প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেছেন, আমাদের এখন বড় চ্যালেঞ্জ চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ। অপরদিকে চাঁদপুর-হাইমচর যে বাঁধ রয়েছে, সেটি আরো দুটি বর্ষা টিকিয়ে রাখতে পারবো কি-না সেটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেঘনা-ডাকাতিয়া নদীর তীব্র স্রোতে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ। এ জন্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্রুত স্থায়ী প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে হবে। অন্যথায় চাঁদপুরবাসীকে অপরিসীম ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। বারবার ভাঙন রক্ষায় অস্থায়ী ভিত্তিতে এখানে কাজ হচ্ছে। কিন্তু দিন দিন এই শহর রক্ষা বাঁধটি আরও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ, এসব নদীর বিভিন্ন চর-ডুবোচরের কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেছে। বিশেষ করে নদীর ওপারে ঈশানবালা, ইব্রাহীমপুরের মধ্যে ডুবোচর বেশি ভেসে উঠেছে। ইতোমধ্যে নদী বিশেষজ্ঞরা সমীক্ষা করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রকল্প প্রস্তাব করেছে। আমরা একনেকে এটি নেয়ার চেষ্টা করছি।
তিনি আরো বলেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। নদীর নাব্যতার কারণে ইলিশের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। সেটিও আমাদের জন্যে এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া মন্ত্রী আরো বলেন, চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেন করে উন্নীত করার প্রস্তাব পাঠানো হবে। কারণ এ সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করে এবং সড়ক সরু হওয়ার কারণে দুর্ঘটনা কবলিত হয় বেশি।
চাঁদপুরের জেলা পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়কালে ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সভাপ্রধানে ও জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ এনামুল হকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি মোঃ নাসিম আখতার, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার), জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ, জেলা মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ আনিসুর রহমান, জেলা ফায়ার স্টেশন সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ সহিদুল ইসলাম, টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মোঃ সিরাজুল ইসলাম, নৌ-পুলিশের জেলা পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান প্রমুখ।
সভার শুরুতে পরিচিতি পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সভার সঞ্চালক করোনাকালে চাঁদপুরে মানুষের চিকিৎসা সেবায় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং তাঁর অসামান্য অবদানে যে নিরবচ্ছিন্ন চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে : গত বছর করোনোর প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের ব্যবস্থা করা, চাঁদপুরে ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ আরটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন, আবুল খায়ের গ্রুপের তত্ত্বাবধানে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে বড় পরিসরে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ এবং রিফিলের ব্যবস্থা করার ভূমিকা রাখা, লিকুইড অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন, দ্রুততার সাথে চাঁদপুরে করোনার ভ্যাকসিন প্রদানের ব্যবস্থা করা, জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার কোনো সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক তা সমাধান করে দেয়া এবং চাঁদপুরে করোনা পরিস্থিতির সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখা। সভায় আরটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন এবং জেনারেল হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের ব্যবস্থাসহ আরো নানা ক্ষেত্রে ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্টের পৃষ্ঠপোষকতায় সম্পন্ন হওয়ায় ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
সভায় স্বাস্থ্য বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, শিক্ষা বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের কার্যক্রম এবং বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি কিছু কিছু সমস্যার বিষয়ে তাৎক্ষণিক সমাধানের পরামর্শ দেন।