শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

কচুয়ায় সদর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ
মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ॥

কচুয়া উপজেলার সদর ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন লিটনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, নৌকা প্রতীকে তিনি নির্বাচিত হয়েও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের পাশ কাটিয়ে বিভিন্ন বরাদ্দে নয়-ছয় করে টাকা আত্মসাৎ করেন। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে ২০২০ সালের ২২ আগস্ট জেলা প্রশাসক কার্যালয়সহ কয়েকটি দফতরে ইউনিয়ন পরিষদের ৯ জন ইউপি সদস্য স্বাক্ষরিত একটি অনাস্থাপত্র জমা দেন।

অনাস্থাপত্রে স্বাক্ষর করেন ওই ইউনিয়নের ১ থেকে ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য যথাক্রমে মোঃ শাহজাহান, মোঃ মানিক, আব্দুল খালেক, আসাদুজ্জামান মুন্সি, মোঃ বিল্লাল হোসেন, শরিফুল ইসলাম, মোঃ মনির হোসেন, নাজমুল হাসান ও মোঃ হাসানাত।

অনাস্থাপত্রে উল্লেখ করা হয়, ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন লিটন শপথ গ্রহণের পর থেকে তার খেয়াল-খুশিমতো ইউনিয়ন পরিষদের কাজ করে আসছেন। তিনি নিয়মিত মাসিক সভা করেন না। সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের নিয়ম থাকলেও তিনি নিয়মের তোয়াক্কা না করে নিজ ইচ্ছায় প্রকল্প গ্রহণ করেন, কমিটি প্রদান করেন। কমিটির কারো স্বাক্ষর গ্রহণ না করে জালিয়াতির মাধ্যমে বিল উত্তোলন ও আত্মসাৎ করেন।

এতে আরো উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘ ৬০ মাসের মধ্যে স্থাবর সম্পত্তির বিপরীতে (১ ভাগ) যেসব বরাদ্দ এ পরিষদে দেয়া হয়েছে তা আমাদের না জানিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নিজে বিভিন্ন ভুয়া-অদৃশ্য প্রকল্প দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেন। এ বিষয়ে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলে তিনি হুমকি-ধমকি দেন। তাই পরিষদের সবাই একযোগে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থাপত্র প্রদান করলাম। সেই সঙ্গে এসব বিষয় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ারও অনুরোধ জানান তারা।

সরজমিনে দেখা যায়, সদর ইউনিয়নের আন্দিরপাড় গ্রামে নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কালভার্ট নির্মাণ করায় দু’বছর যেতে না যেতেই কালভার্ট ভেঙ্গে যায়। এতে যান চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দকৃত রাস্তা সংস্কার কাজেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান আঃ খালেক বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন লিটন ৫ বছরে আমাদের ৯ ইউপি সদস্যের সাথে বিভিন্ন অনুদান ও বরাদ্দের বিষয় নিয়ে কোনো সমন্বয় করেননি। তিনি আমাকে এলজিএসপি প্রকল্পের ৩ লক্ষ টাকার কাজ দিবেন বলে আমার কাছ থেকে অগ্রিম ১ লক্ষ টাকা নিয়ে যান। পরবর্তীতে আমার ওয়ার্ডের প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেন। অতি দরিদ্রদের জন্যে কর্মসংস্থান করার লক্ষ্যে ৪০ দিনের কর্মসূচী বরাদ্দ কোনো ইউপি সদস্যকে না দিয়ে তিনি কিছু লোকজনের কাছ থেকে এক/দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। তিনি স্থানীয় সরকারের প্রকল্প বরাদ্দ ইউপি সদস্যের স্বাক্ষর জালিয়তি করে বরাদ্দ টাকা আত্মসাৎ করেন।

তিনি আরো জানান, আমার ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেনের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার দুঃস্থ অসহায়কে দেয়া ২০১৮-২০১৯ সালের অর্থ বছরের গৃহনির্মাণের ১ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন।

এ ব্যাপারে উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেন জানান, এ প্রকল্পের বিষয়ে আমি অবগত নই। শুনেছি গৃহ নির্মাণ না করে আমার স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

স্থানীয় অধিবাসী আফরোজা বেগম জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার টাকা ও ভিজিএফের চালের কার্ড করে দেয়ার নাম করে আমার কাছে লিটন চেয়ারম্যানের ছোট ভাই নোমানের মাধ্যমে ২৬শ’ টাকা নেয়। ধারদেনা করে টাকা দিয়েও প্রধানমন্ত্রীর উপহারের টাকা ও চাউল পাইনি। সে দেই দিচ্ছি করে টালবাহানা করছে।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লিটন মুন্সি ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন মুন্সি বলেন, আমরা পদে আছি, তাই তেমন কিছু বলতে পারছি না। চেয়ারম্যানও নৌকার লোক। তবে একাধিকবার দল থেকে তাকে সতর্ক করা হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে সমন্বয় রেখে কাজ করার জন্যে। কিন্তু তিনি কোনো কর্ণপাত করছেন না। ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পরিষদের অধিকাংশ সদস্য দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলেছেন। সবচেয়ে বড় অভিযোগ নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়ে তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের পাত্তা না দিয়ে বরাদ্দে নয়-ছয় করে চলেছেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন লিটন বলেন, করোনার মহামারীতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে কাজ করেছি। ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল আমার মানসম্মান ক্ষুণœ করার লক্ষ্যে এসব মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়