প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:৫০
ডা. নুসরাত জাহান মিতার কাণ্ড!
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নবজাতকের মাথা কেটে ফেলার অভিযোগ
চাঁদপুর শহরের তালতলা এলাকায় অবস্থিত চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে এক গর্ভবতী নারীর সিজারিয়ান অপারেশনে সন্তান প্রসব করানোর সময় নবজাতকের মাথা কেটে রক্তাক্ত করে ফেলা হয়। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক এর দায় নিতে চাচ্ছেন না। অপরদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে নবজাতকের পিতা চাঁদপুর সদর মডেল থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
জানা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের গর্ভবতী স্ত্রী নাছরিন আক্তারকে গত ৮ নভেম্বর ২০২৪ চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন হাসপাতাল থেকে রোগীর অবস্থা ভালো নয় বলে সিজারিয়ান অপারেশন করার পরামর্শ দেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মতে রোগীর লোকজন নাছরিন আক্তারকে সিজার করানোর সিদ্ধান্ত দেয়। ওইদিনই ডা. নুসরাত জাহান মিতা নাছরিন আক্তারকে সিজারিয়ান অপারেশন করেন। নাছরিন কন্যা সন্তান জন্ম দেন।
নাছরিনের স্বামী নজরুল ইসলাম জানান, সিজারিয়ান অপারেশনের পর সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া তার সন্তানকে একটি ভিন্ন রুমে নিয়ে মাথা ঢেকে রেখে তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দেড় ঘন্টা পর নাছরিনের পরিবারের লোকজন নবজাতকের শরীর মুছতে গিয়ে দেখতে পায় তার মাথার তালু কাটা এবং রক্ত বের হচ্ছে। বিষয়টি তৎক্ষণাৎ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তারা জানায়, এটা জন্মগত রোগ। অথচ সন্তান প্রসব করার পর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসব কিছুই বলেনি। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নানা টালবাহানা দেখলে রোগীর স্বজনরা ৯৯৯ নাম্বারে কল করলে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই আ. কুদ্দুস ঘটনাস্থলে যান। তখন আগে নবজাতকের উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এদিকে রোগীর স্বজনরা তাদের আর্থিক অবস্থার কথা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বললে তারা চিকিৎসা করানোর জন্যে বলেন এবং চিকিৎসার খরচ তারা বহন করবে বলে জানান। এমন আশ্বাসে ৮ নভেম্বর ২০২৪ বিকেলেই নবজাতককে ঢাকা শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায় এবং সেখানে ১ মাস চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসা এখনো চলমান রয়েছে। এই এক মাসেই চিকিৎসায় আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে নজরুল ইসলাম জানান।
এদিকে নাছরিনের স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে চিকিৎসার খরচের কথা বললে তারা নানা টালবাহানা করে। এমনকি নাছরিনের স্বজনদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার এবং দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।
নাছরিনের স্বজনরা নিরূপায় হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ করলে গত বুধবার (৮ জানুয়ারি ২০২৫) থানায় এ বিষয়ে সালিস বসে। সালিসে সিদ্ধান্ত হয়, নাছরিনের সিজারিয়ান অপারেশন করার সময় নবজাতকের মাথা কেটে ফেলা হয়েছে, নাকি এটা জন্মগত সমস্যা তা তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে যদি মাথা কেটে ফেলার রিপোর্ট আসে, তাহলে চিকিৎসার দায় দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।
একটি সূত্র জানায়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগী নাছরিনের পরিবারকে হয়রানি করে আসছে। তারা এর বিচার দাবি করেছে।
এ ব্যাপারে নবজাতকের বাবা নজরুল বলেন, আমার স্ত্রী নাছরিন আক্তার সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। সন্তান জন্ম হওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার মাথা ঢেকে রেখে অক্সিজেন দিয়ে রাখে। নবজাতকের শরীর মুছতে গিয়ে দেখতে পায় তার মাথা কাটা এবং সেখান থেকে রক্ত বের হচ্ছে। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তারা জন্মগত সমস্যা বলে জানায়।
এ ব্যাপারে এসআই আঃ কুদ্দুছ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা থানায় বসেছি। তদন্ত করার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।