প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২১, ০০:০০
কোরবানির পটভূমি
কোরবানি মুসলিম নর ও নারীর জন্যে একটি বিশেষ ইবাদত। নেক আমলসমূহের মধ্যে কোরবানি অন্যতম আমল। মানব জাতির ইতিহাসের সর্ব প্রথম কোরবানির ঘটনা হযরত আদম (আঃ)-এর দুই পুত্র হাবিল ও কাবিলের কোরবানি। এ সম্পর্কে কুরআন মাজীদে এসেছে “আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত আপনি তাদেরকে যথাযথভাবে শোনান। যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো এবং অন্যজনের কবুল হলো না। সে বললো, আমি তোমাকে হত্যা করবোই। অপরজন বললো, অবশ্যই আল্লাহ মুত্তাকীদের কোরবানি কবুল করে থাকেন”। (সুরা মায়িদা, আয়াত-২৭)
আদম (আঃ)-এর পরে সকল যুগে কোরবানির বিধান চালু ছিল। আল্লাহর পক্ষ হতে অবতীর্ণ সমস্ত শরী’আতেই কোরবানির বিধান ছিলো। এ মর্মে কুরআন মাজীদে এরশাদ হয়েছে : “আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কোরবানির নিয়ম করে দিয়েছি, যাতে আমি তাদেরকে জীবনোপকরণ স্বরূপ যে সকল চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছি সেগুলোর উপর তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ (সুরা হজ্ব, আয়াত-৩৪)
শরীয়তে মুহাম্মদীয়া প্রচলিত কোরবানি, যা প্রতি বছর বিশ্ব মুসলিমগণ জিলহজ্ব মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখে করে থাকে। সেটি হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ও তদীয় পুত্র হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর অপূর্ব প্রেমের আত্মত্যাগের ঘটনাবহুল স্মৃতিচারণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ ঘটনার বর্ণনা কুরআন মাজীদে এসেছে “এরপর সে (ইসমাঈল) যখন তাঁর পিতার সাথে কাজ করার মতো বয়সে উপনীত হলো, তখন ইব্রাহীম বললো : হে পুত্র! আমি স্বপ্ন দেখি যে, তোমাকে আমি জবেহ করছি, এখন তোমার অভিমত কী বলো? সে বললো, হে আমার পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তা করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। যখন তারা উভয়ে আল্লাহর আনুগত্য প্রকাশ করলো এবং ইব্রাহীম তাঁর পুত্রকে কাত করে শায়িত করলো তখন আমি তাকে আহ্বান করে বললাম, হে ইব্রাহীম! তুমি স্বপ্নাদেশ সত্যিই পালন করলে। এভাবেই আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। নিশ্চয়ই এ ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তাঁকে ম্ক্তু করলাম এক মহান কোরবানির বিনিময়ে। আমি এটি পরবর্তীদের জন্যে স্মরণীয় করে রেখেছি”। (সুরা আছ ছফ্ফাত, আয়াত-১০২ থেকে ১০৯)
কোরআন মাজিদের সবচেয়ে ছোট সুরা আল কাউছারে আল্লাহ ইরশাদ করেন “সুতরাং আপনি আপনার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করুন এবং কোরবানি করুন।” (সুরা আল কাউসার, আয়াত-০২)
মহানবী (সাঃ) নিজে কোরবানি করেছেন এবং অন্যকে কোরবানি করতে উৎসাহিত করেছেন। কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি না দেয়ার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। হাদীসে এসেছে, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। (ইবনে মাজাহ)
অপর একটি হাদীসে হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, মহানবী (সা) ইরশাদ করেন, ‘‘ঈদের দিনে আদম সন্তানের সর্বোৎকৃষ্ট আমল হলো কোরবানি করা। কিয়ামতের দিন কোরবানির পশুর শিং, খুর, লোম, হাড় ইত্যাদি আমলনামায় ওজন করা হবে। কোরবানির জবেহকৃত পশুর রক্তবিন্দু মাটিতে পড়ার পূর্বে আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায়। সুতরাং তোমরা প্রফুল্লচিত্তে কোরবানি কর।” (তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)। মহানবী আরোও (সাঃ) বলেছেন, “কোরবানির পশুর প্রতিটি লোমে একটি করে নেকী রয়েছে।” (তিরমিযী শরীফ)
