প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
বাংলাদেশের মধ্যে মফস্বল শহরে জন্ম নেয়া কোনো সাংস্কৃতিক সংগঠন ৪০ বছর পূর্তি করে গৌরব ও ঐতিহ্য নিয়ে টিকে থাকার বিরল রেকর্ড অর্জন করেছে চাঁদপুরের অন্যতম সাংস্কৃতিক সংগঠন চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠন। শুধু টিকে থাকার লড়াই নয়, সংগঠনটি এখন মফস্বল থেকে জাতীয় পর্যায়ে পর্যন্ত কুড়িয়েছে ব্যাপক সুনাম। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি ধরে রেখেছে সংগঠনটির অতীত ঐতিহ্য ও সুনাম। দেশের ইতিহাসের পাতায় নাম লেখিয়েছে এ সংগঠনটি জাতীয় মাছ বা মাছের রাজা ইলিশ উৎসবের আয়োজন করে।
ইলিশ ধীরে ধীরে যখন হারিয়ে যাচ্ছে, তখন এই সংগঠনটির ব্যানারে দীর্ঘ ১৪ বছর যাবৎ করা হচ্ছে ইলিশ উৎসব। সময়ের প্রয়োজনে যেটিকে জাতীয় উৎসব করার দাবি করা হচ্ছে। এই উৎসবের প্রথম থেকে অদ্যাবধি একজন ব্যক্তিই আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন, তিনি হলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক রোটাঃ কাজী শাহাদাত পিএইচএফ। সংগঠনটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন চেয়ারম্যান অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার (প্রখ্যাত আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ) আর মহাসচিব (ইলিশ উৎসবের রূপকার হিসেবে খ্যাত) হারুন আল রশীদ।
৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ‘সংস্কৃতি অঙ্গনে’
চতুরঙ্গের জন্ম ইতিহাস তুলে ধরেছেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব হারুন আল রশীদ। তাঁর জবানিতে সে ইতিহাস নিম্নরূপ :-
যেভাবে চতুরঙ্গের পথচলা
বয়সটা ছিলো তরুণ। দেখতে খারাপ ছিলাম না। বন্ধুরাও ছিলো এই শহরে বেশ পরিচিত। বিভিন্ন কারণে সবাই আমাদেরকে চিনতো। অন্যদের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন ছিলাম আমি। শুরুতেই খেলাঘর, ’৭৯ সালে বর্ণচোরা নাট্যগোষ্ঠীর সাথে জড়িত ছিলাম। ভালোবাসার কারণে কত যে মাতৃপীঠ স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম তাহমিনার জন্যে, কতবার যে আবু আপা আর নূর খান স্যারের ধমক শুনেছি, কত যে তারা বেত নিয়ে গেটের সামনে তেড়ে এসেছেন, সেটা অনেক বড় গল্প। আপাতত থাক।
১৯৮১ সালের ৮ ডিসেম্বর বিয়ের পর শ্বশুরের দেয়া অপহরণ মামলা হতে পরিত্রাণ পেয়ে নিজ বাসায় অবস্থান করে আসছিলাম। একদিন অজয় দার ডাকে তাহমিনাকে নিয়ে শিল্পকলায় সরকারি অনুষ্ঠানের গানের মহড়ায় যাই। গোলাম মোস্তফা রতন, গোলাম রসূল হীরন, তাহমিনা হারুন, হেনা এক্সপ্রেসের মালিক আমজাদ হোসেন সাহেবের মেয়ে শারমীন হোসেন সকলেই ওই সময়ে চাঁদপুরের উল্লেখ করার মতো শিল্পী। তারপরও ওরা ছিলো অবহেলিত। একক গানের সুযোগ না পাওয়া, কোরাসে সামনের সারিতে না রাখা, পেছনের সারিতেও তাদের মুখের সামনে মাইক না দেয়া। সাম্প্রদায়িক কারণে ওই সময় কতিপয় মানুষ (সবাই না)-এর ধর্মীয় বৈষম্য ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন দেখে আমি কিছুটা মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হই। সেই থেকে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন খোলার ইচ্ছা আমাদের ক’জন বন্ধুর মাঝে ভীষণভাবে তাগিদ দেয়।
