রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

অনন্য উচ্চতায় চতুরঙ্গ এবং দেড় দশকে ইলিশ উৎসব
কাজী শাহাদাত

১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠন চলতি ২০২৩ সালে চল্লিশ বছর পূর্তির মাইল ফলক অতিক্রম করেছে। স্বাধীনতোত্তর চাঁদপুরে প্রতিষ্ঠিত ২-৩টি সাংস্কৃতিক সংগঠন ছাড়া একমাত্র চতুরঙ্গই সক্রিয়তার সাম্যতা রক্ষা করে এবং কর্মসূচির বিচিত্রতা বজায় রেখে চাঁদপুরবাসীর কাছে টেকসই অস্তিত্ব জানান দিতে সক্ষম হয়েছে। এরই মধ্যে হারিয়ে গেছে কতো সাংস্কৃতিক সংগঠন। কিন্তু চতুরঙ্গ হারায়নি, বরং বছরের পর বছর ধারাবাহিক কর্মসূচি এবং বলিষ্ঠ, উদ্ভাবনীমূলক, সাহসী ও ব্যয়বহুল পদক্ষেপে নিজেদের কর্মযজ্ঞকে করেছে স্ফীত, যা রীতিমত ঈর্ষণীয় ও বিস্ময় জাগানিয়াই বটে। চতুরঙ্গের মহাসচিব হারুন আল রশীদ জাতীয় মাছ, দেশের অন্যতম জিআই পণ্য ইলিশকে নিয়ে উৎসব করার উদ্ভাবনী চিন্তায় নিজেকে ঋদ্ধ করে ২০০৯ সাল থেকে এর সফল বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে কেবলই সম্মুখপানে এগিয়ে চলছেন। স্পন্সর জোগাড় করে চাঁদপুরে কোনো সাংস্কৃতিক উৎসব করার যে নূতন মাত্রা হারুন আল রশীদ যোগ করেছেন, ইলিশ উৎসবের জাতীয় মান যার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ। ইলিশকে নিয়ে নিতান্তই সংস্কৃতির গতানুগতিক বিকাশের চেয়ে ইলিশ রক্ষার আন্দোলনকে বেগবান করতে তিনি চতুরঙ্গের নিবেদিতপ্রাণ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট বিনয় ভূষণ মজুমদার সহ একদল ত্যাগী কর্মীকে নিয়ে ইলিশ উৎসবের নামে প্রতিবছর এমন মিলন মেলার আয়োজন করছেন, যেখানে মন্ত্রী-আমলা, রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, সমাজসেবক, লেখক সমাজ, সংস্কৃতিপ্রেমী, সংস্কৃতিকর্মী, ইলিশ ব্যবসায়ী, জেলে, গণমাধ্যমকর্মীসহ অন্য সবাই এক হয়ে যায়। এই উৎসবে শুধু দেশের খ্যাতিমান ব্যক্তি ও সাংস্কৃতিক সংগঠনই আসছে না, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকেও এসে উৎসবকে আন্তর্জাতিকতায় উপনীত করেছে। উৎসবে হালে আয়োজকরা জাতীয় তকমা লাগালেও এটিকে আন্তর্জাতিক তকমা লাগানো যেনো সময়ের ব্যাপার।

চতুরঙ্গ তার ৪০ বছর বয়সে পরপর তিনটি সাংস্কৃতিক উৎসব করার পর ১৪ টি ইলিশ উৎসব সফলভাবে সম্পন্ন করে এবার ১৫তম ইলিশ উৎসব আয়োজন করেছে। তার মানে লাগাতার ১৮ বছর ধরেই উৎসবকেন্দ্রিক ব্যস্ততায় চতুরঙ্গ পার করেছে তার সুবর্ণ সময়। এর মধ্য দিযে চতুরঙ্গ এমন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে, যেমনটি চাঁদপুর ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কোনো জেলা শহরের কোনো সংগঠন পৌঁছতে পারেনি এবং ভবিষ্যতে পৌঁছতে পারার বিষয়টিও সুদূরপরাহত। চতুরঙ্গের এগিয়ে যাওয়ার পথকে মসৃণ ও ঐতিহ্যে ভাস্বর করার ক্ষেত্রে গত ১৫ বছর ধরে যিনি অভিভাবক ও কাণ্ডারী হিসেবে পথনির্দেশ দিয়েছেন, অনুপ্রেরণা ও সাহসে উজ্জীবিত করেছেন, তিনি তো আর কেউ নন, তিনি হচ্ছেন চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর-হাইমচর) আসন থেকে পরপর তিনবার নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য, সাবেক সফল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। যিনি বারবার উৎসব উদ্বোধন করে আয়োজকদের কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করেছেন।

যে কোনো সংগঠন ভালোভাবে চালাতে আর্থিক অনুদানসহ নানা আনুকূল্যের বাইরে অন্তর্নিহিত সাংগঠনিক শক্তির অনেক বড় ভূমিকা থাকে। চতুরঙ্গ সে ভূমিকায় অনেক সমৃদ্ধ। যে কারণে জাতীয় ইলিশ উৎসব স্পন্সর নিয়ে আয়োজনে যেমন

সক্ষম, তার বাইরেও সক্ষম। যে সক্ষমতার প্রয়োজন চতুরঙ্গ ইতিমধ্যে দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও দিতে সক্ষম বলে ১৮টি উৎসবের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্বপালন করার অভিজ্ঞতা থেকে নির্দ্বিধায় বলতে পারি। এতে অতিশয়োক্তি হবে না ইনশাল্লাহ। কারণ, সদিচ্ছা ও দৃঢ় সঙ্কল্পে চতুরঙ্গ এগিয়ে চলছে। এই চলার পেছনে জাতীয় স্বার্থকে ও সম্পদকে গুরুত্ব দেয়ার মানসিকতা, সর্বোপরি দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রবলভাবে নিরন্তর কাজ করছে।

কাজী শাহাদাত : আহ্বায়ক (২০০৯-২০২৩), জাতীয় ইলিশ উৎসব, চাঁদপুর; সদ্য সাবেক মহাপরিচালক, সাহিত্য একাডেমী, চাঁদপুর; প্রধান সম্পাদক, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়