বুধবার, ০৮ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:৪৬

পদ্মার গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে বাঘরা! ঐতিহ্যবাহী বাজারের অস্তিত্ব সংকটে

পদ্মার বিশ্বাসঘাতকতা!

আব্দুল মান্নান সিদ্দিকী, মুন্সিগঞ্জ
পদ্মার বিশ্বাসঘাতকতা!
ছবি : প্রতীকী

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বাঘরা বাজার তার পুরনো গৌরব হারাতে বসেছে। এক সময় পদ্মা নদীর পাড়ে সরগরম এ বাজারটি ছিল উপজেলাসহ আশপাশের এলাকায় সর্ববৃহৎ। তবে পদ্মা নদীর নাব্যতা হারানো এবং চর পড়ার ফলে বাজারটির ঐতিহ্য এখন হুমকির মুখে।

শ্রীনগরের বাঘরা গ্রামে অবস্থিত এই বাজার ছিল শতাধিক বছরের পুরোনো। এখানে আশেপাশের গ্রাম যেমন কবুতর খোলা, ভাগ্যকূল, কামারগাঁও, কাঠালবাড়ি, ফুলতলা, কাদিরকান্দা, এবং রুদ্রপাড়া থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে আসতেন। রবি ও বৃহস্পতিবার ছিল সাপ্তাহিক হাট। এ সময় ধান, পাট, মাছ এবং বিভিন্ন কৃষিপণ্য নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাতেন ব্যবসায়ীরা।

পদ্মা নদীর পাড়ে হওয়ায় নদীপথে লঞ্চ ও নৌকায় করে অনেক ক্রেতা এখানে আসতেন। বাজারের প্রাণচাঞ্চল্যে মুখরিত পরিবেশ সবাইকে আকৃষ্ট করত।

বর্তমানে পদ্মা নদীতে নাব্যতা হারিয়ে চর পড়ায় নদীপথের লঞ্চ ও নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে দক্ষিণ পাড়ের ক্রেতা-বিক্রেতারা আর এ বাজারে আসেন না। পাশাপাশি আশেপাশের এলাকায় নতুন বাজার এবং দোকান গড়ে ওঠায় এখানকার ক্রেতা সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

বাজারে নদী ভাঙনে বহু দোকান বিলীন হয়ে গেছে। অপরদিকে ঢাকা-দোহার সড়কের পাশে ছোট দোকান এবং নতুন বাজারগুলো ক্রেতাদের সহজলভ্যতা বাড়িয়েছে। ফলে বাঘরা বাজার তার ঐতিহ্যবাহী অবস্থান হারিয়েছে।

বাজারে এখনও কিছু দোকান টিকে আছে। কালিপদ সাহা স্টোরের মালিক মনোরঞ্জন সাহা বলেন, “পাইকারি ও খুচরা বিক্রি মোটামুটি ভালো। যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চালানো যায়।” ফার্মেসি দোকানদার উত্তম জানান, “ক্রেতা কম হলেও ওষুধ বিক্রির আয় সংসার চালানোর জন্য যথেষ্ট।”

বাজারে একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক থাকায় প্রবাসীদের টাকা উত্তোলনে অনেকেই আসেন। এই সুবাদে কিছু পণ্য বিক্রি হয়। তবে বাজারের ক্রেতা সংখ্যা দিন দিন কমছে।

বাঘরা বাজারের বিক্রেতারা জানিয়েছেন, পদ্মা নদীতে নাব্যতা ও ক্রেতার সংখ্যা কমে যাওয়ায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে যারা এখনও এখানে ব্যবসা করছেন, তারা বাজারের ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।

বাজারটি নিয়ে স্থানীয়দের আবেগ থাকলেও প্রকৃতির বিপরীতে লড়াই করা সম্ভব নয়। একসময় উপজেলার গর্ব হিসেবে পরিচিত এই বাজারটি এখন কেবল ইতিহাসের অংশ হতে চলেছে।

সম্পাদনা : মো. জাকির হোসেন

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়