১৯৮৩ সালের ১৫ মে আমি, অজিত মজুমদার, উত্তম রায় বাবু, কে. এম. শওকত, জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া, বেলাল ভূঁইয়া, পুরাণবাজার দাসপাড়ার নির্মল দাস, রতন ধর, তাপস মুখার্জী, বিশ্বজিত রায়, রতন বর্ধন, নিজাম ও বিকাশ মজুমদার সহ আরো কয়েকজন মিলিত হলাম।
সেই সময় চতুরঙ্গের মৌলিক অর্থ না বুঝেই নাম দিয়েছিলাম। জাতীয় পত্রিকা ইত্তেফাকে চতুরঙ্গ নামে একটি পৃষ্ঠা কয়েকদিন পর পর বের হতো। ওই থেকেই মূলত চতুরঙ্গ নাম দেয়া। যা সম্পূর্ণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী একটি অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে এবং চলমান থাকবে বলে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।
১ম অভিষেক অনুষ্ঠান
চাঁদপুর শহরের চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের সম্মুখস্থ কেজি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুরঙ্গের প্রথম পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। অভিষেক অনুষ্ঠানের স্থান নির্ধারিত হয় টাউন হলে। দাওয়াত কার্ডে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান লেখা থাকলেও সে সময় কোনো শিল্পী আমাদের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে গান না গাওয়ার বিষয়ে মত প্রকাশ করেন।
তাহমিনার অনুপ্রেরণায় আমরাই মুখার্জী কোয়ার্টারে পূর্ণিমা হোটেলে মহড়া শুরু করে দেই। আমাদের উৎসাহ দেন এবং আমাদের প্রথম অনুষ্ঠানে গান করেন ওই সময়ের জনপ্রিয় শিল্পী ‘কম্পন’ নামক সাংস্কৃতিক সংগঠনের আইয়ুব খান (বর্তমানে মরহুম) ও অ্যাডঃ দেবাশীষ কর মধু।
যুক্ত হন সাহা বাড়ির ডলি সাহা, অসীমা সাহা ও বিনয় দার ভাগ্নি অঞ্জনা আইচ। চতুরঙ্গের শিল্পীরা পুরো শহরে বেশ জনপ্রিয় হতে শুরু করলো। আস্তে আস্তে জেলার প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমরা অনুষ্ঠান করতাম।
সেই সময়ে ‘কম্পনে’ কিছুটা ভাটা পড়ায় উক্ত প্রতিষ্ঠানের কিছু বাদ্যযন্ত্রাদি কম্পন-এর সভাপতি মরহুম অ্যাডঃ হযরত আলী (জোড়পুকুর পাড়ে বাসা) আমাদের উপদেষ্টা হওয়ার সুবাদে দিয়ে দেন। পুরানো ড্রামসেট, কঙ্গো, বঙ্গ, জিপসী আমাদের হাতে তুলে দেন। এতে চতুরঙ্গের সাংস্কৃতিক পথচলা আরো বেগবান হয়।
১৯৮৬ সালের পর কমরেড অজিত সাহা, তাঁর সহধর্মিণী কৃষ্ণা সাহার সংগঠন বিবর্তন শিল্পী গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড কিছুটা স্থবির হয়ে পড়ে। আমাদের অনুপ্রেরণায় অজিত দা, মেজদি (কৃষ্ণাদি), তার ছোট বোন কণ্ঠশিল্পী প্রয়াত রীনা চক্রবর্তী তাদের পরিবারের সাথী সাহা, লাকী সাহা, ঝিরি সাহা, মিছিল সাহা সহ সকলেই চতুরঙ্গের পরিবারে যুক্ত হয়ে যান।
১ম সভাপতি আমার বন্ধু জাসদ ছাত্রলীগের নেতা কে. এম. শওকত (ব্যাংকার)-এর পরই আসে ওই সময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা, জনপ্রিয় উপস্থাপক, অভিনেতা মাহবুব আনোয়ার বাবলু। তাঁর সক্রিয়তা সংগঠনকে আরো জনপ্রিয় ও গতিশীল করে তোলে।
