প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
দুদু মাল-বাবুল মাল সিন্ডিকেটের দখলবাণিজ্য
বাবুরহাটে মতলব-পেন্নাই সড়কের রাস্তার পাশ দখল : সংকুচিত রাস্তায় তীব্র যানজট
চাঁদপুর শহরের প্রবেশদ্বার বাবুরহাটে সড়ক ও জনপথের মতলব-পেন্নাই সড়কটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। কিন্তু স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তির বাণিজ্যের কারণে রাস্তার পাশ দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। ফলে রাস্তা সঙ্কুচিত হয়ে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারীরা, ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী সাধারণের।
পৌরসভার নির্দিষ্ট কোনো স্ট্যান্ড না থাকায় রাস্তার পাশ দখল হওয়াতে সিএনজি অটোরিকশা বাধ্য হয়ে রাস্তার উপর স্ট্যান্ড করে রাখতে হচ্ছে। রাস্তায় গাড়ি থামিয়েই যাত্রী উঠানামা করাতে হচ্ছে। এতে করে সড়কের যানবাহন চলাচলের রাস্তাটি আরো সঙ্কুুচিত হয়ে যাচ্ছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। ঘটে যাচ্ছে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা।
মতলব-পেন্নাই সড়কটি দিয়ে চাঁদপুর থেকে ঢাকা আসা-যাওয়া করা যে কারো জন্যে সহজ ও কম সময়ের ব্যাপার। তাই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারদের একমাত্র পছন্দের রাস্তা হলো এটি। চাঁদপুর অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি মোঃ মাসুদ হোসেন বলেন, চাঁদপুর থেকে অনেক মুমূর্ষু রোগীকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্যে আমাদের ঢাকা নিতে হয়। তাই আমরা দ্রুত ঢাকা যাওয়ার জন্য মতলব-পেন্নাই সড়কটি ব্যবহার করি। কিন্তু বাবুরহাটে যানজটের কারণে অনেক সময় আমাদের এখানেই এক ঘন্টা, আধা ঘন্টা যানজটে আটকা পড়ে থাকতে হয়। রোগী নিয়ে এক ঘন্টা অথবা আধা ঘন্টা পরে ঢাকা পৌঁছতে হচ্ছে। এতে করে রোগীর অবস্থা অনেক সময় আরো খারাপ হয়ে যায়। আমরা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করি। ফুটপাত দখলমুক্ত হলে যানজট কিছুটা কমবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
জানা যায়, মতলব-পেন্নাই সড়ক ও মসজিদ রোডের মাথায় স্থানীয় দুদু মাল ও বাবুল মাল সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে টং দোকান, চায়ের দোকান, পানের দোকান তুলে ভাড়া দেন। আর মাস শেষে হাজার হাজার টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। রিক্সার ড্রাইভারদের মারধর করে তাদের রিকশার স্ট্যান্ড সরিয়ে দুদু মাল ও বাবুল মাল টং দোকান, পানের দোকান, চায়ের দোকান ও মুচিকে বসিয়ে ভাড়া দেন।
দুদু মাল থেকে ভাড়া নেয়া বিল্লাল শেখ নামে এক পান ব্যবসায়ী বলেন, আমি এই অল্প জায়গাটুক পান বিক্রি করার জন্য দুদু মাল থেকে ভাড়া নিয়েছি। আগে আমি প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা করে ভাড়া দিতাম। এই জানুয়ারি মাস থেকে আড়াই হাজার টাকা করে দিতে হবে বলে ধার্য করে দিয়েছেন দুদু মাল। আমরা যারা এখানে বসেছি প্রত্যেকেই মাসে মাসে ভাড়া দিতে হচ্ছে তাদের।
বাবুরহাটের নূর হোসেন, কালাম, মন্নান খান, টেলু, জয়নাল হাওলাদার, চান্দু, শফিকসহ প্রায় ৪০জন রিকশা ড্রাইভার বলেন, আমরা স্বাধীনতার পর থেকে এই জায়গায় রিকশা রাখতাম। এখানে একটা ব্রীজ ছিলো। আমরা ব্রীজের পাশেই আমাদের রিকশা রাখতাম। দুদু মাল ও বাবুল মাল আমাদের অনেককে মারধর করে সরকারি জায়গা দখল করে ভাড়া দিচ্ছেন। আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় রিকশা রেখে যাত্রীদের উঠানামা করতে হয়। রাস্তার মুখে তাদের দোকান ও আমাদের রিকশার কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। পেটের দায়ে আমরা রিকশা নিয়ে রাস্তায় নামি। আমাদের বিশ্বাস, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে আমরা আমাদের রিকশার স্ট্যান্ডটি আবার ফিরে পাবো।
এছাড়াও মতলব-পেন্নাই সড়কের দুপাশে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী যে যার মতো করে সরকারি জায়গা দখল করে ভাড়া দিচ্ছে।
এ বিষয়ে বাবুরহাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, আমি চাই আমাদের বাজারটি নিয়মনীতির মধ্যে চলুক। এই জায়গা দখল করে যারা ভাড়া দিচ্ছে তারা স্থানীয়। সরকার তাদের থেকেই জমি নিয়েছে, তাই তারা প্রভাব খাটায়। সিএনজি স্ট্যান্ড, মাইক্রো স্ট্যান্ড পৌরসভার অধীনে। তারা হস্তক্ষেপ করলে এখানে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
চাঁদপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত আহমেদ মজুমদারের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তার ব্যবহৃত গ্রামীণ ফোন নাম্বারে বারংবার কল করেও পাওয়া যায়নি।