শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধরে রাখার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি অনুরোধ রইলো
স্টাফ রিপোর্টার ॥

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইয়াকুব আলী। বাড়ি কচুয়া উপজেলার ১২নং আশ্ররাফপুর ইউনিয়নের ধনাইয়া গ্রাম (চেয়ারম্যান বাড়ি)। এই বীর মুক্তিযোদ্ধার বাবার নাম মরহুম মোঃ আলী মিয়া। ৩ কন্যা সন্তানের জনক তিনি। মেয়েরা চাকুরীজীবী। স্ত্রী উম্মে মোতাহেরা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী। চাঁদপুর কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। বর্তমানে তাঁর বয়স ৮০ বছর।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের বিশেষ আয়োজন ‘বিজয়ের মাস ডিসেম্বর : কেমন আছেন মুক্তিযোদ্ধাগণ’ আজকের পর্বে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। বর্তমান বা পরবর্তী প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে আমরা যে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছি তার ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্মকে ধরে রাখতে হবে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বছর ঘুরে আবার আসলো বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। আপনার অনুভূতি কেমন?

মোঃ ইয়াকুব আলী : ১৯৭১ সালের কথা মনে পড়ে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিজয় লাভ করি। তখনও বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে আসার পর আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ পূর্ণতা লাভ করে। ডিসেম্বর মাসটি একদিকে যেমন অপার দুঃখ ও শোকের স্মৃতি বহন করে, অন্যদিকে বয়ে আনে বিজয়ের আনন্দ। স্বাধীনতার সপক্ষের সকল মুক্তিযোদ্বারা হয় আনন্দিত।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সার্বিকভাবে আপনি কেমন আছেন?

মোঃ ইয়াকুব আলী : আল্লাহর রহমতে ভালো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : ৫২ বছর পূর্বের মুক্তিযুদ্ধের কোন্ স্মৃতি আপনার মনে এখনও জ্বলজ্বল করছে?

মোঃ ইয়াকুব আলী : শাহরাস্তি উপজেলাধীন নাওড়া গ্রামে পাকবাহিনীর সাথে আমাদের সম্মুখযুদ্ধ হয় এবং হানাদার বাহিনীর ক’জন সৈনিক আমাদের আক্রমণে মৃত্যুবরণ করে। যার নেতৃত্বে ছিলেন কচুয়া থানার তৎকালীন বিএলএফ কমান্ডার মরহুম অহিদুর রহমান। তখন আমিসহ আমরা ৫০ থেকে ৬০ জন স্টেনগান, এসএমজি, এলএমজি ও থ্রিনট থ্রি রাইফেল নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আমাদের সাথে গ্রেনেডও ছিলো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : অনেক রক্তে অর্জিত প্রিয় স্বাধীন দেশের বর্তমান অবস্থায় আপনি কতোটুকু সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট?

মোঃ ইয়াকুব আলী : বর্তমান অবস্থায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি দেশ পরিচালনা করে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে কাজ করছেন, তাতে আমারা সন্তুষ্ট।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাতেই মানুষের জন্ম/মৃত্যু। মাফ করবেন, তবুও জানার ইচ্ছা, আপনি আর কতোদিন বাঁচতে চান?

মোঃ ইয়াকুব আলী : আল্লাহ যতোদিন হায়াত রেখেছেন, ততোদিন বেঁচে থাকতে চাই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বর্তমান বা পরবর্তী প্রজন্মের উদ্দেশ্যে আপনি কী কথা রেখে যেতে চান?

মোঃ ইয়াকুব আলী : ১৯৭১ সালে পাক-হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে আমরা যে বাংলাদেশ অর্জন করেছি তার ধারাবাহিকতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধরে রাখার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি অনুরোধ রইলো।

উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধকালীন ২নং সেক্টরের অধীনে কচুয়া থানার বিএলএফ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম অহিদুর রহমানের নেতৃত্বে ইয়াকুব আলী যুদ্ধে অংশ নেন। তখন তার সাথে মোঃ জাবের মিয়া, আব্দুল মবিন, আবিদ আলীসহ অনেকে ছিলেন। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে পরিবার-পরিজন নিয়ে চাঁদপুর শহরের নাজিরপাড়ায় বসবাস করছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়