প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২২, ০০:০০
ভরা বর্ষার মৌসুম শেষ হতে চললেও মাঠে পানির দেখা নেই। আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় শাহরাস্তির বিভিন্ন কৃষি জমির মাঠ খাঁ খাঁ করছে। বিগত কয়েক যুগেও এ ধরনের অনাবৃষ্টি দেখেনি অনেক কৃষক। বর্ষা মৌসুমে বিগত বছরগুলোতে বৃষ্টি কম হলেও জোয়ারের পানিতে মাঠগুলো ভেসে থাকতো। কিন্ত এবার ভরা মৌসুমেও পানির দেখা নেই। আষাঢ় ও শ্রাবণ এ দুমাস জুড়ে থাকে বর্ষাকাল। ভাদ্র মাসেও মাঠগুলোতে পানি থৈ থৈ করে। কিন্ত ভাদ্রের মাঝামাঝি সময়ে এসেও পানির দেখা মেলেনি। বর্ষা মৌসুমে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন এলাকায় মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ব্যস্ত সময় পার করলেও বর্তমানে পানি না থাকায় তেমন কোনো অভিযান লক্ষ্য করা যায়নি। মৎস্য শিকার করে যারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন তারাও অলস সময় পার করছেন।
উপজেলা সদরের লদের বাড়ির জামাল হোসেন দেশীয় প্রজাতির মাছ বিক্রয় করে এলাকায় বেশ পরিচিতি লাভ করেন। বর্তমানে মাঠে পানি না থাকায় মাছের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি এবার শাক-সবজি বিক্রয় কাজে দিন পার করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে দেখা গেছে, বর্ষা মৌসুমের জন্যে প্রস্তুত করা নৌকাগুলো শুকনো মাটিতে পড়ে আছে। বর্ষার শুরুতে মানুষ এবার বন্যা হবে ভেবে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলো, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পানির দেখা পায়নি উপজেলাবাসী। বিশেষ করে এবার আমন মৌসুম হুমকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে কৃষকগণ তাদের বীজতলা তৈরি করে রেখেছেন। এবার রোপণের পালা। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হওয়ায় সময় মত আমন রোপণ করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শত শত কৃষক। এদিকে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রাখতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হলে তারা সেচযন্ত্রের মাধ্যমে আমন উৎপাদনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু সেচযন্ত্র চালু করা হয়েছে। রবি (ইরি) মৌসুমে ব্যবহত সেচযন্ত্রগুলো প্রস্তুত রাখতে সংশ্লিষ্ট সেচ প্রকল্প মালিক ও স্কিম ম্যানেজারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পল্লী বিদ্যুৎকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জামাল হোসেন জানান, শাহরাস্তি উপজেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১৬৫৫ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা বজায় রাখতে উপজেলা কৃষি অফিস কাজ করে যাচ্ছে। কোনো কারণে যদি বৃষ্টির দেখা না হয়, তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি জানান, বৃষ্টি হলে আর কোনো সমস্যা নেই, কৃষকদের অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হবে না।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলরাম সাহা জানান, আমন উৎপাদনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি আমরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবো। মেহের উঃ ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইসহাক খন্দকার বলেন, আমাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। কৃষকগণও প্রস্তুত, বৃষ্টি হলে আর কোনো সমস্যাই থাকবে না।