কোরবানির পরিচিতি
কোরবানি শব্দটি আরবি কোরবান শব্দ থেকে এসেছে। কোরবানি শব্দের অর্থ ত্যাগ, উৎসর্গ, বিসর্জন, নৈকট্য লাভ ইত্যাদি। ফিকহের পরিভাষায় কুরবানিকে উযহিয়্যা বলা হয়। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে শরীয়ত নির্দেশিত পন্থায় নির্দিষ্ট দিনে নির্ধারিত পশু জবাই করাকে কোরবানি বলে। কোরবানি ওই ব্যক্তির উপর ওয়াজিব যার উপর সাদকায়ে ফিতর ওয়াজিব তথা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া। ওই সকল মুসলিম নর ও নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব যিনি আজাদ তথা স্বাধীন, প্রাপ্ত বয়স্ক, জ্ঞানী, মুকিম ও নিসাব পরিমাণ মালের মালিক। অপরদিকে অমুসলিম দরিদ্র ব্যক্তি, ক্রীতদাস- দাসী, মুসাফির ও নিসাব পরিমাণ মালের যিনি মালিক নন তার উপর কোরবানি করা ওয়াজিব নয়।
কোরবানির আহকাম
যার নিকট বসবাসের জন্যে ঘরবাড়ি বা ফ্ল্যাট, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, পরিধেয় জামা কাপড়, যে কোন বাহন ও অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছাড়া সাড়ে সাত ভরি সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা থাকবে অথবা সে পরিমাণ নগদ অর্থ বা টাকা থাকবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। উল্লেখ্য যে, কোরবানির নিসাব পরিমাণ সম্পদ যাকাতের ন্যায় এক বছরকাল মালিকের হাতে মজুদ থাকা অপরিহার্য নয়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদের জন্যে কোরবানি ওয়াজিব। কোনো ব্যক্তি যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয় তবে কেবল তার নিজের পক্ষ হতে কোরবানি করা তার উপর ওয়াজিব। স্ত্রী বা ছেলে-মেয়ের জন্যে তার উপর কোরবানি করা ওয়াজিব নয়। তবে স্ত্রী ও সন্তানাদি যদি আলাদা ও নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয় তাহলে তাদের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। যদি কোনো ব্যক্তির ৫ জন ছেলে থাকে আর সকলেই এক পরিবারভুক্ত হয় তাহলে শুধু পিতার উপরই কোরবানি করা ওয়াজিব হবে। আর ছেলেদের কেউ যদি পৃথকভাবে মালিক হয় তাহলে ছেলেদের উপরও কোরবানি করা ওয়াজিব হবে। মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই বিধান প্রযোজ্য। তথা কোন মহিলা নিসাব পরিমাণ মালের মালিক হলে তার উপর কোরবানি করা ওয়াজিব। কোরবানি ওয়াজিব এমন ব্যক্তির ওপর শুধুমাত্র একটি কোরবানি করাই ওয়াজিব। একাধিক কোরবানি করা ওয়াজিব নয়, সে যতো সম্পদের মালিকই হোক না কেন। যেমন যার উপরে হজ্ব ফরজ, জীবনে একবার একটি হজ্ব করাই ফরজ, বারবার নয়। কেউ যদি কোরবানির দিনগুলোতে একাধিক পশু কোরবানি করে, এতে সে অনেক সওয়াব লাভ করতে পারে। হাদীসের বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) একশত কোরবানি করেছেন। সুতরাং ধনী ব্যক্তি একাধিক কোরবানি করতে পারেন। ওয়াজিব আদায় শুধুমাত্র একটি পশু কোরবানি করার মাধ্যমেই আদায় হয়ে যায়। ঋণ করে কোরবানি করা ভাল নয়, অন্যের থেকে ধার করে নিয়ে কোরবানি করার কোনো প্রয়োজন নেই। এরপরও যদি সে কোরবানি করে তাহলে সওয়াব পাবে। মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানি করা জায়েজ। এমনকি প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পক্ষ থেকে কোরবানি করাও বিশেষ সওয়াবের কাজ। এ সম্পর্কে বর্ণনা আছে যে, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তিনি হযরত আলী (রাঃ)কে তাঁর পক্ষ থেকে কোরবানি করার অসিয়ত করে ছিলেন। তাই হযরত আলী (রাঃ) প্রতি বছর রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর পক্ষ থেকেও কোরবানি দিতেন। (সূত্র সুনানে আবু দাউদ)।