আমার এই লেখায় আজ একজন আলোকিত মানুষের কথা বলবো, তাঁর বড় ভাই কাজী নজরুল ইসলাম এক সময়ে আমার ভীষণ ভালো বন্ধু ছিলো। সংস্কৃতিমনা সেই কাজী নজরুল গানও করতো আমাদের সাথে। তাঁরই ভাই কাজী শাহাদাত নির্ঝর সাহিত্য চক্র করে অল্প সময়ে চাঁদপুরের সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনে বেশ পরিচিত হতে শুরু করলেন।
১৯৮৬-এর শিল্পকলা একাডেমির পক্ষকালব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসবের স্মরণিকার সকল বাণী লেখার মধ্য দিয়ে তাঁর প্রতিভার প্রতি সম্মান জানিয়ে ওই সময়ের শিল্পকলা একাডেমির সম্পাদক অজয়দার খুব স্নেহভাজন হয়ে গেলেন কাজী শাহাদাত।
একটা কথা আমি বলবো, সাহিত্য একাডেমী প্রতিষ্ঠার পেছনে প্রতিটি ইট-বালুর সাথে কাজী শাহাদাতের স্মৃতি জড়িত। অধ্যাপক কবি খুরশেদুল ইসলাম স্যার সেই সময়ে কাজী শাহাদাতের মত শিষ্য পাওয়ার সুবাদেই আজকের এই সাহিত্য একাডেমীর এই ভবন। সাহিত্য একাডেমীর সেই সময়ের ষড়যন্ত্রের কথা বাদই দিলাম। তারপরও কিছুটা বলতে হয়, তুষের আগুন হঠাৎ করে নিভে যায় না, তা আস্তে আস্তে জ্বলতেই থাকে। প্রতিভা চাপা পড়ে না, বিস্ফোরণ ঘটায়। কাজী শাহাদাতের আজকের অবস্থান সেটাই প্রমাণ করে।
পর্যায়ক্রমে আরেকজন মানুষ আমাদের খুব প্রিয় হয়ে উঠেন। তিনি চতুরঙ্গের সভাপতির দায়িত্ব নেন। জনপ্রিয় রেডিও, টিভি উপস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম খান। চতুরঙ্গ তাঁর কাছে এবং তাঁর সহধর্মিণী শরিফা সুলতানা মিতু ভাবীর কাছে অনেক কৃতজ্ঞ।
আরেকজন মানুষ প্রতিষ্ঠার পর হতে কখনো উপদেষ্টা, কখনো চেয়ারম্যান হিসেবে এখন পর্যন্ত আমাদের সাথে আছেন। তাঁর শ্রম, মেধা, বুদ্ধি, চিন্তা, সহযোগিতা চতুরঙ্গকে আগের চেয়ে আরো গতিশীল করেছে। তিনি আমাদের অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার। অসুস্থতা নিয়ে এখনও আমাদের মাঝে আছেন, আমরা তাঁর সুস্থতা কামনা করছি।
১৯৮৬ সালে আমার আরেক বন্ধু, চতুরঙ্গ করতে এসে যার সাথে আমার নিবিড় সম্পর্ক হয়ে উঠে, নিজাম উদ্দিন আহমেদণ্ডএর সম্পাদনায় বিজয় দিবসে ‘ধূমকেতু’ নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা বেগম মসজিদের নিকটস্থ কামাল প্রিন্টার্স হতে বের করি। ওই প্রকাশনার কারণে আমরা কাজী শাহাদাতের খুব কাছে চলে আসি। কামাল প্রিন্টার্সের মালিক ছিলেন আলী আকবর ভাই। হাসিমাখা কালো সেই মানুষটাকে অনেকদিন দেখিনি। আছে কি নাই সেটাও জানি না। ওই মানুষটির প্রতিও আমাদের কৃতজ্ঞতা রইলো।
চতুরঙ্গের প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্নের অনেকেই আজ নেই। চতুরঙ্গের শুরু হতে যে মানুষটি নীরবে সবচেয়ে বেশি আমাকে উৎসাহ দেন, সবচেয়ে বেশি কষ্ট করেন, উৎসব হলে অনেক লোকের রান্না করা, সবকিছু সেরে আবার সংগীতের বিচার কাজ করা, উৎসবে গান গাওয়া, কারণে-অকারণে বিভিন্ন সময়ে আমার প্রতি অভিমান থাকলেও এক সময় ভুলে যান।
