রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

ফরিদগঞ্জে বিউটিশিয়ানকে নৃশংসভাবে খুন

মাথার পেছনে আঘাতের পর মৃত্যু নিশ্চিতে হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয় খুনি

প্রবীর চক্রবর্তী ॥
ফরিদগঞ্জে বিউটিশিয়ানকে নৃশংসভাবে খুন

নৃংশসতাকে হার মানালো মমতাজ বেগম রিক্তা (৩৫) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রী কাম বিউটিশিয়ানকে হত্যার ঘটনা। মাথার পেছনে আঘাতের পর মৃত্যু নিশ্চিতে খুনি বা খুনিরা রিক্তার হাত ও পায়ের রগ কেটে দিয়ে ঘরের ভেতরের বাথরুমে ফেলে রাখে। শুধু তাই নয়, ঘরে থাকা লেপ-তোষক দিয়ে মুড়িয়ে দেয়া হয় মৃতদেহকে। বুধবার রাতে ফরিদগঞ্জের চরমান্দারী গ্রামে নিহত রিক্তার বাবার বাড়িতে এ খুনের ঘটনা ঘটে। পুলিশ খুনের কারণ এবং এর সাথে কে বা কারা জড়িত তার ক্লু এখনো উদ্ধার করতে পারে নি। তবে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এমনটাই জানালেন ফরিদগঞ্জ থানার ওসি সাইদুল ইসলাম।

বুধবার রাতে হত্যাকাণ্ডের পর থেকে অদ্যাবধি দফায় দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন থানা পুলিশ ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ। পুলিশ রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে নিহত মমতাজ বেগম রিক্তার ভাগ্নে বাপ্পীকে আটক করেছে। এদিকে স্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে দুবাই থেকে জরুরি ফ্লাইটে দেশে ফিরে পোস্টমর্টেম শেষে বৃহস্পতিবার দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন প্রবাসী রাকিবুল হাসান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নি কেউ। তবে পুলিশ সূত্র জানায়, বিউটিশিয়ান মমতাজ বেগম রিক্তার স্বামী রাকিবুল হাসান হয়তবা রাতেই মামলা দায়ের করবেন।

হত্যার ঘটনার পর কেনো বা কী কারণে মমতাজ বেগম রিক্তা এমন নৃশংসভাবে খুনের শিকার হলেন এ নিয়ে চলছে স্থানীয়দের মধ্যে বিশ্লেষণ। পারিবারিক বিরোধ না অন্য কোনো ঘটনা এর সাথে জড়িত তা নিয়ে এলাকাবাসীর মুখে মুখে চলছে নানা আলোচনা। তবে সকল কিছুর উত্তর মিলবে খুনি চক্রকে আটকের মধ্য দিয়ে রহস্য উন্মোচনের পর, এমনটাই আশাবাদী স্থানীয় তথা রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের চরমান্দারী গ্রামের ভোলা গাজী বেপারী বাড়ির লোকজনের।

উল্লেখ্য, বুধবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের চরমান্দারি গ্রামের বাবার বাড়িতে নৃশংসভাবে খুন হন মমতাজ বেগম রিক্তা (৩৫) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রী। নিহত রিক্তা ওই গ্রামের ভোলা গাজী বেপারী বাড়ির মৃত এমদাদ উল্যার মেয়ে ও চট্টগ্রামের বাসিন্দা দুবাই প্রবাসী রাকিবুল হাসানের স্ত্রী। তিনি বাবার বাড়িতে থেকে স্থানীয় গৃদকালিন্দিয়া বাজারে বধূবরণ নামে একটি বিউটি পার্লার পরিচালনা করে আসছিলেন। খুনের ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে ১৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে মরদেহ চাঁদপুরে মর্গে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ।

জানা যায়, মমতাজ বেগম রিক্তা ও রাকিবুল হাসানের গত ১০ বছরের দাম্পত্য জীবনে কোনো সন্তান নেই। গত কয়েক মাস পূর্বেও তার স্বামী দেশে এসে ছুটি শেষে ২ দুমাস পূর্বে আবার প্রবাসে চলে যান।

নিহতের বোনের ছেলে বাপ্পি (১৮) ঘটনাস্থলে বুধবার রাতে সংবাদকর্মীদের জানান, আমার মা মারা যাওয়ার পর থেকেই খালাম্মার (মমতাজ বেগম রিক্তা) কাছে থাকি। পাশাপাশি গৃদকালিন্দিয়া বাজারে একটি মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ শিখি। প্রতিদিনের ন্যায় ১৭ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যার পর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিউটি পার্লার বন্ধ করে খালাম্মাকে দেখেছি বাড়িতে চলে যেতে। রাত ৮টা নাগাদ বাড়িতে গিয়ে খালাম্মাকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকি। পরে ঘরের মেঝেতে রক্ত দেখে বাড়ির লোকজনকে বিষয়টি জানাই।

পরবর্তীতে আমার অন্য এক মামা মাহফুজুর রহমানের মেয়ে ঐশী আক্তার ও তার মা’সহ ঘরে প্রবেশ করে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে টয়লেটের ভেতরে কম্বল মোড়ানো অবস্থায় রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পাই।

পরে মামা মাহফুজুর রহমান ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে পুলিশকে অবহিত করলে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ খালাম্মা রিক্তার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি সদস্য হুমায়ূন কবির জানান, রিক্তার হাতের ও পায়ের রগ কাটা ছিল।

এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) প্রদীপ মণ্ডল জানান, ঘটনাস্থল থেকে মমতাজ বেগম রিক্তার মরদেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্যে চাঁদপুর প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি এটি একটি হত্যাকাণ্ড। মরদেহের মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন এবং হাতের ও পায়ের রগ কাটা অবস্থায় পাওয়া যায়।

থানা পুলিশ লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে রিক্তার মৃত বোনের ছেলে বাপ্পীকে থানায় নিয়ে আসে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়