শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ার ॥ অবাক হওয়ার মতো চিকিৎসা
বিমল চৌধুরী ॥

চিকিৎসা সেবা গ্রহীতাদের জরুরি ভিত্তিতে আরো অধিক সেবা প্রদানের নিশ্চয়তার লক্ষ্যে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে চালু করা হয়েছে ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ার। গত ২৯ জুলাই যার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চাঁদপুর-৩ আসনের এমপি শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি।

গত ২৯ জুলাই ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হলেও পরিপূর্ণভাবে সেবা কার্যক্রম শুরু হয় গত ১ আগস্ট থেকে। আর রেজিস্ট্রার কার্যক্রম শুরু হয় বৃহস্পতিবার থেকে। কর্মরত চিকিৎসক সাকিবের ভাষ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ জনেরও অধিক রোগী ইমার্জেন্সি কেয়ার থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। ইমার্জেন্সি কেয়ারে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী রিমু আক্তার (২৩) খুশি উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা পেয়ে।

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় শরীরে জ্বর নিয়ে হাইমচর চরভাঙ্গা থেকে ছুটে আসেন রিমু আক্তার। প্রথমে তিনি জরুরি বিভাগে ডাক্তার দেখান, সেখান থেকে তাকে ইমার্জেন্সি কেয়ারে ট্রান্সফার করা হয়। ইমার্জেন্সি কেয়ারে থাকা চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে বিকেলের মধ্যেই তিনি সুস্থ হয়ে উঠেন আর সন্ধ্যার মধ্যেই তাকে রিলিজ দিয়ে দেয়া হয় বাড়ি যাওয়ার জন্যে। তার সাথে থাকা আত্মীয় রিয়াদ হোসেন জানান, হাসপাতালে এমন সুন্দর সেবা রয়েছে তা আমার আগে জানা ছিল না। এখানে এসে ইমার্জেন্সি কেয়ারের সেবা দেখে আমি খুবই খুশি। কর্মরত ডাক্তার খুবই আন্তরিকতার সাথে আমার রোগীকে সেবা দিয়েছেন। এজন্যে আমাকে কোনো টাকা দিতে হয়নি। যা প্রাইভেট হাসপাতালেও পাওয়া যায় কিনা তা আমার জানা নেই। হাসপাতালের পরিপাটি, পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতাতেও তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

সান্ধ্যকালীন সময়ে কর্মরত চিকিৎসক সাকিব জানান, ইমার্জেন্সি কেয়ারের জন্যে ৫ জন ডাক্তার, ৫ জন নার্স, ১ জন ওয়ার্ড বয় ও ১ জন আয়া নিয়োজিত রয়েছেন। তবে শিফ্টিং অনুযায়ী ৩ জন ডাক্তার নিয়মিত ডিউটি দিয়ে থাকেন। বর্তমানে সবরকম সুবিধাই রয়েছে ইমার্জেন্সি কেয়ারে। তবে ভ্যান্টিলেশন ও ইন্টেফিউসান সেবা থাকলে ঢাকা মেডিকেলের মত পরিপূর্ণ সেবা দেয়া যেত বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ একেএম মাহাবুবুর রহমানের কথা উল্লেখ করে বলেন, স্যারের তত্ত্বাবধানেই এগিয়ে চলছে ইমার্জেন্সি কেয়ারের কার্যক্রম। তিনি দিনের মধ্যে কয়েকবার ছুটে আসেন এখানে এবং খোঁজ খবর নেন রোগী ও তার চিকিৎসা সংক্রান্ত কার্যক্রম নিয়ে।

আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের নিচতলায় জরুরি বিভাগের পাস কাটিয়ে পশ্চিম দিকে স্থাপন করা হয়েছে ১০ শয্যাবিশিষ্ট ইমার্জেন্সি কেয়ার। সেখানে গিয়ে দেখা গেল সম্পূর্ণ পরিপাটি পরিবেশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে সাজানো হয়েছে ইমার্জেন্সি কেয়ার। যা একটি প্রাইভেট হাসপাতালের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাকেও হার মানায়। সরকারি হাসপাতালের ভেতরই জরুরিভাবে সেবা দেয়ার জন্যে এমন ধরনের আরো একটি হাসপাতাল যা রীতিমত অবাক হওয়ার মতই মনে হয়েছে। যারা না জানেন তাদের কাছে তা প্রাইভেট হাসপাতালের মতো মনে হলেও তা কিন্তু প্রাইভেট হাসপাতাল নয়। শেখ হাসিনা সরকার ২ ঘন্টা থেকে সর্বোচ্চ ৬ ঘন্টা পর্যন্ত কোনো রোগীকে কর্মরত ডাক্তারের পর্যবেক্ষণে রেখে জরুরি ভিত্তিতে উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা দিতে সারা বাংলাদেশে ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ার নামে ৫টি হাসপাতালে আলাদা ইউনিট গড়ে তোলেন। যা চাঁদপুরের মধ্যে একটি। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির আন্তরিকতাতে আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে এই ইউনিটের কার্যক্রম শুরু হওয়াটা চাঁদপুর জেলাবাসীর একটি বড় প্রাপ্তি বলেই অনেকে মনে করেন।

জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে (জরুরি বিভাগে) চিকিৎসা সেবা নিতে আসা বিশেষ করে এইচসিআর, থ্যালাসেমিয়া, ব্লাড ট্রান্সমিশন, ডেঙ্গু পজিটিভ, ক্রনিক হার্ট ডিজিস, হাইপোক্লাইসেমিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের জরুরিভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এখানে কর্মরত চিকিৎসক ২ থেকে ৬ ঘন্টা পর্যন্ত রোগীকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখেন। এর মধ্যে রোগীর অবস্থার উন্নতি না হলে তাকে হয় চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় নতুবা আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও ট্রান্সফার করা হয়। যা রোগীর জন্যে খুবই সময়োপযোগী ব্যবস্থাগ্রহণ বলে মনে হয়।

দীর্ঘসময় ধরে ডাক্তারের পর্যবেক্ষণে রেখে রোগীকে এমন সেবা দেয়ায়, সেবা নিতে আসা রোগীসহ আত্মীয় পরিজন যেমন সন্তোষ প্রকাশ করেছেন, তেমনিভাবে আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন, কয়দিন থাকবে এ ধরনের নিরবচ্ছিন্ন সুন্দর সেবার মান?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়