এক সময় হয়তো ভাবেন আমিই তার কাছে ভীষণ আপন। তাহমিনা হারুন আমার সহধর্মিণী সেই হিসেবে নয়, সে চতুরঙ্গের জন্যে কতোটা নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন সেটা অন্যরাও বলবে। তার দুই সঙ্গী সীমান্ত রশীদ ও অনন্ত রশীদকে নিয়ে সময়টা তার ভালোই কাটছিল। আজ সেই তাহমিনা আমাকে ছেড়ে হারিয়ে গেছেন চিরতরে, তাঁর স্মৃতি প্রতিনিয়ত আমাকে কাঁদায়।
আমার পরিবারে তাহমিনার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন কণ্ঠশিল্পী নীলিমা হারুন অনু সে। বাংলায় অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে সংগীতে মাস্টার্স করছেন। ২০২২-এ চতুরঙ্গের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ১৪তম ইলিশ উৎসবে সংগঠক হিসেবে তার যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন। ঐ বছরই অনেক গুণী শিল্পী উৎসবে আসে, সাংগঠনিক দক্ষতা তার মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে, তার প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
আমার অনেকের সাথে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে। প্রতিটি ক্ষণে কারো আপন হয়েছি, আবার কেউ পর ভেবে দূরেও সরিয়েছে। একটা মানুষের সাথে আমি এখনো সংগঠন করছি। তার সাথে আমার একটি পারিবারিক সম্পর্ক। কারণ কথায় বলে, যে সবচেয়ে আপন সে থাকে বরযাত্রী+শবযাত্রী। আমি তাঁর প্রথমটার যাত্রী ছিলাম, ২য় টার যাত্রী হওয়ার বাসনা নেই। দীর্ঘ পথচলায় বহুবার ঝগড়া হয়েছে, মাঝেমধ্যে কিছুদিন কথাও বন্ধ থাকে, আবার কাজ করি এবং কথা বলা শুরু হয়। আমার খুব কাছের মানুষ শহীদ পাটোয়ারী। চতুরঙ্গের অনেক কর্মকাণ্ডে নীরবে দায়িত্ব নিয়েছেন। তার জন্যে শুভ কামনা।
এই দিনে ভীষণভাবে স্মরণ করছি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে আমার মরহুম বাবা আবদুল আউয়াল (সাবেক নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান, বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ)-এর অবদানের কথা। সংগঠন করতে এসে তাঁর অনেক টাকা-পয়সা নষ্ট করেছি। যখন রাগ করে দেননি, গোপনে পকেট থেকে নিয়েছি। সেটাকে চুরি বলে কিনা আমি জানি না।
আমার বাবা তৎকালীন ইউনিয়ন সংগ্রাম কমিটির সদস্য ও আওয়ামী লীগের সংগঠক হিসেবে ’৭১ সালে পাক আর্মির হাতে নির্যাতিত হন। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতার কারণে দুইবার রাজাকার আয়াত উল্লার হাতে পাকিস্তানি ক্যাম্পে নির্যাতিত হয়েছেন।
অমাবস্যা এবং পূর্ণিমা আসলে আমার বাবাকে ব্যথায় চিৎকার করতে দেখতাম। বাবা আজ নেই। আল্লাহ যেনো পরকালে তাঁকে শান্তিতে রাখেন। ইচ্ছা ছিলো ১১নং ওয়াডে তাঁর কবরের একটু দূরেই পৈত্রিক বাড়িতে ছোট একটি বাড়ি করার, শহরের আদালত পাড়ায় নিজেদের বাসায় মা, ভাইদের রেখে আমি বর্তমানে নিজ বাড়িতেই বসবাস করি, সেই ইচ্ছাটাও আমার পূরণ হয়েছে।
১৯৮৩ হতে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত, বিশেষ করে ২০০৬ হতে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ চাঁদপুরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে হ্যাটট্রিক সাংস্কৃতিক উৎসব করার গৌরব অর্জন, দেশে যখন সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে ঐ সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি উৎসব ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠান করার দাবি রাখে একমাত্র চতুরঙ্গো।
