প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:৩০
কড়ৈতলী দিঘি ঘিরে অবৈধ পাকা স্থাপনা তৈরির হিড়িক!
ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের আলোচিত কড়ৈতলী দিঘির পাড় ঘিরে পাকা স্থাপনা তৈরির হিড়িক পড়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, সরকারি জমিতে এভাবে হঠাৎ করেই অবৈধ (!) স্থাপনা নির্মাণ কোনোভাবেই শোভনীয় নয়। এলাকার কিছু চিহ্নিত প্রভাবশালী এই কাজে জড়িত বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এদিকে পাকা স্থাপনা নির্মাণের সংবাদ পেয়ে সোমবার (৬ জাুনয়ারি ২০২৫) উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সরজমিনে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং সরকারি অংশসহ বিভিন্ন স্থানে মাপঝোঁক করেন। জানা গেছে, এক সময়ের প্রভাবশালী জমিদার কড়ৈতলী বাবুদের ৭ একরের বিশাল দিঘিটি ছিল। তারা এদেশ থেকে চলে যাওয়ার পর এই দিঘিটি খাস হয়ে যায়। পরবর্তীতে সরকার বিশালাকার দিঘিটি মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে ইজারা দেয়। দীর্ঘদিন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মাছের চাষ করে আসছে। সময়ের প্রেক্ষাপটে শুধু হাত বদল হয়েছে। সম্প্রতি দিঘিটির পানি সরানোর পর এলাকার বেশ কিছু প্রভাবশালী দিঘির পাড়ে পাকা স্থাপনা তৈরি শুরু করে। ইতোমধ্যেই কিছু স্থাপনা তৈরি হয়ে গেছে, আবার কিছু স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে। সরকারি খাস জমিতে পাকা স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে এমন অভিযোগ ওঠার পর উপজেলা ভূমি অফিস থেকে যাচাই-বাছাই করা এবং দাগ চিহ্নিতকরণ পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নিদের্শনা দিলেও প্রভাবশালী এই মহলের কারণে কোনো কাজই থেমে থাকে নি। সর্বশেষ সোমবার (৬ জানুয়ারি ২০২৫) উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আবু বকর সিদ্দিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং সরকারি খাস ভূমি ও ব্যক্তিগত ভূমি চিহ্নিতকরণে মাপজোখ করেন। কড়ৈতলী বাজারের স্থানীয় লোকজন জানান, সরকারি ভূমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। ব্যক্তিগত জায়গায় হলে আমাদের আপত্তি নেই। নচেৎ সময়ের সুযোগ নিয়ে অন্যরাও দখল-বাণিজ্যে নেমে পড়বে। স্থানীয় বিএনপি নেতা লোকমান দর্জি জানান, সার্ভেয়ার এসে সোমবার মাপজোখ করেছেন। এসিল্যান্ড সাহেবের সাথে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি ২০২৫) বাজারের ব্যবসায়ী, কমিটি ও নির্মাণকারী ব্যক্তিদের বৈঠক রয়েছে। আমরা নিশ্চিত যারা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে তাদের সবকিছুই ঠিক রয়েছে। উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আবু বকর সিদ্দিক জানান, এসি (ল্যান্ড) মহোদয়ের নির্দেশে আমি সরজমিনে পরিদর্শন ও মাপজোখ করেছি। রিপোর্ট প্রদান করবো। ফরিদগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এআরএম জাহিদ হাসান জানান, কড়ৈতলী দিঘির পাড়ে পাকা স্থাপনা নির্মাণের কথা শুনে আমরা সীমানা চিহ্নিতকরণ পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা তা শুনেনি। তাই সোমবার (৬ জানুয়ারি ২০২৫) সার্ভেয়ারকে পাঠিয়ে সীমানা চিহ্নিতকরণের জন্যে মাপজোখ করিয়ে এনেছি। আমাদের ভূমিতে আমরা কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে দেবো না। ব্যক্তিগত ভূমিতে স্থাপনা নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই।