প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর রাশেদ চৌধুরীর পৈত্রিক বাড়ি হাজীগঞ্জের সোনাইমুড়িতে বাজেয়াপ্তকৃত ১শ’ ১৫ শতাংশ সম্পত্তিতে সীমানা পিলার ও সাইনবোর্ড পুনঃস্থাপন করা করা হয়েছে। রাশেদ চৌধুরীর নিজের প্রাপ্য পৈত্রিক সম্পত্তি সরকার ইতিমধ্যে ১নং খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করে। এর পরেই ২০১৪ সালে উক্ত সম্পত্তি সরকার বাজেয়াপ্ত ও দখলে নেয়। এর আগে স্থাপিত সীমানা ও সাইনবোর্ড নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেটি এই দিন পুনঃস্থাপন করা হয়। বুধবার দিনভর হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এ কাজ সম্পন্ন করে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাত্রিতে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার ঘটনায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক অন্যতম আসামী মেজর রাশেদ চৌধুরীর বাড়ি হাজীগঞ্জের সোনাইমুড়ি গ্রামে। মেজর রাশেদ চৌধুরী এই গ্রামের উকিল বাড়ির মরহুম মাওঃ শিহাবুদ্দিনের ছেলে। ফাঁসির দণ্ড নিয়ে বিদেশে পলাতক থাকা রাশেদ চৌধুরীর পৈত্রিক সম্পত্তির প্রাপ্য অংশ সরকার ১নং খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করে। পরে ২০১৪ সালে তা দখলে নেয় সরকার। সেই সময় উক্ত সম্পত্তিতে সাইনবোর্ড টানানো ও সীমানা পিলার বসানো হয়। দীর্ঘ প্রায় ৮ বছরে সেই সীমানা পিলার ও সাইনবোর্ড নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বুধবার (৩১ আগস্ট) তাতে ফের নতুন সীমানা পিলার ও সাইনবোর্ড টানানো হয়। সীমানা পিলার ও সাইনবোর্ড বসানোর সময় নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মেহেদী হাসান মানিক।
৬নং বড়কুল পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৩ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৪৪.০০.০০০০.০৭৪.০৬.০৫৫.০৯-৭৮৩ ও ৪৪.০০.০০০০.০৭৪.০৬.০৫৫.০৯-৭৮৪ স্মারক এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মোকাদ্দমা নং ২২/২০১৩-২০১৪ আদেশমূলে ওই ইউনিয়নের সোনাইমুড়ী মৌজার সাবেক ২৪৬, হাল ৯৭ দাগে রাশেদ চৌধুরীর মোট ১১৫ শতাংশ ভূমি সরকার ১নং খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করে। এর মধ্যে ১১৭২ দাগে ২৮ শতাংশ, ৩৯৩ দাগে ১২ শতাংশ ও ১৪১ দাগে ৭৫ শতাংশ রয়েছে।
সাইনবোর্ড টানানো ও সীমনা পিলার বসানোর সময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপেজলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের কানুনগো মোহাম্মদ লোকমান হোসেন, সার্ভেয়ার মোঃ কাজল মিয়া, নাজির মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল, বড়কুল পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মোঃ শুক্কুর মোল্লা টিটুসহ সরকারি কর্মকর্তাগণ।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আহসান হাবীব জানান, ২০১৪ সালে উক্ত জমি সরকারের হাতে চলে যাওয়ার পর সাইনবোর্ড ও সীমানা পিলার টানানো হয়। অনেক দিন অতিবাহিত হওয়ায় পিলার ও সাইনবোর্ড নষ্ট হয়ে যায়। ফের সীমানা পিলার ও সাইনবোর্ড নতুন করে বসানোর কারণে নতুন প্রজন্ম জানতে পারছে জাতির পিতার খুনির বাড়ি এই সোনাইমুড়ি গ্রামে। ঘৃণিত এই খুনির কারণে পুরো জাতির কাছে আমরা হাজীগঞ্জবাসী লজ্জিত।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান মানিক জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৪৪.০০.০০০০.০৭৪.০৬.০৫৫.০৯-৭৮৩ ও ৪৪.০০.০০০০.০৭৪.০৬.০৫৫.০৯-৭৮৪ স্মারক এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মোকাদ্দমা নং ২২/২০১৩-২০১৪ আদেশমূলে ৬নং বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের সোনাইমুড়ী মৌজার সাবেক ২৪৬, হাল ৯৭ দাগে রাশেদ চৌধুরীর মোট ১১৫ শতাংশ ভূমি সরকার ১নং খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করে। এর মধ্যে ১১৭২ দাগে ২৮ শতাংশ, ৩৯৩ দাগে ১২ শতাংশ ও ১৪১ দাগে ৭৫ শতাংশ খাস খতিয়ানভুক্ত সম্পত্তির মালিকানা এখন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের। উক্ত সম্পত্তিতে থাকা সাইনবোর্ড ও সীমানা পিলার পুরাতন হওয়ায় তা আমরা প্রতিস্থাপন করে দিয়েছি। অপর এক প্রশ্নে উক্ত কর্মকর্তা বলেন, এই সম্পত্তি দেখাশোনা করার জন্যে আমাদের লোক রয়েছে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, জাতির পিতার খুনি ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী রাশেদ চৌধুরীর নিজের ১১৫ শতাংশ জমি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দখলে রয়েছে। উক্ত সম্পত্তির সীমানা পিলার ও সাইনবোর্ড নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমরা ফের তা পুনঃস্থাপন করেছি।