২০০৯ হতে ২০২২ পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ১৪টি ইলিশ উৎসবের মধ্য দিয়ে চাঁদপুরে জাতীয় পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জেলা প্রতিনিধি, জেলার সকল স্থানীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকা চতুরঙ্গকে সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত করে তুলেছে। সে সকল সাংবাদিক বন্ধুকে অনেক শুভেচ্ছা।
আমার জীবনের বহু কর্মকাণ্ডের সারথি আমার বেয়াই মরহুম ইয়াহিয়া কিরনের শূন্যতা আমাকে অনেক পিছিয়ে নিয়েছে, সেই মানুষটাও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে, তাঁর পরিবার সুমী ভাবি, পলাশ, সুহাস ও পলিন আমাদের সাথে চতুরঙ্গের পরিবারে যুক্ত আছেন। কিরন ভাইয়ের শূন্যতা আমাকে হতাশ করে দিয়েছে, আল্লাহ তাঁকে জান্নাতবাসী করক।
চতুরঙ্গের পথচলায় আজ বেশি করে মনে পড়ছে আমার সংস্কৃতির অভিভাবককে। আমাকে ছোট ভাইয়ের চেয়ে খুব বেশি স্নেহ করতেন। তিনি চাঁদপুরের অনেকের সাংস্কৃতিক অভিভাবক এবং সংগীতগুরু প্রয়াত শীতল ঘোষাল। মাঝে মধ্যে অভিমান করে কথা বলতেন না, আবার কথার মাধুরী দিয়ে কাছে টেনে নিতেন। হঠাৎ করেই আমার পরিবারের চোখের সামনে তিনি সেন্ট্রাল হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন। আমি, তাহমিনা, শান্তু, শাওন ছাড়া আর কেউ ছিলো না ওই সময়। তুলি এবং বিপ্লব ঔষধ আনতে গিয়েছিলো। ওই স্মৃতিটাই আমার কাছে এখনো দৃশ্যমান।
নারায়ণগঞ্জের ২ ভাই আমজাদ হাসান (ইলিশ উৎসবের সূচনা সংগীতের সংগীত পরিচালক) ও মাসুদ হাসান। তারা দু’জনেই চতুরঙ্গের বহু অনুষ্ঠানে এসে অনুষ্ঠানকে সমৃদ্ধ করেছেন। মাসুদ ভাই আজ নেই, অনেক আগে ভাবীর সাথে ফোনে কথা হয়েছে, তার মেয়ের নাম গল্প। গল্পের মতই মাসুদ ভাই আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন। মাসুদ ভাইয়ের সহধর্মিণী ও তার তিন কন্যার জন্যে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা রইলো, পাশাপাশি আমজাদ ভাইয়ের বউ ডলি ভাবির প্রতিও কৃতজ্ঞ, ইলিশ উৎসবের ভোকাল দিতে এসে রমজান মাসে আমাদের আপ্যায়ন করেছেন।
আমাদের এক সময়ের সহযাত্রী কণ্ঠশিল্পী অসীমা সাহা আজ নেই। বাংলাদেশের বহু জায়গায় চতুরঙ্গের হয়ে অনেক অনুষ্ঠানে গান করেছেন। অসীমা, অনিমা, বিরু ওরা সকলেই চতুরঙ্গের হয়ে অনেক কাজ করেছেন, সহযোগিতা করেছেন। পরবর্তীতে হিমুদা (বর্তমানে প্রয়াত) এবং তার বড় ভাই প্রয়াত বাদলদা চতুরঙ্গের অনেক কর্মকাণ্ডের সহযাত্রী ছিলেন। খুব বেশি মনে পড়ে চতুরঙ্গের উপদেষ্টা প্রয়াত অজিত কুমার মুকুল, প্রয়াত অ্যাডঃ হরিপদ চন্দ, প্রয়াত রীনা চক্রবর্তী, প্রয়াত উত্তম রায় বাবু ও মরহুম মাহাবুবুর রহমান ও শিপু তালাকদুরকে।
বিশেষ ভাবে স্মরণ করছি