কোরবানির পশু ও এর বিধান
ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, গরু, মহিষ ও উট দ্বারা কোরবানি করা ওয়াজিব। এগুলো ছাড়া অন্য কোনো পশু দ্বারা কোরবানি করা জায়িজ নয়। শর্ত হলো পশুগুলো গৃহপালিত হতে হবে। বন্য হলে কোরবানি জায়েজ হবে না। উপরোক্ত পশুর নর-নারী উভয় প্রকার দিয়েই কোরবানি করা জায়েজ। ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, কোরবানির জন্যে বয়স কমপক্ষে এক বছর হতে হবে। ছাগলের বয়স একবছর থেকে একদিন কম হলেও এর দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ হবে না। তবে ভেড়া বা দুম্বা যদি এক বছরের কিছু কমও হয় কিন্তু এমন হৃষ্ট পুষ্ট হয় যে, তা দেখতে এক বছরের মতো মনে হয় তাহলে তা দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ। তবে অবশ্যই এক্ষেত্রে ভেড়া ও দুম্বার বয়স ছয় মাস বয়সের হতে হবে। (ফতোয়ায়ে কাজী খান)
গরু ও মহিষের বয়স অন্তত দুই বছর পূর্ণ হতে হবে আর উটের বয়স পাঁচ বছর হতে হবে। একদিন কম হলেও কোরবানি দেওয়া জায়েজ হবে না। ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা দ্বারা একজনই কোরবানি দিতে পারে, একাধিক শরীক হতে পারবে না। কয়েকজন মিলে কোরবানি করলে কারোটাই সহীহ হবে না। উট, গরু, মহিষে সর্বোচ্চ সাতজন শরীক বা অংশীদার হতে পারে। জোড় বা বেজোড় যেকোন অংশ হতে পারে। তবে সাত-এর অধিক শরীক হলে বা কারো অংশ এক সপ্তমাংশ থেকে কম হলে কারো কোরবানিই সহীহ হবে না। ব্যক্তির উপার্জন যদি হারাম হয় অথবা সে আল্লাহ তায়ালার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কোরবানি না করে শুধু গোস্ত খাওয়া বা লোক দেখানো নিয়তে কোরবানি করে এমন ব্যক্তিকে অংশীদার বানালে কারো কোরবানিই সহীহ হবে না। যদি ছাগলের দাম গরুর সাত ভাগের এক ভাগের সমান বা বেশি হয় তাহলে ছাগল কোরবানি দেওয়াই উত্তম। এক্ষেত্রে খাসি কোরবানি করা আরো উত্তম। কোনো পশু দেখতে কম বয়স্ক মনে হয় কিন্তু আসলে তার বয়স পূর্ণ হয়েছে এই ধরনের পশু দ্বারা কোরবানি সহীহ হবে। আবার কোনো পশু যদি দেখতে পূর্ণ বয়স্ক মনে হয় অথচ বয়স পূর্ণ হয়নি তবে এই ধরনের পশু দ্বারা কোরবানি করা ঠিক হবে না। অন্ধ, কানা, খোঁড়া, শিং মূলসহ উপড়ে গেছে, যে পশু অত্যন্ত রুগ্ন এবং যে পশু জবেহ করার স্থানে পায়ে হেঁটে যাবার শক্তি রাখে না, যে পশুর লেজ, কান ইত্যাদি তিন ভাগের এক ভাগ হতে বেশি কাটা সে পশু দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ নয়। যে পশুর সম্পূর্ণ দাঁত নেই, জন্মগতভাবে মোটেই কান নেই, যে পশুর নাক কাটা, যে পশুর মুখ এমনভাবে কাটা যার দ্বারা সে ঘাস ইত্যাদি খেতে পারে না, আবার যে পশুর এক স্তন বা উভয় স্তন হতে দুধ না আসে তাহলে তার দ্বারাও কোরবানি করা জায়েজ নাই। হিজড়া জাতীয় বকরীর দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ নেই। গর্ভবতী পশুর দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ। তবে এটি করা মাকরুহ। পশুটি গর্ভবতী বলে জানা ছিলো না। কিন্তু জবেহ করার পর পেট থেকে বাচ্চা বের হয়ে গেলে যদি বাচ্চা জীবিত পাওয়া যায় তাহলে সেটাও জবাই করতে হবে।
