প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:৩৩
কোদলা নদীতে বিজিবির সফল অভিযান: পাঁচ কিলোমিটার এলাকা দখলমুক্ত, উচ্ছ্বাসে এলাকাবাসী
এটা শুধু একটা অভিযান নয়, এটা একটা বিপ্লব!
|আরো খবর
সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে মাটিলা সীমান্তে এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির ৫৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজিজুস শহীদ এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “কোদলা নদীর এই অংশ বাংলাদেশের ভূখণ্ডের মধ্যে থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়রা কোনো কাজকর্ম করতে পারতেন না। বিএসএফের বাধার কারণে মাছ ধরা, গোসল বা কৃষিকাজ প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছিল। তবে কূটনৈতিক আলোচনা ও শক্তিশালী পদক্ষেপের মাধ্যমে বিজিবি এখন এই নদীতে সম্পূর্ণ দখল প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে।”
প্রক্রিয়া ও অর্জন: কোদলা নদী মহেশপুর উপজেলার মাটিলা সীমান্ত বরাবর প্রবাহিত। লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজিজুস শহীদ জানান, বিজিবির বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত এলাকায় শান্তি বজায় রেখে বিএসএফের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছানো হয়। ফলস্বরূপ, নদীটি এখন বাংলাদেশের জনগণের জন্য উন্মুক্ত। বিজিবির নবনিযুক্ত অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিক এবং মাটিলা ক্যাম্প কমান্ডার মোক্তার হোসেন এই প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
স্থানীয়দের উচ্ছ্বাস: কোদলা নদীর দখল ফিরে পাওয়ার পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে আনন্দের জোয়ার বইছে। সংবাদ সম্মেলনের পর গণমাধ্যমকর্মীরা নদীর তীরে গেলে দেখা যায়, স্থানীয়রা নদীতে মাছ ধরছেন এবং গোসল করছেন। মাটিলা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আলমগীর বলেন, “এটা আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি। আগে বিএসএফের বাধার কারণে নদীতে নামার সাহসই পেতাম না। এখন থেকে মাছ ধরা ও দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে পারব।”
সীমান্তের নিরাপত্তায় বিজিবির প্রতিজ্ঞা: বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই উদ্যোগ কেবল একটি অঞ্চল পুনরুদ্ধারের সাফল্য নয়; এটি সীমান্তে শান্তি ও সুরক্ষা বজায় রাখতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজিজুস শহীদ বলেন, “আমরা আমাদের সীমান্ত রক্ষায় সর্বদা প্রস্তুত। জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেব।”
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা: নদীটি মুক্ত হওয়ায় স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। মৎস্য সম্পদ ব্যবহার, সেচ কার্যক্রম এবং গ্রামীণ জীবনযাত্রায় এটির ভূমিকা অপরিসীম।
কোদলা নদী পুনরুদ্ধার করে বিজিবি শুধু তাদের সক্ষমতার প্রমাণ দেয়নি, বরং স্থানীয়দের জীবনমান উন্নত করার নতুন দ্বারও উন্মুক্ত করেছে। এই উদ্যোগ বিজিবির একটি স্মরণীয় সাফল্য হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।