আমার শৈশবের বন্ধু চাঁদপুর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান চতুরঙ্গের উপদেষ্টা মরহুম শফিকুর রহমান ভুইয়া ও তাঁর স্ত্রী জেসমিন আকতার জলি (তাহমিনা হারুনের স্কুল বান্ধবী) চতুরঙ্গের এক সময়ের উপদেষ্টা, মরহুম শফিকুর রহমান ভুইয়ার বড় মেয়ে শারমীন আকতার জুঁই এখনো চতুরঙ্গের সকল কর্মকাণ্ডে নিয়মিত জড়িত থেকে আমাদের সহযোগিতা করছেন।
জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও দেশের মায়ায় কণ্ঠশিল্পী ইতু চক্রবর্তী (ইতুদি) চতুরঙ্গের সহযাত্রী হয়েছেন, তাঁর যোগদানে আমরা বেশ গর্বিত।
সাংস্কৃতিক জগতে আমাদের পরিবারের পছন্দের রূপালী দি (গুণী শিল্পী) শরীরে জ্বর নিয়ে, গায়ে চাদর জড়িয়ে বহু অনুষ্ঠানে তাহমিনার সাথে হারমোনিয়াম সংগত করেছেন, অনুষ্ঠানের পূর্বে তাহমিনা কে বাসায় নিয়ে ছোট বোনের মতো সাজিয়ে অনুষ্ঠানে নিজের সাথে নিয়ে আসতেন-দিদি ও চম্পকদা কে শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
সংকটময় মুহূর্তে রাজনীতিবিদ আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারী ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা লেঃ এম. এ. ওয়াদুদ (অবঃ), আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটোয়ারী, অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান, অ্যাডঃ জাফর ইকবাল মুন্না, অ্যাডঃ সাইফ উদ্দিন বাবু, এএইচএম আহসান উল্লাহ আমাদের পাশে ছিলেন সবসময়।
কোনো তথ্য ও পরামর্শের জন্যে দিনে ও অধিক রাতে ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়াকে প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনে বিরক্ত করি। এ মানুষটি এবং মুক্তা পীযূষ তাদের প্রতিও চতুরঙ্গ বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।
স্থানীয় প্রশাসন চতুরঙ্গের ইলিশ উৎসবকে জাতীয় উৎসব হিসেবে ঘোষণা দেয়ার জন্যে মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করে (২০১২-২০১৪)। আমরা মনে করি, এ গৌরব সমগ্র চাঁদপুরবাসীর। একজন সংস্কৃতি কর্মী হিসেবে মাননীয় মন্ত্রী, মাননীয় সদর আসনের এমপি, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন-এর প্রতি অনুরোধ, আপনাদের এ সময়ে এটি জাতীয় উৎসবের স্বীহতি লেলে সংস্কৃতির ইতিহাসে আপনাদের নাম কালজয়ী হয়ে থাকবে।
আমার খুব স্নেহের জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত গীতিকবি কবির বকুল দীর্ঘ সময় চতুরঙ্গের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন। চতুরঙ্গের সূচনা সংগীত বকুল ১৯৯০ সালে লিখেছেন ও সুর দিয়েছেন, তার সহধর্মিণী কণ্ঠ শিল্পী ও টিভি উপস্থাপিকা দিনাত জাহান মুন্নী সেও ছোটবেলা হতে অনেক সময় চতুরঙ্গের সহযাত্রী ছিলেন। তারা দুজনই আমার সাথে চতুরঙ্গ ও অনন্যা নাট্য গোষ্ঠীর সাথে গান ও অভিনয় করেছে। বকুলের সাথে আমাদের অনেক স্মৃতি। তাঁর সাফল্যে আমরা খুবই আনন্দিত।
সংকটময় এবং সুসময়ে উপদেষ্টা হিসেবে যারা চতুরঙ্গের পরিবারকে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে এসেছেন তাদের মধ্যে রোটাঃ মোঃ শবে বরাত, ইয়র্ক ফ্যাশন বিসিক-এর পরিচালক মোঃ সেলিম খান, জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত সমবায়ী মোঃ জসীম উদ্দিন শেখ, মোঃ আলমগীর হোসেন বাহার, রোটাঃ তোফায়েল আহভম্মেদ শেখ, জয়নাল আবেদীন জনু, পরেশ মালাকার ও ছোট ভাই তরুণ ব্যবসায়ী মোঃ কালাম আহমেদণ্ড- তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা।
