শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মেঘনা পাড়ি দিচ্ছে চরাঞ্চলের মানুষেরা
বিমল চৌধুরী ॥

চাঁদপুর শহরের পশ্চিম দিকে অঞ্চলে বসবাসরত চরাঞ্চলের মানুষদেরকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড়ি দিতে হয় প্রমত্তা মেঘনা নদী। যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। প্রমত্তা মেঘনার পশ্চিমপাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা চেয়ারম্যান স্টেশন, হাওলাদার ঘাট, মালের বাজার, মোল্লার বাজার, মাস্টার ঘাট, নরসদি, রাজরাজেশ্বর, চিরার চর, শিলারচর, ফেরিঘাট, বাঁশগাড়িসহ চরাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে বহু আগ থেকেই বাস করে আসছে ব্যাপক মানুষজন। এ সকল মানুষের প্রয়োজনীয় কর্ম সম্পাদনে বা দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়তের লক্ষ্যে প্রতিদিন কয়েক হাজার লোককে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড়ি দিতে হয় মেঘনা নদী। পাড়ি দিতে গিয়ে তাদেরকে নির্ভর করতে হয় ট্রলার বা নৌকার ওপর। আর এ সকল মানুষকে পরিবহন করার জন্যে চরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানসহ চাঁদপুর পুরাণবাজার পাইকারী বাজার সংলগ্ন পশ্চিমবাজার ও আড়তপট্টির কাছাকাছি নদী সংলগ্ন স্থানে গড়ে উঠেছে দুটি ট্রলার ঘাট। একটি মদিনা মসজিদ ট্রলার ঘাট আর অপরটি পন্টুন ঘাট। প্রতিদিন এই ২টি ট্রলারঘাট থেকে চরাঞ্চলের মানুষদের যাতায়াতের জন্য নদীপথে যাতায়ত করে প্রায় পঞ্চাশের অধিক যাত্রীবাহী ট্রলার। যার অধিকাংশ মাঝিই অদক্ষ, যাদের পরিচালিত এ সকল ট্রলারে না আছে পরিবহন সুবিধা না আছে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা। কোনো কোনো ট্রলারে বয়া থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।

বর্ষা ব্যতীত সুদিনে নদীর অবস্থা শান্ত থাকলেও ভরা বর্ষা মৌসুমে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মেঘনাপাড়ি দিতে হয় এ সকল যাত্রীকে। প্রমত্তা মেঘনার রাক্ষুষে ঢেউকে পাশ কাটিয়ে মেঘনা পাড়ি দেয়া সত্যিকারভাবে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কার্যক্রম বলেই মনে করেন যাত্রীসাধারণ। কিন্তু পারাপারে তাদের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় তারা অনেকটা নিরূপায় হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অধিক স্রোত সম্পন্ন মেঘনা নদী পাড়ি দিতে বাধ্য হন। কিন্তু মেঘনা পারাপারে নিয়োজিত ট্রলারগুলোতে আশানুরূপ নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় অধিকংশ যাত্রীই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আবার দেখা যায়, ট্রলার থেকে নিচে বা পাড়ে নামার ক্ষেত্রেও কোনো সুব্যবস্থা নেই যাত্রীসাধারণের। নারী পুরুষ, শিশুসহ সকল যাত্রীকেই লাফিয়ে বা অন্য কোনো নৌকার আশ্রয়ে নিচে বা পাড়ে নামতে হয়। এই নামতে গিয়ে কেউ কেউ দুর্ঘটনার শিকার হন। অথচ পুরাণবাজারের যে ঘাটগুলো থেকে চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের জন্য ট্রলার চলাচল করে, সেই সকল ট্রলারঘাট পুরাণবাজারের অংশে নিয়মিতভাবে প্রতি ট্রলার থেকে একটি চাঁদা উত্তোলন করা হয়। অথচ যাত্রীদের সুবিধার জন্যে ট্রলারে ওঠানামার ক্ষেত্রে কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীরা হতাশা ব্যক্ত করেন। এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী পুরাণবাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বর্তমান সময়ে অনেকটাই চরাঞ্চলের মানুষের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। তারা যদি নিয়মিত পুরাণবাজারে না আসেন, তাহলে পুরাণবাজারের অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেই মন্দাভাব দেখা দেয়। চরাঞ্চলের মানুষের প্রতিদিন পুরাণবাজারে আসা যাওয়ার কারণে পুরাণবাজারের ব্যবসায়ীদের মাঝে যেমন চাঙ্গাভাব ফুটে উঠে, তেমনি চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষেরও আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধি পায়। তারা প্রতিদিন সকালে তরকারি, তরল দুধসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে শহরে আসেন এবং যাওয়ার সময় বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। তাদের এই আসা-যাওয়ার মাঝখানে যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না হয়, তারা যাতে নিরাপদে মেঘনা পাড়ি দিতে পারেন সেই বিষয়টি ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে বলে সচেতন মহল মনে করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়