মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

জেলা করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটির সভা

চাঁদপুরে বরাদ্দ বাড়িয়ে দিতে ত্রাণ সচিবকে অনুরোধ

চাঁদপুরে বরাদ্দ বাড়িয়ে দিতে ত্রাণ সচিবকে অনুরোধ
চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট ॥

গতকাল ১ আগস্ট রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় চাঁদপুর জেলা করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সঞ্চালনায় ভার্চুয়ালি এ সভাটিতে সভাপতিত্ব করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোহসীন। সভাপতির বক্তব্যে চাঁদপুর জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব মোহসীন বলেন, চাঁদপুর এমন একটি জেলা যার সাথে রাজধানী ঢাকাসহ অনেকগুলো জেলা সংযুক্ত এবং নানা বিষয়ে সম্পর্কিত। এখানে তাই লোক চলাচলও বেশি। সচিব বলেন, এখানে বর্তমান সময়ে জেলা প্রশাসনের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, চাঁদপুরের সংক্রমণটা কমছে না। সংক্রমণ কমিয়ে আনতে হবে। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার আপনারা কমিয়ে আনতে পারবেন বলে আমি আশাবাদী। আর এটি কঠিন কাজ হবে না যদি আপনারা রাজনৈতিক, প্রশাসন, সামাজিক, সুশীল সমাজ সবাই সমন্বয় করে কাজ করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, রাজনৈতিক সরকার হিসেবে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা এ দুর্যোগে এগিয়ে আসবেন এবং তাদের আরো বেশি সম্পৃক্ত করতে হবে। করোনা প্রতিরোধ কমিটিগুলোতে দলের লোকদের আরো সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, কাজ করতে হবে, না হয় করোনা উত্তরনে বেগ পেতে হবে। তিনি বলেন, এখানে জেলা, উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি সবাই কাজ করছেন, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা কাজ করছেন এবং আরো এগিয়ে আসবেন।

পরে তিনি করোনা সম্পর্কে বর্তমান পরিস্থিতি জানতে চাইলে সিভিল সার্জন জানান, জুলাই মাসেই এ জেলায় করোনা পজিটিভ নিয়ে মারা গেছেন ৪২ জন । এ মাসে ১০ হাজার ৪শ’ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৩শ’ ৭১ জন করোনাক্রান্ত হন। গত শনিবারের হিসেব দিয়ে তিনি বলেন, টেস্টের বিপরীতে আক্রান্তের হার ৪৪ শতাংশ। উপজেলায় বেড বাড়ানো হয়েছে। অক্সিজেন সংকটও কেটে যাবে বলে তিনি জানান। কারণ, হাসপাতালের অক্সিজেন প্লান্টটি ২/১ দিনের মধ্যেই চালু হয়ে সেখান থেকে অক্সিজেন সাপ্লাই দিতে পারবে বলে কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়েছেন। সিভিল সার্জন বলেন, জেনারেল হাসপাতালে আমরা বেড বাড়িয়েছি। উপজেলায় ২০টা করে বাড়ানো হয়েছে। রোগী বাড়তে থাকলে এখানের ৫০টা সাধারণ রোগী বেড পাশে নার্সিং ইনস্টিটিউটে নেয়ার পরিকল্পনা আছে। পরে সচিব শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জ উপজেলার ইউএনওর কাছ থেকে সেখানের পরিস্থিতি জানতে চান। দু উপজেলাতেই সংক্রমণ সদরের পরেই।

পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, গতকাল পর্যন্ত জেলায় আমার ২৪৬ জন পুলিশ আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে। ডিসি মহোদয়ের অফিসাররা আক্রান্ত হচ্ছেন। মানুষকে সচেতন করতে, ত্রাণ দিতে আমাদের এখানে সরকার দলের নেতা-কর্মীরা বর্তমান সময়ে একটু সরব হয়ে উঠেছেন। আশা করি আমাদের পাশাপাশি তারা এবং অন্যান্য সামাজিক মানুষগুলো যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে আমাদের কাজগুলো সহজ হয়ে যায়। তিনি বলেন, এখানের সাংবাদিক ভাইয়েরা অনেক আন্তরিকভাবে কাজ করেন। করোনার এই সময়ে আমরা প্রশাসন তাদের যথেষ্ট সাপোর্ট পাচ্ছি কাজ করতে গিয়ে। মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, প্রশাসনের অনেক লোক আক্রান্ত হচ্ছেন। এটি অনেক কষ্টের। তিনি বলেন, করোনা মোকাবেলায় আমরা পৌরসভা থেকে কাজ করছি, দল থেকেও করছি, করবো। তিনি ত্রাণ সচিবকে বরাদ্দ আরো বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান। জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারী বলেন, মসজিদের ইমাম সাহেবরা মাস্ক পরেন না, মুসল্লিদেরও উৎসাহ দেন না। এতো বলা সত্ত্বেও তারা ঠিক কাজটি করছেন না। তিনি বলেন, আমরা এই যুদ্ধ মোকাবেলায় আছি, থাকবো। চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি বলেন, জেলা প্রশাসনের এবং তাদের পরিবার সদস্য আক্রান্ত হচ্ছে। এভাবে আক্রান্ত হতে থাকলে কাজের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এ অবস্থায় লোকবল সংকট কাটানোর ক্ষেত্রে সচিবকে তিনি অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, এখানে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় সমন্বয়হীনতা রয়েছে। বিশেষ করে জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

সবশেষে জেলা প্রশাসক সচিবকে জানান, ৩৩৩ নাম্বারটি অনেকেই ব্যবহার করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন। ফলে অনেকের কাছেই সাহায্য পৌঁছানো যাচ্ছে না। জেলা প্রশাসকের এ কথা শোনার পর ত্রাণ সচিব বলেন, তাহলে ভিন্নভাবেও আমি এখানে বরাদ্দ রাখবো। চাহিদা দিলে সেটা পেয়ে যাবে। জেলা প্রশাসক আরো বলেন, আমরা কাজ করতে এসেছি মানুষের জন্যে। আর কাজ করতে এসে আমরাও এখন এই মহামারির শিকার হচ্ছি। আমাদের পরিবার পরিজন আক্রান্ত হচ্ছে। তবুও আমরা পিছাতে চাই না। মনোবল আছে, থাকবে। তিনিও তার প্রশাসনের অফিসার শূন্যতা তুলে ধরেন।

সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক চাঁদপুর, ডিডি এনএসআই শেখ আরমান, চাঁদপুর জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ অংশ নেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়