কষ্টের একটি স্মৃতিচারই করতে চাই আজ। আমার আপন ছোটভাই এক সময়ের তুখোড় ড্রামবাদক ও কন্ঠ শিল্পী বদিউল আলম ভুট্টো (বর্তমানে কিছুটা মানসিক ভাবে অসুস্থ), চতুরঙ্গের বহু অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন, শহরের বিভিন্ন দেওয়ালে একা দাঁড়িয়ে শুধু কোন এক অচেনা রমণীর ছবি আঁকে-আমরা কিছুটা জানতাম, ভালোবাসার মানুষকে না পাওয়ার কষ্ট তাকে আঁকড়ে আছে, মেয়েটি বর্তমানে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। সে যেনো সুস্থ হয়, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা। তার বাল্যবন্ধু যারা রয়েছে, তাদের কেউ বর্তমানে পৌর মেয়র, কেউ উপজেলা চেয়ারম্যান সহ সবাই প্রতিষ্ঠিত।
এছাড়া চাঁদপুরের বিশিষ্ট সংস্কৃতি সংগঠক চাঁদপুর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তপন সরকার ও তার বোন রুমা সরকার, ভাগিনা সৈকত মজুমদার সিজার, শাওন সাথী দে, ঝন্টু দে-- তারাও চতুরঙ্গের সহযোগী, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
আমাদের বিশেষ অর্জন হচ্ছে জাতীয় মাছ চাঁদপুরের রূপালী ইলিশ রক্ষায় বাংলাদেশে প্রথম চতুরঙ্গই(২০০৯) গণ সচেতনতা মূলক ‘জাতীয় ইলিশ উৎসব’ করে আসছে। চতুরঙ্গই প্রথম শিল্পকলায় অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার ও ফোনোলাইভ স্টুডিও কনসার্ট-এর আবিষ্কারক।
বিভিন্ন উৎসবের পরিকল্পনা করতে গিয়ে দিনে এবং রাতে কত যে সাদা কাগজ নষ্ট করেছি তার হিসেব নেই। বর্তমানে কাগজের দাম বেড়েছে কিনা জানি না। যদি বেড়ে থাকে তার জন্যে কিঞ্চিত আমি দায়ী। সেজন্যে সকল অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রী এবং কর্ণফুলী পেপার মিলস সহ অন্য পেপার মিলস্ কর্তৃপক্ষের কাছে আংশিক ক্ষমাপ্রার্থী।
চাঁদপুরে সর্বপ্রথম কোনো উৎসব প্রতিষ্ঠানের স্পন্সর প্রথা একমাত্র আমরাই প্রচলন করি। গ্রামীণ ফোন ৫ বার, চান্দ্রা যুব বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ ১ বার, আল হেলাল স্পেশালাইজড্ হাসপাতাল লিঃ ঢাকা ১ বার, জিপিএইচ ইস্পাত লিঃ ১বার, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ ৪ বার, পুষ্টি সয়াবিন ও সিনেবাজ ১ বার স্পন্সর করে উৎসবের আমেজ বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
জীবন এবং যৌবনের শেষ প্রান্তে আমি। ৪৪ বছর সংস্কৃতির সাথে ঘর করেছি, বিত্তবান হওয়ার স্বপ্ন দেখিনি। প্রতিনিয়ত চিত্তের সাথে বসবাস আমার।
শিল্পকলা একাডেমির সম্মাননা (২০১৪) প্রাপ্তিতে কর্মের প্রাপ্তি ঘটেছে বা স্বীকৃতি মিলেছে। এখন আর পাওয়ার কিছুই নেই। একটু সময় ভালো থাকি, কোনো সময় খারাপ। শারীরিক কিছু সমস্যা আছে, যেটি কাছের প্রিয় মানুষরাই জানেন। রাজনীতি হতে অবসর নিয়েছি প্রায় ১৪ বছর। শেষ জীবনটা সংস্কৃতির সাথেই কাটাবো, রাজনীতিতে আর ফিরবো না।