কোরবানির দিন ও সময়কাল
কোরবানির দিন ও সময়কাল হলো জিলহজ্ব মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ পর্যন্ত, তবে প্রথম দিন কোরবানি করা উত্তম। ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পর কোরবানি করা জায়েজ নেই। কোরবানির পশু জবাই কোরবানিদাতার নিজে করা উত্তম। নিজে না পারলে অন্যকে দিয়েও জবাই করতে পারবে। জবাই স্থানে কোরবানিদাতা উপস্থিত থাকা ভালো। ঈদের নামাজের পূর্বে কোরবানি করা জায়েজ নেই। জবাইয়ের সময় পশুকে কিবলামুখী করে শুইয়ে দিতে হবে। অতঃপর ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে জবাই করা ওয়াজিব। জবাইকারী ও জবাইয়ের কাজে সহযোগিতাকারী উভয়ের জন্য ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলা জরুরি। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যদের জন্যে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলা জরুরি নয়।
কোরবানির গোস্ত ও চামড়ার বিধান
কোরবানির গোস্ত ও চামড়ার বিধান হলো, কোরবানির গোস্ত তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজে খাওয়া, এক ভাগ আত্মীয় স্বজনকে দেওয়া এবং এক ভাগ ফকির মিসকিনদের দেয়া মুস্তাহাব। শরীকে কোরবানি করলে ওজন করে গোস্ত বন্টন করতে হবে। অনুমান করে গোস্ত ভাগ করা জায়েজ নয় ও জবাইকারী কসাই বা কারো সহযোগিতাকারীকে চামড়া, গোস্ত বা কোরবানির পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসেবে দেয়া জায়েজ নেই। অবশ্য পূর্ণ পারিশ্রমিক দেয়ার পর পূর্ব চুক্তি ছাড়া হাদিয়া হিসেবে গোস্ত বা তরকারি দেয়া যাবে। কোরবানির চামড়া নিজে ব্যবহার করতে পারবে। আর চামড়া বিক্রি করে তার সম্পূর্ণ মূল্য সাদকা করা জরুরি। চামড়া দ্বীনি মাদরাসায় লিল্লাহ বোর্ডিং গরিব, ইয়াতিম, মেধাবী দুঃস্থ শিক্ষার্থীর লেখাপড়া চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দান করা অশেষ সওয়াবের কাজ। এ সকল ধর্মীয় মাদরাসায়, ইয়াতিমখানায় ও হাফিজিয়া মাদরাসায় আলাদা গোরাবা তহবিলে এ অর্থ জমা হয় ও যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কোরবানির গোস্ত অমুসলিমকে দেয়াও জায়েজ। কোরবানির গোস্ত কোরবানি দাতার জন্যে বিক্রি করা মাকরুহে তাহরীমি বা হারামের কাছাকাছি। কোরবানির গোস্ত তিন দিনের বেশি সময় জমা করে রাখাও জায়েজ আছে। কোরবানি আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম। তাই কোরবানিদাতার উচিত দোষমুক্ত ও মোটাতাজা পশু দ্বারা কোরবানি করা। কোরবানি হলো আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার এক দৃপ্ত অঙ্গীকার। প্রকৃতপক্ষে কোরবানিদাতা পশুর গলায় ছুরি চালানোর মাধ্যমে সে যেনো তার নিজের মধ্যে যে কু-প্রবৃত্তি তথা ষড় রিপু কাম, ক্রোধ, লোভ-লালসা, মোহ, মদ, মাৎসর্য্য এবং রাগ, হিংসা আছে সেটির গলায় ছুরি চালায়। আল্লাহর হুকুম পালনই যেনো কোরবানিদাতার কাছে মুখ্য। কোরবানির মাধ্যমে মুসলিম জাতি আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করতে পারে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। কুরআন ও হাদীসের দ্বারা প্রমাণিত যে, কোরবানির বিধান নতুন কোনো বিধান নয়। তাই ইসলামী শরীয়তে কোরবানি যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সওয়াবের কাজ তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে কোরবানির মাধ্যমে পরিপূর্ণ সাওয়াব প্রদানের তাওফীক দান করেন।
লেখক : অধ্যক্ষ, পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ।