বের করে এনেছেন। তিনি যেনো সমাজের একজন মুক্ত বিহঙ্গ।
চাঁদপুরের সামাজিক, সংস্কৃতি অঙ্গন, শিক্ষা, সরকারি, বেসরকারি সকল ক্ষেত্রেই তাঁর অবাধ বিচরণ। আমি তাঁকে একজন গবেষক ভাবি। কারণ তিনি যে কোনো বিষয়ের অনেক গভীরে যেতে পারেন অনায়াসে এবং অনায়াসেই তাঁর শৈল্পিক প্রকাশও ঘটাতে পারেন। তিনি একজন শব্দসৈনিক। শব্দের শৈল্পিক ব্যবহার তাঁর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। শব্দের অনায়াস বহুমুখীকরণে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। ডাঃ পীযূষ ও প্রকৃতি যেনো একসূত্রে গাঁথা। অনুপম প্রকৃতিকে তিনি দেখেন একান্ত আপন করে, অত্যন্ত সুনিপুণভাবে। আমার মনে হয় তিনি যেনো ইলিশ পরিবারের একজন। ইলিশের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এবং ইলিশের সুরক্ষায় তাঁর মনের আকুতি ফুটে ওঠে তাঁর লেখা ‘ইলিশের বাড়ি’ নামক ছড়াগ্রন্থে।
‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’ ব্র্যান্ডিং কার্যক্রমে যে ক’জন অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন তিনি তাঁদের একজন। একটি স্বাধীন, দুর্নীতিমুক্ত এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সনাক প্লাটফর্মে টিআইবির সাথে যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে সর্বস্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা এবং সুশাসনের চাহিদা গড়ে তুলতে ২০০৫ সাল থেকে যে ক’জন শ্রদ্ধাভাজন, নিঃস্বার্থ, নির্ভীক ও নিবেদিতপ্রাণ মানুষ কাজ করছেন তিনি তাঁদেরই একজন। পরিবার ও সমাজের প্রতি অশেষ মমতায় দায়িত্বশীল এ মানুষটির ৫০তম জন্মবার্ষিকী ১০ অক্টোবর ২০২৩। অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও শুভ কামনা দাদার প্রতি। সমাজের ক্ষুদ্র অংশের জন্যে নয়, সৃষ্টিকর্তা তাঁর আপন মহিমায় দীর্ঘকাল বাঁচিয়ে রাখুন সমাজ, দেশ ও প্রকৃতির সেবায়।
লেখক : এরিয়া কো-অর্ডিনেটর, টিআইবি, চাঁদপুর।