কর্মের মূল্যায়নে বিশ্ব বঙ্গ সাহিত্য সংস্কৃতি সম্মেলন আগরতলা, ভারত, স্যান্দন টিভি ও স্যান্দন পত্রিকা আগরতলা, ভারত, দৈনিক আমাদের কুমিল্লা, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ, দৈনিক মেঘনা বার্তা, উদীচী চাঁদপুর জেলা সংসদ, অনন্যা নাট্য গোষ্ঠী চাঁদপুর, জীবন দ্বীপ চাঁদপুর, নতুন কুঁড়ি চাঁদপুর, স্বরলিপি নাট্য গোষ্ঠী, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা চাঁদপুর, হাওয়াইয়ান গীটার শিল্পী পরিষদ ঢাকা, অনুরণন নারায়ণগঞ্জ সহ বিভিন্ন সংগঠনের সম্মাননা প্রাপ্তি আমাকে কাজের প্রতি আরো দায়বদ্ধতা বাড়িয়ে দিয়েছে, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা।
বিগত পথচলায় কেউ হয়তো দূরে সরে গিয়েছে, নতুন কেউ হয়তো আবার জায়গা করে নিয়েছে। হয়তো জীবন সমাপ্তির পাণ্ডুলিপিতে আমার নাম স্থান পাবে। মেঘনার স্রোত হয়তো আগের মতোই বইবে, চাঁদপুর কোর্ট স্টেশনে জসীম মেহেদীর পত্রিকার স্টলের কোলাহল হয়তো আরো বেড়ে যাবে, শিল্পকলা একাডেমির আঙ্গিনায় নতুন সংস্কৃতি কর্মীদের আগমন আরো বেশি ঘটবে, সাহিত্য একাডেমীতে মাসিক সাহিত্য আড্ডা আগের মতোই চলবে। তখন হয়তো আমি থাকবো না।
মানুষ তার কর্মেই বেঁচে থাকে। এমন কর্ম কি আমি করেছি যে, আমাকে নিয়ে কোনো শোকসভা হবে? চতুরঙ্গ বা ইলিশ উৎসব কি আগের মতোই হবে? বিজয় মেলা হলে আয়োজকরা কি আমাকে স্মরণ করবে? এতো প্রশ্নের মধ্য দিয়েও কিছুটা সময় বাঁচতে চাই, কিছু সময় আপনাদের সাথে থাকতে চাই, সকলের দোয়া চাই, মহান আল্লাহ কাছে সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার প্রার্থনা করছি, গত ১ বছর আমরা স্পন্সর বিহীন ইলিশ উৎসব করতে গিয়ে যথেষ্ট হিমশিম খেয়েছি। আমার আপন ভাগিনা চতুরঙ্গের যুগ্ম মহাসচিব তামিম আহমেদ সুমন অনেক চেষ্টা করেছে স্পন্সর জোগাড় করতে। পাইনি, এবারও সে যথেষ্ট চেষ্টা করছে, তাকে অনেক স্নেহ ও অভিনন্দন প্রতিবারই উৎসবের কাজ করতে এসে-ছোট ভাই জি এম লিটন ও তার ছোটভাই জি এম রহমান অনেক কষ্ট করেন, তাদেরকেও ধন্যবাদ, অভিনন্দন জানাই পিক ডিজিটাল-এর শাখাওয়াত এবং শাহীনের প্রতিও।
পরিশেষে রবি ঠাকুরের গানটির কথাই মনে পড়ে
যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে
আমি বাইব না
আমি বাইব না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে গো
যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে
চুকিয়ে দেব বেচা কেনা, মিটিয়েদেব গো
মিটিয়ে দেব লেনাদেনা
বন্ধ হবে আনাগোনা এই ঘাটে
তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে
তারার পানে চেয়ে চেয়ে নাইবা আমায় ডাকলে
ভালো থাকবেন সবাই
চতুরঙ্গের ৪০ বছর পূর্তি ও ১৫তম ইলিশ উৎসবে কথাগুলো প্রকাশ করলাম। ভুল হতে পারে, অনেকেরই নাম বললে আমি খুশি হতাম, অর্থ ও পৃষ্ঠার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সেজন্যে, ক্ষমা করবেন, সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি বিনীত ভাবে।
গোলাম মোস্তফা : সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ও ‘সংস্কৃতি অঙ্গনে’র বিভাগীয় সম্পাদক, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ।